দখিনা বাতাসে শীতল সুগন্ধি আর সুস্থ জীবন বোধ আসবে বলে দুয়ার খোলা রাখতে চেয়েছি । মনের গভীরে জানালা কেটে মনকে বলেছি সত্য ও সুন্দরের পথে বাধা হয়ো না। তবু মন ভরে নি অসংখ্য ব্যথা জাগানিয়া স্মৃতি ও ঘটনা পীড়িত করেছে। ভাবনার গভীরে গিয়ে দেখেছি সমাজ, সক্ষমতা, সভ্যতা একই সুরে বাধা নেই । তাই জীবনের বহু ক্ষেত্রে বেসুরো বাদ্যযন্ত্র মানবজীবনের সৌন্দর্যকে ঢেকে দিয়ে তাল কেটে দিতে চায় । সুপথে চলা এবং জীবনকে কল্যাণ পথে চালিত করা কঠিনতর। তবু আশাবাদী হয়ে প্রতীক্ষা করতেই হয় সুন্দরের আগমনী ধ্বনি শুনতে। অসুভ দুয়ার রুদ্ধ হোক গ্রন্থটিতে ২৩ টি লেখনী আছে। কোন লেখায় প্রকৃতি যেমন প্রাধান্য পেয়েছে তেমনি কোন কোন লেখায় জীবনবোধের এবং মানবিকতার উম্মেষ প্রগাঢ় । মাদকের অশুভ ছায়া থেকে মুক্ত হয়ে কল্যাণকামী সৃজনশীল ধারা জোরদার করতে এবং মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে বীর শহীদগণের স্মৃতি আকড়ে ধরে শ্রদ্ধা আহ্বানে সন্তান উৎসর্গীকৃত মায়ের আকুতি পাঠক হৃদয়ে নাড়া দেবে 'একজন জামিলের মা যাকে মেঘেরা দিয়েছে ছায়া' নামক লেখনীতে। পাশাপাশি জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম, মঙ্গল কবি বিজয় গুপ্ত, বাউল সম্রাট শাহ আব্দুল করিম এবং দার্শনিক আরজ আলী মাতুব্বর এর প্রগতিশীল জীবন থেকে ইতিবাচক ধারণাগুলোকে চয়ন করে সহজভাবে পাঠকের কাছে তুলে ধরা হয়েছে। বইটিতে অর্থনীতি, সমাজ পরিক্রমা এবং বাঙালি জীবনের ঐতিহাসিক বিবর্তনের অনুভূতি সমূহ বাদ পড়েনি। সুন্দরের আগমন এবং অসুন্দরের যবনিকা ঘটবে এমন প্রত্যাশা কঠিন তবে দুরাশা নয় ! তাই আশা পূরণে যে দুরন্ত তেজ ও গতি থাকার বাস্তবিক প্রয়োজনীয়তা বিদ্যমান সেটি অর্জন না করে তাকে পাশ কাটিয়ে। যাওয়া যেমন চলে না, তেমনি অশুভ দুয়ার খুলে রেখে হতবুদ্ধি বুদু হওয়াও কাম্য হতে পারে না। অতএব, জীবন জয়ের স্বপ্ন সারাক্ষণ দেখতেই হয় । সঙ্গত কারণে তাই সূর্য তেজে জ্বলে উঠে ধরিত্রীকে সুন্দরতর করার মানসে শুধু হাঁটা নয় বরং প্রচণ্ড গতি ও প্রগতিতে শামিল হওয়ার তাগিদ বোধ থেকেই একান্তভাবে চেয়েছি অশুভ দুয়ার রুদ্ধ হোক শহীদুল আলম।
শহীদুল আলম। জন্ম ১৩ জানুয়ারি ১৯৬৬ খ্রি.। জন্মস্থান: মামাবাড়ি, হাড়িখালী পাঁচপােতা, উপজেলা: ঝিকরগাছা, জেলা: যশাের। পিতা: মাে: নূরুল ইসলাম মণ্ডল, মাতা: জীবন নেছা। পৈত্রিক নিবাস- গ্রাম: ইস্তা, ডাকঘর: মাটিকোমরা, উপজেলা: ঝিকরগাছা, জেলা: যশাের। শিক্ষা: হিসাববিজ্ঞানে অনার্সসহ মাস্টার্স ।। পারিবারিক জীবন: সহধর্মিণী ওয়াহিদা ফেরদাউস, পুত্র ওয়াসিম আকরাম, কন্যা তুবা তামান্নাকে ঘিরে অহর্নিশ। এছাড়া পিতা-মাতার দশ সন্তানের মধ্যে দ্বিতীয় হওয়ায় রয়েছে ভাই-বােন, বহু । আত্মীয়-স্বজন; কর্মসূত্রে তিনি যাদের সাহচর্য ও সান্নিধ্য পেয়েছেন তারাও তাঁর পারিবারিক সদস্যসম বলে তিনি মনে করেন। কর্মজীবন: বিসিএস (প্রশাসন) ক্যাডারের এগারাে তম ব্যাচের একজন সদস্য। ১৯৯৩ সালের ০১ এপ্রিল সহকারী কমিশনার ও ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে যােগদানের মাধ্যমে কর্মজীবন শুরু হয় বিভাগীয় কমিশনার-এর কার্যালয় বরিশালে। বর্তমানে প্রশাসনের যুগ্মসচিব পদে কর্মরত। লেখকের প্রবন্ধ গ্রন্থ ‘অশুভ দুয়ার রুদ্ধ হােক’ প্রকাশিত হয় ২০১৪ সালের এপ্রিলে বরিশাল বিভাগীয় বইমেলা উপলক্ষে । এছাড়া অন্তরীক্ষে নয় অন্তরে’ কাব্যগ্রন্থ প্রকাশিত হয় ২০১৪ সালের অমর একুশে বইমেলায় ।