মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে গ্রহণযোগ্য কোনো ভালো লেখা,বিশালতর সিন্ধুর মাঝখানে দুর্লভ কোনো প্রবাল দ্বীপ।অথবা নিসঙ্গ কোনো বাতিঘর।অথবা প্রায় অসম্ভব কোনো,অজেয়,এক্সিমো ইগলু যেখানে পৌছবার পথ অজানা।যেমন অজানা একজন মহাকাশচারির কাছে ছায়াপথ...গ্যালাক্সি।একটুখানি বিহবল শোনালেও মাঝে মাঝে এমনও মনে হয় মুক্তিযুদ্ধের ভালো লেখা হয়তো মরিচীকা-ই।অধরা অর্থে মরিচীকা আর কী।বলতে চাই ,সেই দূর্লভ প্রবাল দ্বীপ বা নিসঙ্গ বাতিঘরের কাছে পৌছানো প্রায় অসম্ভব।যেমন পৌছানো যায় না অলীক মরীচিকার কাছে।যুদ্ধকালীন নিষ্ঠুরতা,নৃশংসতা,পাকিস্তান শাসক ও সেনাবাহিনীর ক্ররতা...পড়বার সময়-ই মনের উপর সাংঘাতিক চাপ সৃষ্টি করে...।লেখার সময় সেই চাপ হয়ে দাঁড়ায় মৃত্যুর অধিক যন্ত্রণার। ...আবার সব ছাপিয়ে হয়ে উঠে অপমানটাই...।বারবার মনে হয়,এই অপমান চুয়াল্লিশ বছর আগের নয়,যেন মাত্রই ঘটে গেল,মাত্রই মুখোমুখি হলাম...।কোনো বাক্য,কোনো শব্দ...কিছু দিয়েই সেই অনুভব ধরা যায় না।অন্তত আমি তা পারিনি।মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে লিখতে গেলে কলমের চোখকেও নির্মোহ,রাখা হয়ে উঠে অসম্ভব।এই অক্ষমতা স্বীকার করে নিলাম।অপেক্ষায় আছি সেই লেখকের,যিনি এই অধরা,অলীক,অসম্ভব আবেগকে তাঁর লেখার ক্ষমতা দিয়ে ঠিক করে ফেলবেন।আয়ু ক্ষয় করা পরিশ্রমের সঙ্গে কোনো অলৌকিক শক্তিতে ভর করে আমাদের মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে লেখা হয়ে যাবে ওয়্যার এন্ড পিস,ইউলিসিস অথবা ক্রাইম অ্যান্ড পানিশমেন্ট।অপেক্ষায় আছি সেই টলস্টয়,জেমস জয়েস অথবা দস্তভয়স্কির...। -লেখক