গল্পের প্রতি মানুষের ভালোবাসা স্বভাবজাত। গল্প, হ্যাঁ... আমরা কমবেশি সবাই গল্প করতে, বলতে, পড়তে ভালোবাসি। বিশেষকরে উঠতি বয়সের তরুণ-তরুণীদের গল্পের প্রতি ঝোঁক। আগ্রহ। গল্প হলো মনে মনে একটা কাহিনী বানানো বা প্লট তৈরি করা। সেটা সত্যও হতে পারে আবার কল্প-কাহিনীও হতে পারে। আধুনিক কালের গল্পগুলোতে সুন্দর কোনো আদর্শে পাঠককে উজ্জীবিত করার ব্যগ্রতা থাকে না। থাকে অশ্লীলতা। প্রেম ভালোবাসা। বিচ্ছেদ-বেদনা আর যৌন আবেদনের বিট লবন। সমাজ বিনির্মাণে এসব গল্পগুলোই ভূমিকা রাখে। এতে সমাজে যেমন অশ্লীলতা ছড়াচ্ছে। বাড়ছে ধর্ষণের মতো ঘৃণ্য কর্মকাণ্ড। একটা নিকষ-কালো আধারের দিকে পৃথিবী দ্রুত ধাবমান হচ্ছে। সমাজে তারাই আজ প্রতিষ্ঠিত শক্তিশালী লেখক। সমাজের অলি-গলি অন্দর দখল করে রেখেছে। এসব প্রতিরোধে চাই সুশীল সাহিত্যের ধারা সৃষ্টি করা। বিদ্রোহ আর বিদ্রোহ। কলমের বিদ্রোহ! সকালের সেই সুবহি মক্তব, মাইকে ছাত্র-ছাত্রীদের ডাকা শহরে নেই। গ্রামেও কমে যাচ্ছে দিন দিন। শিল্প-সাহিত্যের বিল্পবের সময় এগুলো বড়ই বেমানান! আমার মন যখন বেচাইন-অস্থির থাকত। ভাবতাম। ভাবনাগুলো জট পাকাত। অস্থিরতা কাজ করত খুব বেশি। সে সময় ‘কিসসাতুন আজিবাতুন’ নামে একটি অ্যাপ্সে মজার-বেদনার শিক্ষণীয় আরবি গল্প পড়তাম। নির্মল সেই গল্পগুলো হাসাতো-কাঁদাতো। কখনো সে গল্পগুলো নিজের অজান্তেই অনেক কিছু রেখে যেত অন্দরে। একদিন ভাবলাম, গল্পগুলো আমার শিক্ষার উপকরণ হচ্ছে। এগুলো কুরআন-হাদিসের ছায়া অবলম্বনে গল্প। কিছু গল্প ভিন্নও আছে। আমিও তো এমন কিছু লেখতে পারি। যেমন ভাবনা তেমন কাজ। গল্পগুলো নিছক অনুবাদ গল্প হলে বহু আগেই ছাপার অক্ষরে এসে যেত। কারণ, ফেসবুকে সে অনুবাদ গল্পগুলো পাঠককে আনন্দ দিয়েছে। অনেকেই ছাপার অক্ষরে আনার অনুরোধ করেছেন। নিজের মতো করে গল্পগুলো নিয়ে ভেবেছি। শিখেছি। এরপর ‘পুনশ্চ : ও শিক্ষা’-যোগে লেখেছি। অনেকগুলো গল্প শুনেছি উস্তাযদের মুখে। আবার কিছু গল্প পড়েছিলাম বহু আগে ‘আল-বিদায়া ওয়ান নিহায়ায়’। এভাবেই একের পর এক গল্প তৈরি হয়েছে। আলোর মশাল নিয়ে অন্ধকার পথে হেঁটেছি। পাথরের মাঝে অনুভূতি সৃষ্টির দৃঢ় প্রত্যয় নিয়ে। সামনে প্রগাঢ় অন্ধকার। আলো সামান্য। এ পথে সামনে এগোতে খোদায়ি তাওফিক কামনা করছি। আল্লাহ তাআলা বইটিকে সেই আন্দোলনের সৈনিক হিসেবে কবুল করুন। সব ভালো তাঁর আর ভুলগুলো অক্ষম বান্দার। আল্লাহই উত্তম কর্মবিধায়ক। বইটির প্রকাশক মহোদয়, উস্তাযে মুহতারাম মাওলানা নাসীম আরাফাত সাহেব যেই মিশন নিয়ে পথ চলেছেন। সেই মিশনে শামিল হওয়ার ক্ষুদ্র প্রচেষ্টা নিয়ে ভরপুর কামিয়াবির প্রার্থনা মহান আল্লাহর দরবারে। বইটি সম্পাদনার কাজে আমার সহধর্মিণী অনেক শ্রম দিয়েছেন। আল্লাহ তাকে এর উত্তম প্রতিদান দান করুন। ফাইনাল প্রুফ দেখেছেন সাইফ মুরতাফি ভাই। আল্লাহ তাকেও কবুল করুন। এ বইয়ের সাথে সম্পৃক্ত সকলকে আল্লাহ কবুল করুন। মানযিলে পৌঁছান। আমিন।