“ঝাড়ুয়ার বিল গণহত্যা" বইটির ফ্ল্যাপ এর লেখাঃ ১৯৭১ সালে বাংলাদেশে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী ও তার দোসররা যে গণহত্যা চালিয়েছিল তার দৃষ্টান্ত বিরল । এত কম সময়ে, একটি মাত্র দেশে ৩০ লক্ষেরও বেশি মানুষ। কোথাও হত্যা করা হয়নি। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর এ ধরনের ঘটনা। প্রথম । শুধু তাই নয়, হত্যার সঙ্গে নির্যাতন করা হয়েছে ৬ লক্ষেরও বেশি নারীকে যারা পরিচিত বীরাঙ্গনা মুক্তিযােদ্ধা হিসেবে। এ ছাড়া নিপীড়িত হয়েছেন অসংখ্য মানুষ । মুক্তিযুদ্ধের বয়ান সম্পূর্ণ হবে না যদি এ গণহত্যা ও নির্যাতন গুরুত্ব পায়। সে কারণে ১৯৭১: গণহত্যা-নির্যাতন আর্কাইভ ও জাদুঘর ট্রাস্ট প্রকাশ করছে ১৯৭১: গণহত্যা-নির্যাতন নির্ঘণ্ট গ্রন্থমালা । পর্যায়ক্রমে প্রতিটি গণহত্যা, বধ্যভূমি [ও নির্যাতন] নিয়ে গ্রন্থ প্রকাশিত হবে । আমরা চাই নতুন প্রজন্ম জানুক, স্বাধীনতা শুধু চারটি বর্ণের সমাহার নয় । এর পেছনে আছে লক্ষ মানুষের আত্মত্যাগ, নির্যাতন আর দীর্ঘশ্বাস। বাংলাদেশে এ ধরনের প্রয়াস প্রথম। রংপুর জেলার বদরগঞ্জ উপজেলার ঝড়য়ার বিল গণহত্যা নিয়ে গণহত্যা-নির্যাতন নির্ঘণ্ট গ্রন্থমালার বর্তমান গ্রন্থটি প্রণীত। একাত্তরের ১৭ এপ্রিল কারা, কীভাবে সেই ঘৃণ্যতম গণহত্যা সংঘটিত করেছিল নির্যাতিত, ভুক্তভােগী ও প্রত্যক্ষদর্শীর ভাষ্য থেকে তা জানা যাবে; জানা যাবে শহীদদের নাম-পরিচয় ও নির্যাতিতদের পরিচয় এবং বধ্যভূমি-সংরক্ষণের প্রয়াস ও বর্তমান অবস্থা । এ যেন মুক্তিযুদ্ধের মহাকাব্যের কয়েকটি রক্তভেজা পাতা, শহীদের আত্মদানের অশ্রুমাখা গাঁথাসর্বোপরি মুক্তিসংগ্রামের মর্মন্তুদ কাহিনী । গ্রন্থটি রচনা করেছেন। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় ইতিহাস বিভাগের প্রভাষক আহম্মেদ শরীফ । তার গ্রন্থ সংখ্যা পাঁচ।