বাংলা সাহিত্যে তাঁর নাম বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলাম, যিনি গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ রাষ্ট্রের জাতীয় কবি। পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমান জেলার অখ্যাত গ্রাম চুরুলিয়ায় ১৮৯৯ সালে যে-শিশুটির জন্ম, তাঁর পৃথিবী থেকে চলে যাওয়া সম্পন্ন হয়েছিল স্বাধীন বাংলার রাজধানী ঢাকা শহরে ১৯৭৬-এর ২৯শে আগস্ট—বাংলা ১৩৮৩ সনের ১২ই ভাদ্র-তারিখে : রোববার, সকাল ১০টা ১০ মিনিটে। স্বদেশে বা বিদেশে শিক্ষিত বাঙালি মাত্রেই নিজের দায়ে অন্তর্গত ভালবাসায় তাঁর মাতৃভাষার শ্ৰেষ্ঠ চার কবিকে বাধ্য হয়ে পড়ে থাকেন : মাইকেল মধুসূদন দত্ত, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, কাজী নজরুল ইসলাম, জসীম উদ্দীন। ভিন্ন নামেও এঁদের চেনা যায় : মধুকবি, বিশ্বকবি, বিদ্রোহী কবি, পল্লীকবি। এঁদের নিয়ে নানান গুণীজনের রচিত জীবনীগ্রন্থ প্রকাশিত হয়ে আসছে বহুকাল যাবৎ। ‘কিশোর জীবনী নজরুল ইসলাম’ প্রথম বেরিয়েছিল বেশ আগেই, কিন্তু ‘চিত্ররূপময় আলেখ্য’ সেটি ছিল না; এবারে যে সম্ভব হলো তা ‘চিত্রিত সংস্করণ পরিকল্পনা’য় আলমগীর রহমান ছিলেন বলেই। তরুণ বয়সী ছেলেমেয়েদের এ বই পছন্দসই হলে তাদের জন্যে আমাদের স্নেহ-মমতাও সকলে রটনা করতে থাকবে। আমাদের লাভ সেটুকুই।
হায়াৎ মামুদের জন্ম ব্রিটিশ ভারতে, পশ্চিমবঙ্গের হুগলি জেলার মৌড়া নামে আখ্যাত এক গ্রামে, ১৩৪৬ বঙ্গাব্দের ১৭ আষাঢ় (২রা জুলাই ১৯৩৯) তারিখে । ১৯৫০ সালের সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার অভিঘাতে মানসিকভাবে বিপর্যন্ত পিতার হাত ধরে চলে আসতে হয় ঢাকা শহরে । অদ্যাবধি সেখানেই বসবাস । স্কুল-কলেজ -বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা সমাপ্ত করেছেন এ শহরেই। পিএইচ. ডি. ডিগ্রি তুলনামূলক সাহিত্যে, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে, প্ৰায় প্রৌঢ় বয়সে। রুশ ভাষা অল্পবিস্তর জানেন, অনুবাদের চাকরি করেছেন প্ৰগতি প্ৰকাশনে, মস্কোয়-সুদূর ও স্বপ্রিল সোভিয়েত ইউনিয়নে বসে । দেশের অভ্যন্তরে চাকরি সর্বদাই শিক্ষকতার-প্ৰথমে কলেজে পরে বিশ্ববিদ্যালয়ে । বর্তমানে অবসর-জীবন যাপন করছেন। বাংলা একাডেমী পুরস্কার পেয়েছেন শিশুসাহিত্যে । দেশ-বিদেশের সারস্বত সমাজের সঙ্গে যোগাযোগ আছে । সমালোচনা, ছাত্রপাঠ্য বই ইত্যাদি মিলিয়ে তাঁর প্রকাশিত গ্রন্থসংখ্যা ষাটেরও বেশি।