কালকে ধারণ করে কালোত্তীর্ণ হয় যে কবিতা, তা স্তরবহুল বহুমাত্রিক হতে বাধ্য। সৃষ্টিক্ষম কবির প্রজ্ঞা ও মননের ভাঁজে ভাঁজে প্রোথিত থাকে অজস্র আকাশ, অগণিত সমুদ্রমালা; যার রং এখন এক, তো একটু পরেই আরেক। কবিতার সহৃদয় প্রাজ্ঞ-পাঠক সাইয়েদ জামিলকে ইতোমধ্যে আবিষ্কার করেছে সংক্ষুব্ধ চিত্তের বিশ্বনাগরিক কবি হিসেবে। প্রেমে ও কামে, সংক্ষোভে ও দ্রোহে তাঁর তুলনা তিনি নিজে, প্রতিদ্বন্দ্বীও তিনি নিজেই। ক্রমাগত নিজেকে পেছনে ফেলে ক্রমশ তিনি উন্নীত হন এক অনন্য উচ্চতায়। তবে এইটে সময়ের প্রধান কবি সাইয়েদ জামিলের বহিঃস্থিত একটি খণ্ডরূপমাত্র। এই বইয়ের কবিতাগুলোতে জামিলের অন্তঃপাতী জগতের সন্ধান মিলবে; যেখানে তিনি সূক্ষ্ম সংবেদনশীল প্রেমিক পুরুষ। জীবনের ভেতরে তিনি স্থিত, দুঃখের অন্তর্দেশে সুখসন্ধানে তিনি ব্রতী। তাঁর শরণ প্রকৃতি ও নারীর কাছে, দায়বদ্ধতা কেবল সত্য ও শিল্পের নিকট। গোটা বইয়ে জামিল কবিতার হাত ধরাধরি করে হেঁটেছেন অনায়াস-নৈপুণ্যে। তাঁর কবিভাষা তরল না-হয়েও দ্যুতিময় সরল। আর সরল বলেই তা প্লাবী ও অন্তর্ভেদী। নির্মেদ ও নিপাট এই কবিতাগুলোকে কবি ‘লুতুপুতু কবিতা' বলেন। কবির এই মিথ্যাচারের আমি প্রতিবাদ করি।