গল্পের বইয়ের আবার ভূমিকা দরকার কেন? পাঠক বই পড়ে ভালোমন্দ নিজেই তো বলবে। তারাই তো বইয়ের গল্প ভালো না মন্দ সেটা বলার প্রকৃত হকদার। এখানে আবার লেখকের কিছু বলতে হবে কেন? পাঠক হিসেবে যতদিন আমি বই পড়েছি আমিও সেটাই ভাবতাম। কিন্তু এই বই প্রকাশ করবার আয়োজন করতে গিয়ে মনে হলো লেখক হিসেবে কিছু কথা পাঠককে জানিয়ে রাখা দরকার। কিছু মানুষের নাম বইয়ের কোনো পাতাতেই নেই। কিন্তু এই বইয়ের পেছনে তাদের ভ‚মিকার কথা না বললে অন্যায় হবে। তাছাড়া এই গল্পগুলোর প্লট নিয়েও কিছু কথা বলে রাখা দরকার। সব গল্পই এক সময়ে লেখা নয়। কিছু গল্প বাংলাদেশের প্রেক্ষিতে আবার কিছু গল্প আমার প্রবাস জীবনের নানা ঘটনার ওপর ভিত্তিতে করে লেখা। সেগুলো একটু জানিয়ে রাখলে পাঠকেরও বিভিন্ন স্থান কালে লেখা গল্পগুলো পড়তে কোনো সমস্যা হবে না বলে একটা ছোট ভূমিকার দরকার আছে বলে মনে হলো। আমার গল্প লেখার অনেক দিনের চেপে রাখা ইচ্ছেটার শুরু বাংলা ব্লগে লেখালেখি থেকে। সাধারণত আমি ফিচার ধরনের লেখাই বেশি লিখি ব্লগে। তবুও কিছু প্রিয় ব্লগারের গল্প পড়ে গল্প লেখার অসমসাহসিক কাজটা করার দুঃসাহস কেমন করে যেন ভর করল ল্যাপটপের কি-বোর্ডে। কিন্তু আশ্চর্যের ব্যাপারটা হলো আমার সেই গল্প পড়ে সহব্লগাররা আশাতীত উৎসাহ দিলেন। যেন বাংলা সাহিত্যে নতুন কথাশিল্পীর আগমন হয়েছে! এদের মধ্যে ডক্টর এম এ আলী, আহমেদ জী এস, খায়রুল আহসান, আফরা সাইয়ারা (ওমেরা), শায়মা হক, মনিরা সুলতানা, শিখা রহমান, মিম মুশকুর (বিদ্রোহীভৃগু), মেহজাবিন জুন, রাজীব নূর, জাহিদ অনিক, করুনাধারা, মিরোরডডল, কাতিআশা, উম্মে সায়মা, নীলপরী, সোহানী, সুমন কর, সৈয়দ ইসলাম, ঢাকার লোক, গিয়াস উদ্দিন লিটন, তারেক মাহমুদ, মোস্তফা সোহেল, মাআইপা, ধ্রুবক আলো, আরাফ আহনাফ, নেওয়াজ আলি, চাঁদগাজী, আমি তুমি আমরা, নিভৃতা ও আরো অনেকে। গল্পগুলোকে একটা প্রচ্ছদের নিচে বাধাই করার পেছনে আরেক জনের ভ‚মিকা না বললে সবটুকু বলা হয় না। উনি হলেন আমার জীবন চলার পথের সহযাত্রী সানিয়া হক। তাঁর উৎসাহ এই বই প্রকাশের পেছনে অনেক, অনেক এবং অনেক। প্রিয় সব সহব্লগার আর সানিয়া সবার কাছেই আমার অনেক কৃতজ্ঞতা। এই বইয়ের শিরোনামের গল্পটা আমার লেখা প্রথম মানে শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত লেখা প্রথম গল্প। অনেক আগে শুরু করা অনেক অসমাপ্ত গল্প এখনো আছে। এই গল্পটা সামহোয়্যার ইন ব্লগের ২০১৯ সালের ব্লগারস ডে সংকলনে প্রকাশিত হয়েছিল। কিন্তু প্রথম গল্পের মায়াটা কাটাতে পারলাম না দেখে এই বইয়ের জন্যও গল্পটা আমি নির্বাচন করেছি। গল্পগুলো আপনাদের ভালো লাগলেই গল্প লেখার এই দুঃসাহসিক প্রচেষ্টা সফল হবে। ডক্টর খন্দকার নাইমুল ইসলাম মিশিগান, ইউএসএ।