‘‘মস্তিষ্কের মালিকানা"১ম ফ্লাপ ,বইটা পড়ে কী পাবেন? ও শেষের ফ্লাপ: ক্ষুদ্র এই জীবনের অভিজ্ঞতা বলছে- দুনিয়ার অধিকাংশ মানুষ স্বার্থপর, বাকিরা স্বার্থ সচেতন। ফলে স্বার্থের সংঘাত অনিবার্য। আর সেই প্রেক্ষাপটে অপরিহার্য হয়ে উঠেছে- মালিকানার দ্বন্দ্ব। প্রাচীনকালে অন্যান্য সম্পদের প্রাশাপাশি মানবদেহের ওপর সরাসরি মালিকানা লাভের সুযােগ ছিল। বহুবিধ উন্নয়নে আজ সে প্রয়ােজন ফুরিয়েছে। ফলে এখনকার লড়াই মানুষের মস্তিষ্কের ওপর অধিকার লাভের! এ-লড়াইয়ে বিজয়ীদের স্বার্থরক্ষায় তাদের অনুগতরা নিজেদের অর্থ-শ্রম-সময়-মনােযােগ এমনকি জীবনটাও উৎসর্গ করে। আর তাইতাে সভ্যতার মােড়কে, প্রযুক্তিতে ভর করে, স্ব-ক্ষমতা অর্জনের ধুয়া তুলে সর্বত্র চলছে ‘মস্তিষ্কের মালিকানা দখলের চেষ্টা। আপনার-আমার উর্বর মস্তিষ্ক হলাে তাদের চাষাবাদের উত্তম জমিন! সেক্ষেত্রে ব্যবসা-বাণিজ্য হলাে শক্তিশালী হাতিয়ার। আর মার্কেটিং হলাে তার যথার্থ বাহন। আমরা চিন্তা ও কর্মে নিজেদের স্বাধীন মনে করলেও অসংখ্য ব্র্যান্ড (ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান) সুকৌশলে। প্রতিনিয়ত তাদের স্বার্থরক্ষায় আমাদের খাটিয়ে নেয়। তাদের প্রত্যাশা মােতাবেক নিজেকে উজাড় করে দিয়ে আবার আমরা সুখীও থাকি- এ এক আজব ধাধা বটে! জমি বা অন্যান্য সম্পদ হাতছাড়া হলে তা উদ্ধারে যেমন মরিয়া হই, মস্তিষ্কের মালিকানা পুনরুদ্ধারে কি। তেমনটাই হওয়া উচিত? নাকি এই বেশ ভালাে চলছে...সংশ্লিষ্ট বিষয়গুলােতে অসংখ্য চিন্তার খােরাক রয়েছে বইটির পাতায় পাতায়। আচ্ছা, বই পড়ে কিছু পেতেই হবে কেন? আপনি যখন রিয়াল-বার্সার খেলা দেখেন, কিংবা সম্প্রতি মুক্তি পাওয়া মুভি দেখতে বসেন তখন কি নিজেকে এই প্রশ্নটা করেন? অবশ্যই না। তাহলে বই পড়ার ক্ষেত্রে আপনাকে অবশ্যই কিছু পেতে হবে কেন? শুধু উপভােগ করার জন্য বইটা পড়া যায় না? প্লিজ, একবার চেষ্টা করে দেখুন। আশা করি হতাশ হবেন না। এখনকার দিনে শুধু কথার উপর ভরসা রাখা মুশকিল, তাই তাে? ঠিক আছে, বইটা পড়ার পরে যদি সত্যিই আপনার মূল্যবান সময় ও অর্থের অপচয় হয়েছে বলে মনে হয়- দয়া করে নিম্নপ্রদত্ত ইমেইলে যােগাযােগ করুন। সময় ফিরিয়ে দেওয়া সম্ভব নয়। তবে বইয়ের ক্রয়মূল্য ফেরত পাবেন গ্যারান্টি দিচ্ছি! এই যা, মার্কেটিংয়ের লােকদের কাছে এই অফার তাে... মায়ের কাছে মামা বাড়ির গল্পের মতাে ঠেকবে, তাই না? চিন্তার কিছু নেই... একটু মজা করলাম। আসলে আমাদের দেশে বইয়ের ব্যাপারে এমন ভীতিকর এক পরিবেশ গড়ে তোলা হয়েছে যে, এটাকে অধিকাংশ মানুষ কুইনিনের মতাে ভয় পায়! ফলে পারতপক্ষে বই হাতে ধরতেই চায় না। যদি কেউ খুব জোর করে, তখন মােক্ষম এই প্রশ্নটা করে নিজেকে রক্ষায় সচেষ্ট হয়। অর্থাৎ বই পড়ার মাধ্যমেও তার লাভ হতেই হবে! ভাবখানা এমন যে, সারাদিন বুঝি শুধু লাভের কাজ-কর্ম নিয়েই ব্যস্ত থাকেন? অন্যভাবে বিষয়টা ভাবুন, সারাদিন নানারকম কাজের চাপে মনটা বিষিয়ে ওঠে। কম্পিউটার, ফোন, প্রজেক্টরের আলােয় চোখ ধাধিয়ে যায়। মাঝেমধ্যে সব অসহ্য লাগে। তখন মনটা স্থিরতা চায়। কিন্তু চোখ বন্ধ করলেই অসংখ্য ভাবনা এসে ভীড় করে। তাতে অনেক সময় অশান্তি আরও বাড়ে। এমন পরিস্থিতিতে বই পড়া আপনাকে দারুণভাবে সাহায্য করতে সক্ষম। তেমন বই হলে মানসিক তৃপ্তির পাশাপাশি মেলে নির্মল আনন্দ। এই বইটা লেখার সময় প্রতিটা পর্যায়ে এই কথাটা মাথায় ছিল। তাই পড়তে শুরু করুন। হয় পাতার পর পাতা উল্টাতে থাকবেন; নইলে ঘুমিয়ে পড়বেন- তাতে কোনাে ক্ষতি তাে নেই! তাছাড়া সবসময় টার্গেট, সেল, কাস্টমার, প্রমােশন এসব নিয়ে কথাবার্তা বলতে ও শুনতে কারই বা ভালাে লাগে? ফলে একটা বইয়ের মাঝে ক্ষণিকের জন্য ডুব দিলে লাভ ছাড়া ক্ষতির ভয় নেই। তাছাড়া মার্কেটিংয়ের লােকদের কাজই হলাে ৪. বাংলা ভাষায় লিখিত মার্কেটিং সংক্রান্ত অধিকাংশ বইয়ের আলােচ্য বিষয়বস্তু কিছু বিষয়ের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকে। পরীক্ষা পাসের গাইড বই থেকে শুরু করে টেক্সট, নন-ফিকশন সবক্ষেত্রেই এই প্রভাবটা বেশ চোখে বাধে। সেই গাধা ধারাটি অতিক্রমের চেষ্টা করেছি। আটপৌরে জীবন থেকে মার্কেটিংয়ের নির্যাসটুকু হেঁকে বের করতে সর্বদা তৎপর ছিলাম। কতটুকু পেরেছি তা বইটা না পড়লে বুঝবেন কীভাবে? ৫. গল্প বলার ঢঙে বিষয়গুলাে উপস্থাপন করায় দেশ-বিদেশে প্রচলিত অসংখ্য ঘটনা, গল্প ও উপকথার আশ্রয় নিতে হয়েছে। তার সবগুলােই সঠিক বা বাস্তবে ঘটেছে তেমনটা ভাবার দরকার নেই। কারণ জীবনের কোনাে এক পর্যায়ে হয়তাে কারাে কাছে তেমনটা শুনেছিলাম, কিংবা পড়েছিলাম। ফলে প্রাসঙ্গিক বিষয়টা বােঝানাের জন্য সেগুলােকে নিতান্তই উপমা হিসাবে গ্রহণ করেছি। আপনারাও বিষয়বস্তুকে প্রাধান্য দেবেন- ব্যক্তি বা স্থানকে নয়। তাহলে সেগুলাে থেকে দীর্ঘমেয়াদে উপকৃত হওয়ার সম্ভাবনা বাড়বে। তাহলে এতক্ষণ যা যা বললাম, সেগুলাে কি বইটা পড়ার জন্য যথেষ্ঠ নয়? একবার ভাবুন, ম্যারাথন দৌড় প্রতিযােগিতায় শত শত মানুষ অংশ নেয়। কিন্তু বিজয়ী হয় কয়জন? মাত্র তিনজন, তাই না? তাহলে অন্য যারা অংশ নেয় তারা কি বােকা? বেশি বুদ্ধিমান হলে প্রতিযােগীর সংখ্যা দেখেই তাে বলার কথা ছিল- নাহ্ মাত্র তিনজন পুরস্কার পাবে, এত লােকের সাথে দৌড়ে কী লাভ? বাস্তবে তা বলে না। কারণ বিজয়ী হবার পূর্বশর্ত হলাে- দৌড় প্রতিযােগিতায় অংশগ্রহণ। সেখানে অংশ নিয়ে কোনােভাবেই বিজয়ী হওয়া সম্ভব নয়।। তেমনিভাবে, বই থেকে সমৃদ্ধ হতে চাইলে সময়-সুযােগ বুঝে পড়ে যেতে হবে। সব বই আপনাকে বিজয়ীর অনুভূতি দেবে- সেটা ঠিক নয়। কিন্তু এই বইটা পড়ার সময় এমন কোনাে ট্রিক আপনার মাথায় ক্লিক করতেও পারে যা লাখ বা কোটি টাকার চেয়েও মূল্যবান!! মস্তিষ্কের মালিকানা বইটি আপনার ক্যারিয়ারে সফলতার সঙ্গী হলে খুবই খুশি হবাে। সাে... হ্যাপি রিডিং !!! স্থান-কাল-পাত্রভেদে পণ্যের ধরন আর টার্গেট গ্রুপ আলাদা হলেও আসলে আমরা সবাই বিক্রয়কর্মী। ফেইলিওর সরাসরি সেলসে যারা জব করেন তাদের বাইরেও ইন (সলস রাজনীতিবিদ, আইনজীবী, শিক্ষক, শিক্ষার্থী, উদ্যোক্তা, ওয়াজের বক্তা, মিডিয়াকর্মী, ইউটিউবার এমনকি ফেসবুকে জনপ্রিয়তা প্রত্যাশী সবাই নিজেকে বিক্রয়ে সদা সচেষ্ট। কেবল একেকজনের পদ্ধতি একেকরকম। ব্যক্তিগত আগ্রহ থেকেই বইয়ের লেখক। দীর্ঘদিন যাবত অধিকাংশ বিক্রয়কর্মীর প্রত্যাশিত সফলতা না পাওয়ার কারণ অনুসন্ধান করেছেন। পাশাপাশি এ বিষয়ে প্রায় দেড় ডজন বইয়ের সাহায্য নিয়েছেন। বাংলাদেশের বাস্তবতায় সংকটগুলাে কাটিয়ে ওঠার ব্যাপারে নানা কৌশলও খুঁজে বের করতে সচেষ্ট ছিলেন। সংশ্লিষ্ট সবাই উপকৃত হওয়ার মতাে উপাদান থাকলেও বইটি বিবিএ-এমবিএ শিক্ষার্থী, নতুন উদ্যোক্তা এবং সেলসের বিভিন্ন স্তরে নিয়ােজিত ফাইটারদের জন্য বিশেষভাবে রচিত। গােটা দুনিয়াতে বিক্রয় পেশায় থাকা খুব কম মানুষই প্রতিরাতে নিশ্চিন্তে ঘুমাতে যায়। কল্পিত ও সত্যিকারের অসংখ্য শঙ্কা তাদের প্রায়শ গ্রাস করতে চায়। পরদিন সকালে যে কঠিন বাস্তবতার মুখােমুখি হতে হবে, তা ভীষণভাবে তাদের পীড়িত করে। বিক্রয় পেশার প্রাথমিক পর্যায়ে এই মাত্রা থাকে অসহনীয়। উচ্চমাত্রার ঘুমের ওষুধ খেয়েও অনেকের ঘুম আসে না। তাদের প্রতি অনুরােধ, বইটির পাতা উল্টাতে থাকুন। যেকোনাে পাতা পড়তে শুরু করুন। উদ্বেগের পরিবর্তে আগামীকাল কোন কৌশলটা প্রয়ােগ করবেন সেই ভাবনা আপনাকে দারুণভাবে আলােড়িত করবে। ফেইলিওরকে সাকসেসে রূপান্তর করার। সূচনা হােক এই বইয়ের একেকটি অধ্যায় চর্চার মাধ্যমে। শুভকামনা আপনার মতাে সফলতা প্রত্যাশী সেলস ফাইটারের জন্য!
পড়তে ভালোবাসেন। দেশ-বিদেশের বইতো বটেই...পরিত্যক্ত ঠোঙ্গা, পুরনো সংবাদপত্র, ব্যবহৃত পণ্যের প্যাকেট, এমনকি পরীক্ষার খাতা সবই পড়েন নিবিষ্ট মনে। তবে কখনো সেগুলো মনে রাখতে চেষ্টা করেন না। ফলে পড়াটা হয়ে উঠে দারুণ উপভোগ্য। মেলে বহুবিধ চিন্তার খোরাক। ছাত্রজীবনে বক্তৃতা ও রচনা প্রতিযোগিতায় ন্যাশনাল চ্যাম্পিয়ন হওয়ার প্রতিফলন দেখা যায় বিভিন্ন লেখায় ও পাবলিক লেকচারে। বাই চয়েস শিক্ষকতা পেশায় আসা এই মানুষটি ভালোবাসেন নতুন নতুন বিষয়ে জানতে ও অন্যদের সাথে শেয়ার করতে। তাঁর যে কোন লেখা পড়তে থাকলে মনে হয় যেন ক্লাসে বসে লেকচার শুনছি। অর্থাৎ স্বকীয় বাচনভঙ্গীকে তিনি অতি দক্ষতায় লেখনীর মাধ্যমে সাবলীলভাবে প্রকাশ করেন-- যা সচরাচর দেখা যায় না।