নবির প্রতি ভালোবাসা ঈমানের অচ্ছেদ্য অংশ। এই ভালোবাসার সর্বনিম্ন লক্ষণ হলো, কোথাও নবির অবমাননা হতে দেখলে, মনটা ভারাক্রান্ত হওয়া, ভেতরে ভেতরে জ্বলে ওঠা; বাইরেও তার বিধিসম্মত প্রকাশ ঘটানো। এই ভালোবাসা ও তার লক্ষণ না থাকলে কেউ পরিপূর্ণ মুমিন হতে পারে না—একথা কুরআন হাদিস দ্বারা প্রমাণিত ও সর্বজনবিদিত। তাই ছোট-বড়, ধনী-গরিব, নারী-পুরুষ—সবাইকেই এ ভালোবাসা অর্জন করতে হবে সমানহারে; অন্যথায় নিজেকে মুমিন বলা হবে ভারি অন্যায়। কিন্তু নবির প্রতি এই ভালোবাসাবোধ কীভাবে তৈরি হবে? কীভাবে ছোট-বড়, ধনী-গরিব—সবাই এ ভালোবাসা অর্জন করবে—সমানহারে; সমানতালে? এজন্য তো প্রয়োজন নবির প্রতি উম্মাহর ভালোবাসার গল্পগাথাগুলো শোনার, বলার; চিত্রিত করার। কিন্তু সে সুযোগ তো আমাদের নেই; আমাদের সামনে তো এমন কোনো প্রেম-সরোবর নেই, যেখানে সবাই একসাথে অবগাহন করতে পারি; প্রেমের অমিয় সুধা পান করে মন-প্রাণ জুড়াতে পারি! তাহলে উপায়? এই দুর্লভ উপায় নিয়ে এসেছে ‘যে প্রেম জীবনের চেয়ে বড়’ গ্রন্থটি। এ গ্রন্থে নবির ভালোবাসায় শিশু-কিশোর সাহাবিদের আত্মত্যাগের কাহিনি স্থান পেয়েছে। নবির সম্মান রক্ষায় যুবকদের অকাতর রক্তদানের জীবন্ত ঘটনা বাঙময় হয়ে উঠেছে। ধনীদের জান-মাল বিলিয়ে দেয়ার সচিত্র নমুনা ফুটে উঠেছে। ঠাঁই পেয়েছে মা-বাবার মায়া ভুলে সন্তানের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ার নিদারুণ গল্পগুলো। প্রতিটি গল্পের গাঁথুনি সুনিপুণ। বিন্যাস অসাধারণ। আবেদন হ্রদয়গ্রাহী। ভাষা সাহিত্যমণ্ডিত। এমন বই বাংলায় এ যাবত চোখে পড়েনি। আশা করছি, বইটি ছোটবড়, ধনী-গরীব, নারী-পুরুষ—সবার মাঝে নবিপ্রেম জাগিয়ে তুলতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। আল্লাহ আমাদের পক্ষ থেকে নবিপ্রেমের এই অর্ঘ্যটুকু কবুল করুন। সবাইকে দান করুন প্রিয় নবির অফুরন্ত-অতলান্তিক ভালোবাসা। আমিন!
রবিউল হাসান। জন্ম নব্বইয়ের দশকের শুরুতে। পৈতৃক নিবাস মানিকগঞ্জ জেলাধীন বেতিলা-মিতরা ইউনিয়নের অন্তর্গত ‘আইড়মারা’ গ্রামে। শৈশব থেকেই ছিলেন সভ্য, ভব্য এবং লাজুক প্রকৃতির। পিতা আব্দুল মান্নান সাহেব জেনারেল শিক্ষিত হলেও চার সন্তানের সবাইকেই পড়িয়েছেন মাদরাসায়। সেই সূত্রে লেখক প্রাথমিক ও মাধ্যমিক পড়াশোনা করেন পাশের গ্রামের ‘মাদরাসা আবু হুরায়রা’য়। ‘দাওরায়ে হাদিস’ সমাপন করেন বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী বিদ্যাপীঠ ‘জামিয়া রাহমানিয়া‘ থেকে কৃতিত্বের সাথে। এরপর ইসলামিক উচ্চতর আইন বিষয়ে অধ্যয়ন করেন হাফেজ্জী হুজুর রা. প্রতিষ্ঠিত ‘জামিয়া নূরিয়া’য়। একই সাথে আলিয়া মাদরাসা ও কলেজ থেকেও অর্জন করেন স্নাতক ডিগ্রী। কর্মজীবনে পদার্পণ করেন শিক্ষকতার মধ্য দিয়ে। অদ্যাবধি নিজেকে এ পেশাতেই নিরত রেখেছেন। পাশাপাশি সৃজনশীল লিখনীর মাধ্যমে সর্বত্র ইসলামি জ্ঞান-বিজ্ঞান ছড়িয়ে দিতে সমর্পণ করেছেন নিজেকে। বক্ষমাণ গ্রন্থ ‘যে প্রেম জীবনের চেয়ে বড়’—দিয়েই এ অঙ্গনে তাঁর শুভযাত্রা। এছাড়াও তাঁর প্রকাশিতব্য বইয়ের মধ্যে রয়েছে—‘গল্পে শিশুর পরিচর্যা’ এবং ‘কফি হাউজের সেই আড্ডাটা’