‘‘জয়বাংলা -সাক্ষাৎকার (১৯৭০-১৯৭৫)"১ম ফ্লাপের কিছু কথা : বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব-গবেষণার ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। তার প্রদত্ত সাক্ষাৎকার ও আলাপচারিতা। জয় বাংলা : সাক্ষাৎকার ১৯৭০-৭৫ গ্রন্থভুক্ত দেশি-বিদেশি লেখক, সাংবাদিক ও সাহিত্যিকদের সঙ্গে এই আলাপচারিতা ও সাক্ষাৎকার পড়তে পড়তে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের | বিচিত্র-বর্ণিল-ব্যতিক্রম ও বর্ণাঢ্য জীবনের বহু অজানা অধ্যায়। উন্মােচিত হবে এবং তার মহৎ মানবিক, দক্ষ-দূরদর্শী রাজনৈতিক। ও রাষ্ট্রনৈতিক সত্তা সম্পর্কে ধারণা লাভ করা সম্ভব হবে।। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জীবন ও দর্শন। পুরােপুরি বুঝতে হলে তার এই ঐতিহাসিক গ্রন্থ জয় বাংলা : সাক্ষাঙ্কার ১৯৭০-৭৫ পড়তেই হবে। ভূমিকা: আব্বা ১৯৪৮ সাল থেকে ভাষা আন্দোলন শুরু করেন। মাতৃভাষা বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা হিসেবে স্বীকৃতি আদায়ের আন্দোলনের পথ বেয়েই স্বাধীনতা অর্জন। ১৯৭১ সালের ২৬শে মার্চ প্রথম প্রহরে ইপিআর-এর হেড কোয়ার্টাসের (পিলখানা) ওয়ারলেসের মাধ্যমে সকল জেলায় পুলিশের কাছে বার্তাটি পৌঁছে যায়। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশের মানুষের স্বাধীনতা অর্জনের জন্য, বাংলার মানুষের অধিকার আদায়ের জন্য নিজের জীবনের সব আরাম-আয়েশ ত্যাগ করে দিনরাত পরিশ্রম করেছেন। | বাংলার দুখি মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন করতে, ক্ষুধা ও দারিদ্র্য থেকে মুক্তি দিতে চেয়েছেন। বাংলার শােষিত বঞ্চিত মানুষকে শােষণের হাত থেকে মুক্ত করে উন্নত ও আধুনিক জীবনের অধিকারী করতে চেয়েছেন। | যে-সংগ্রাম ও ত্যাগের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে মর্যাদা পেয়েছে, সেই সংগ্রামে অনেক ব্যথা-বেদনা, অশ্রু ও রক্তের ইতিহাস রয়েছে। অনেক ত্যাগের মধ্য দিয়ে মহৎ অর্জন করে দিয়ে গেছেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। শেষের ফ্লাপের কিছু কথা: শেখ মুজিবুর রহমান গােপালগঞ্জ জেলার টুঙ্গিপাড়া গ্রামে এক সম্ভ্রান্ত । মুসলিম পরিবারে ১৭ই মার্চ ১৯২০ সালে জন্মগ্রহণ করেন। পিতা শেখ। লুল্ফর রহমান ও মাতা শেখ সায়েরা খাতুনের চার কন্যা ও দুই পুত্রের । মধ্যে তৃতীয় সন্তান শেখ মুজিব। ১৯২৭ সালে গিমাডাঙ্গা প্রাইমারি স্কুলে। পড়াশােনা শুরু করেন। ৯ বছর বয়সে গােপালগঞ্জ পাবলিক স্কুলে । তৃতীয় শ্রেণীতে ভর্তি হন। পরে তিনি স্থানীয় মিশনারী স্কুলে লেখাপড়া। করেন। ১৯৪২ সালে এনট্রেন্স (এসএসসি) পাশ করেন। কলকাতা । ইসলামিয়া কলেজে মানবিক বিভাগে ইন্টারমিডিয়েট ক্লাসে ভর্তি হন। ১৯৪৭ সালে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে ইসলামিয়া কলেজ থেকে বি.এ. পাশ করেন ও ১৯৪৮ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আইন বিভাগে। ছাত্র থাকাবস্থায় ৪র্থ শ্রেণীর কর্মচারীদের ন্যায্য দাবি আদায়ে সােচ্চার। হলে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিস্কৃত হন। ১৯৪৯ সালে প্রতিষ্ঠিত। রাজনৈতিক দল আওয়ামী মুসলিম লীগের প্রতিষ্ঠাতাদের অন্যতম। তার দল বায়ান্নোর ভাষা আন্দোলন, ১৯৬৬ সালে ৬-দফা আন্দোলন। এবং ১৯৬৯ সালে গণ-আন্দোলনে জনগণের গ্রহণযােগ্যতা অর্জন করে । ১৯৭০ সালের জাতীয় ও প্রাদেশিক নির্বাচনে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠ। আসনে বিজয়ী করেন। তার এই অর্জন স্বাধীন ও সার্বভৌম । বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের অন্যতম প্রেক্ষাপট রচনা করে।। ১৯৭১ সালে ৭ই মার্চ তিনি এক ঐতিহাসিক ভাষণে অসহযােগ আন্দোলনের ডাক দিয়ে ঘােষণা করেন, “এবারের সংগ্রাম আমাদের। মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম।” ঐ সংগ্রামের জন্য। তিনি জনগণকে “যা কিছু আছে তাই নিয়ে প্রস্তুত থাকতে বলেন। তিনি ২৬শে মার্চ স্বাধীনতার ঘােষণা দেন ও পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর । হাতে গ্রেফতার হন। নির্বাচিত গণপ্রতিনিধিরা ১০ই এপ্রিল শেখ মুজিবুর রহমানকে রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত করে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার গঠন করেন। তারা স্বাধীনতার ঘােষণাপত্র জারি করেন এবং বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে। মুক্তিযুদ্ধ পরিচালনা করেন। ১৬ই ডিসেম্বর ১৯৭১ সালে বিজয় অর্জন। হলে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান পাকিস্তানের কারাগার থেকে মুক্ত হয়ে। ১০ই জানুয়ারি ১৯৭২ সালে বীরের বেশে স্বদেশে প্রত্যাবর্তন করেন।। বাঙালির অবিসংবাদিত নেতা হিসেবে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব জীবদ্দশায়। কিংবদন্তি হয়ে ওঠেন। ১৯৭২ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী ও ১৯৭৫ সালে রাষ্ট্রপতির আসনে অধিষ্ঠিত হন। ১৯৭৫ সালের ১৫ই আগস্ট বাংলাদেশের স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। স্বাধীনতাবিরােধী অপশক্তির ষড়যন্ত্রে কতিপয় সেনাসদস্যের বুলেটের। আঘাতে সপরিবারে শাহাদাতবরণ করেন।