শেষ খুনটার পর পেরিয়ে গেছে পঁচিশটি বছর। নাকি ছাব্বিশ? হবে দুটোর যেকোনো একটা। ইয়োনহুইয়ের মা ছিল আমার শেষ শিকার। আমার কমিউনিটি সেন্টারে প্রশাসনিক সহযোগী ছিল মহিলা। ... লোকের ধারণা, ইয়োনহুই আমার নাতনী। যখন সবাইকে বলি: না, ও আমার মেয়ে...তখন চোখ কপালে তোলে। স্কুলে ইয়োনহুইকে কম অত্যাচার সইতে হয়নি। মা নেই, বাপ বুড়ো হাবড়া—তাই অন্য বাচ্চারা খুব জ্বালাত। ... সে যাই হোক, একদিন ডাক্তার বলল, ‘কোনো সন্দেহ নেই, আলঝেইমার্স হয়েছে। আস্তে আস্তে আপনার সব স্মৃতি নষ্ট হয়ে যাবে।’ একজন বয়স্ক সিরিয়াল কিলারের কাছে আলঝেইমার্সের জীবনটাকে প্রাকটিক্যাল জোক বলা যায়! ... ‘একজনের সঙ্গে আমার প্রেম চলছে, ওর নাম—পাক ইয়োতাই।’ বোমা ফাটাল ইয়োনহুই। এদিকে খবরের কাগজে একটা খুনের ঘটনা পড়লাম। আমাদের গ্রামেরই ঘটনা। আমাদের এলাকা আর পাশের এলাকা মিলে মোট তিনজন মেয়েমানুষ খুন হয়েছে। ... পুলিসের ধারণা, কাজটা সিরিয়াল কিলারের। তৃতীয় ভিক্টিমকে পাওয়া গেল আমার আলঝেইমার্সের ডায়াগনোসিসের পর। তাই নিজেকে জিজ্ঞেস করলাম: আমিই কি খুনি? কিন্তু কোথাও একটা ঘাপলা আছে। কেবলই মনে হচ্ছে কিছু একটা যেন ঠিক নেই। পাকের সঙ্গে আজই প্রথম দেখা হয়েছে, অথচ তারপরও ওকে ঘৃণা করতে শুরু করে দিয়েছি। কেন? তার ভেতরে কি কিছু দেখেছি? কী দেখেছি? ... বেজন্মাটা ইয়োনহুইকে এখনো খুন করছে না কেন? মেয়েটাকে জিম্মি করে রাখার ইচ্ছা নাকি? আমি যাতে ওকে পুলিসের কাছে ধরিয়ে দিতে না পারি সেজন্য কাছে কাছে রাখছে ইয়োনহুইকে? যদি তা-ই হয়, তাহলে তো আগে আমাকে খতম করে দিলে পারে। কীসের জন্য অপেক্ষা করছিস তুই, পাক ইয়োতাই? ... কাঁদতে কাঁদতে ইয়োনহুইয়ের মা মিনতি করেছিল, ‘দয়া করে আমার মেয়েকে ছেড়ে দাও।’ আমি বলেছিলাম। ‘ঠিক আছে, ওকে নিয়ে দুশ্চিন্তা কোরো না। আমি দেখে-শুনে রাখব।’ তাই লিখে রাখছি, যেন ভুলে না যাই: ইয়োনহুইকে মৃত্যুর সামনে ফেলে আমি পালাতে পারি না!