২৫শে মার্চ ১৯৭১, রাত আনুমানিক দশটা দশ মিনিট। ট্যাংক, কামান, মেশিনগান আর আধুনিক স্বয়ংক্রিয় অস্ত্রেশস্ত্রে সজ্জিত পাকিস্তানি আর্মি ঢাকা ক্যানটনমেন্ট থেকে বের হয়ে আসতে শুরু করেছে। লক্ষ্য ত... See more
TK. 500 TK. 430 You Save TK. 70 (14%)
* স্টক আউট হওয়ার আগেই অর্ডার করুন
কমিয়ে দেখুন
বাংলাদেশে এই প্রথম "অনলাইন বাণিজ্য মেলা" ১ লক্ষাধিক পণ্যে ৭৫% পর্যন্ত ছাড়! সাথে BOGO, 100+ Bundle, ফ্রি শিপিং সহ আকর্ষণীয় সব অফার!
বাংলাদেশে এই প্রথম "অনলাইন বাণিজ্য মেলা" ১ লক্ষাধিক পণ্যে ৭৫% পর্যন্ত ছাড়! সাথে BOGO, 100+ Bundle, ফ্রি শিপিং সহ আকর্ষণীয় সব অফার!
২৫শে মার্চ ১৯৭১, রাত আনুমানিক দশটা দশ মিনিট। ট্যাংক, কামান, মেশিনগান আর আধুনিক স্বয়ংক্রিয় অস্ত্রেশস্ত্রে সজ্জিত পাকিস্তানি আর্মি ঢাকা ক্যানটনমেন্ট থেকে বের হয়ে আসতে শুরু করেছে। লক্ষ্য তাদের ঢাকা ভার্সিটি, পিলখানা ইপিআর সদর দপ্তর, রাজারবাগ পুলিশ লাইনসের দখল নিয়ে সম্পূর্ণ ঢাকায় নিজেদের নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করা। ফার্মগেট অতিক্রম করার সময় তেজগাঁও থানা থেকে ওয়্যারলেসে সাথে সাথে খবরটি জানিয়ে দেওয়া হলো রাজারবাগ পুলিশ লাইনসে। মুহূর্তেই পাগলা ঘণ্টা বেজে উঠল রাজারবাগে। রাজারবাগের পুলিশ যে যে-খানে যে-অবস্থায় ছিল ছুটে এলো অস্ত্রাগারের দিকে। পাক হানাদারদের প্রতিহত করতে তারা ভেঙে ফেলল আইজি রিজার্ভ স্টোর-সহ রাজারবাগের কেন্দ্রীয় অস্ত্রাগারের তালা। সেকেলে থ্রিনটথ্রি রাইফেল-হাতে পজিশন নিল ভারী আর স্বয়ংক্রিয় অস্ত্রে সজ্জিত পাকিস্তানি আর্মিদের মোকাবিলা করতে। রাত সাড়ে এগারোটায় পাকিস্তানি আর্মি রাজারবাগের সীমানায় পৌঁছামাত্র গর্জে উঠল পুলিশের থ্রিনটথ্রি রাইফেল, সেইসাথে ছুটে গেল মহান স্বাধীনতা অর্জনে প্রথম বুলেট। পাকিস্তানি আর্মিদের মেশিনগান, মর্টার, কামান আর ট্যাংকের সামনে এতটুকু পিছিয়ে আসেনি রাজারবাগের অকুতোভয় বীর পুলিশ-সদস্যরা। একে একে জীবন উৎসর্গ করতে থাকে তারা। ‘জীবন দিয়ে হলেও দেশমাতৃকাকে পাকিস্তানি হানাদারমুক্ত করে ছাড়বে’Ñ এই ছিল তাদের ব্রত। তাইতো বারবার তারা রুখে দিতে সমর্থ হয় পাকিস্তানি আর্মিদের। কিন্তু শেষ পর্যন্ত কী ঘটেছিল রাজারবাগের সেই যুদ্ধে? তুমুল আর ভয়ংকর সেই যুদ্ধের না-জানা অনেক সত্য কাহিনি নিয়ে রচিত হয়েছে ‘নক্ষত্রের রাজারবাগ’ যা পাঠকদের নিয়ে যাবে ১৯৭১ সালের ২৫শে মার্চের বিভীষিকাময় ভয়াল সেই রাতে যেখানে সূচিত হয়েছিল স্বাধীনতার প্রথম সশস্ত্র প্রতিরোধযুদ্ধ।
লেখক মোশতাক আহমেদ এর জন্ম ১৯৭৫ সালের ৩০ ডিসেম্বর, ফরিদপুর জেলায়। পেশায় একজন চাকুরিজীবী হওয়া সত্ত্বেও লেখালেখির প্রতি তাঁর আগ্রহ প্রচুর। এ পর্যন্ত সায়েন্স ফিকশন নিয়েই সবচেয়ে বেশি লিখেছেন। বাংলা সায়েন্স ফিকশন জগতে তার পোক্ত একটি অবস্থান সৃষ্টি হয়েছে। এছাড়াও মোশতাক আহমেদ এর বই সমূহ ভৌতিক, প্যারাসাইকোলজি, মুক্তিযুদ্ধ, কিশোর ক্ল্যাসিক, ভ্রমণ ইত্যাদি জঁনরাতে বিভক্ত। যেকোনো একটি বিষয়ে সীমাবদ্ধ না থেকে তিনি বিভিন্ন বিষয় নিয়ে লিখতেই পছন্দ করেন। মোশতাক আহমেদ এর বই সমগ্র সংখ্যায় পঞ্চাশ পেরিয়েছে। তাঁর প্রথম প্রকাশিত বই ছিল ‘জকি’। এটি একটি জীবনধর্মী উপন্যাস। ২০০৫ সালে এটি প্রকাশিত হয়। মোশতাক আহমেদ পড়াশোনা করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। প্রথমে ফার্মেসি বিভাগে, পরে আইবিএতে। পরবর্তী সময়ে ইংল্যান্ডের লেস্টার বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অপরাধবিজ্ঞান থেকে মাস্টার্স ডিগ্রী অর্জন করেন। পড়াশোনার খাতিরেই হোক বা কর্মজীবনের তাগিদেই হোক, ব্যক্তিগত জীবনে তিনি অনেক ভ্রমণ করেছেন। সেসব ভ্রমণকাহিনীর আশ্রয়ে তাই ক্রমেই সমৃদ্ধ হয়েছে তাঁর লেখা ভ্রমণকাহিনীগুলোও। তাঁর সৃজনশীল কর্মকাণ্ড শুধু লেখালেখিতেই গণ্ডিবদ্ধ নয়। ১৯৭১ সালের ২৫শে মার্চ রাজারবাগের পুলিশ ও পাকিস্তানী হানাদারবাহিনীর মধ্যে একটি যুদ্ধ সংঘটিত হয়েছিল। সে ঘটনার ওপর ভিত্তি করে মোশতাক আহমেদ ‘মুক্তিযুদ্ধের প্রথম প্রতিরোধ’ নামে একটি তথ্যচিত্র নির্মাণ করেন। এটি ২০১৩ সালের মার্চ মাসে মুক্তি পায়। তাঁর পুরস্কারের ঝুলিতে এ পর্যন্ত রয়েছে ২০১৩ সালের কালি ও কলম সাহিত্য পুরস্কার, ২০১৪ সালের ছোটদের মেলা সাহিত্য পুরস্কার, ২০১৪ সালের কৃষ্ণকলি সাহিত্য পুরস্কার, ২০১৫ সালের সিটি আনন্দ আলো পুরস্কার এবং সর্বশেষ সংযুক্তি হিসেবে সায়েন্স ফিকশন বিষয়ে বিশেষ অবদান রাখার জন্য বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার-২০১৭।
#Rokomari_Book_Club_Review_Competition #রকমারি_বুক_রিভিউ_প্রতিযোগিতা_২০২১ বইয়ের নাম: নক্ষত্রের রাজারবাগ লেখক :মোশতাক আহমেদ রিভিউয়ার: রুফাইদা তাসফিয়াত ফিজা ক্যাটাগরি: মুক্তিযুদ্ধের উপন্যাস ১৯৭১ এর রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধে অবদান রাখা সশস্ত্র বীর সেনানীদের নাম নিতে গেলে সবার আগেই আসে তৎকালীন ঢাকার রাজারবাগ পুলিশ লাইন্সে কর্মরত পুলিশ সদস্যদের কথা।কারণ রাজারবাগে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর আক্রমণ প্রতিহত করতে স্বাধীনতা যুদ্ধের প্রথম বুলেট ছুটে গিয়েছিল পুলিশের থ্রিনটথ্রি রাইফেল থেকেই। এই বইয়ের ভাষ্য অনুযায়ী প্রতীয়মান হয় যে,একাত্তরের মার্চ মাসের শুরু থেকেই বাঙালি পুলিশরা স্বাধীনতা অর্জনের জন্য আন্দোলনকারী মুক্তিকামী বাঙালিদের সাথে একাত্ম ছিলেন। মিছিলে কোনো বাঙালি পুলিশ জনতার উপর হামলা চালিয়েছেন,এমন প্রমাণ পাওয়া যায় নি।বরং, পুলিশের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা গোপনে প্রতিবাদী কর্মকাণ্ডকে সমর্থন দিতেন এবং বিশ্বাসভাজন পুলিশ সদস্যদেরকে সশস্ত্র সংগ্রামের জন্য প্রস্তুতি নিতে অনুপ্রেরণা দিতেন। উপন্যাসটি আমাদের পরিচয় করিয়ে দেয় কিছু অসমসাহসী মানুষের সাথে,যারা ছিলেন কনস্টেবল,কেউ আবার সার্জেন্ট।তাঁরা দিনে রাতে বিভিন্ন সময় লুকিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে যেতেন এবং ছাত্রদের গেরিলা প্রশিক্ষণ দিতেন।কারণ তাঁরা পরিস্থিতি আঁচ করে বুঝেছিলেন যে,পাক আর্মি হামলা করলে রাজারবাগ একটা প্রধান টার্গেটে পরিণত হবে,কারণ এই পুলিশ লাইন্সে অস্ত্রশস্ত্র আছে এবং এই জায়গা দখল করলে বাঙালিদের মনোবল অনেকটাই ভেঙ্গে পড়বে।তাই পুলিশ সদস্যরা নিজেদের আত্মত্যাগের জন্য প্রস্তুত করে রেখেছিলেন,দৃঢ়প্রতিজ্ঞ ছিলেন,"অস্ত্র ধরা লাগলে দেশের জন্য ধরব,স্বাধীনতার জন্য ধরব ।" ২৫শে মার্চ রাত ১১.৩০ মিনিটে তাঁরা পাকবাহিনীর উপর গুলিবর্ষণ শুরু করে। প্রথম দিকে দুই তিনবার সেনাবাহিনী দিশেহারা হয়ে যায়।তারা আরো ভারী অস্ত্র নিয়ে হামলা করে এবং পুলিশদের অস্ত্র ও গুলি ফুরিয়ে আসতে থাকে।একপর্যায়ে তাঁরা শহীদ হতে থাকেন। বুলেট শেষ না হওয়া পর্যন্ত তাঁরা বীরত্বের সাথে লড়াই করে যান।ভোরের আলোর সুযোগ নিয়ে পাকিস্তানিরা আরও এগিয়ে যায় এবং বোমাবর্ষণের মাধ্যমে রাজারবাগ দখল করে নেয়। সেরাতে অস্ত্রধারী বীর পুলিশদের বেশিরভাগই প্রাণ দিয়েছিলেন।উপন্যাসটি দেখিয়ে দেয় যে কী করে বিহারিদের বিশ্বাঘাতকতায় পুলিশ সদস্যরা শাহাদাত বরণ করেছিলেন। এমনকি তাঁদের আলাদা করে মর্যাদার সাথে সমাহিত করাও সম্ভব হয়নি স্থানীয়দের পক্ষে। যারা বাঁচতে পেরেছিলেন তাঁরা পরবর্তীতে ছদ্মবেশে রাজারবাগ ত্যাগ করে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়েছিলেন। জাতির বীর পুলিশদের প্রতি অনবদ্য ভালোবাসার নিদর্শন এই উপন্যাসটি।তাঁরা মৃত্যু নিশ্চিত জেনেও অস্ত্র ধরেছিলেন, স্বাধীনতার পক্ষে দাঁড়িয়েছিলেন।বিনা প্রতিরোধে দখল হওয়ার লজ্জা থেকে তাঁরা রাজারবাগকে বাঁচিয়েছিলেন।তাইতো পাকবাহিনীর হাতে পরাজিত হয়েও তাঁরা বাঙালির হৃদয়ে ভালোবাসার অমর আসন জয় করেছেন। স্বাধীন বাংলাদেশের পদ্মা-মেঘনা-যমুনার স্রোতধারায় আজও উচ্চারিত হয় রাজারবাগের নক্ষত্রদের নাম।
Read More
Was this review helpful to you?
By mehrab masayeed habib,
18 Oct 2021
Verified Purchase
সত্য ঘটনা অবলম্বনে লেখা দারুন একটি উপন্যাস। ১৯৭১ এর ২৫ মার্চ রাতে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী অপারেশন সার্চলাইট পরিচালনা করে রাজারবাগ পুলিসলাইনে যে হামলা চালিয়েছিল, সেটা রাজারবাগ পুলিশ লাইনের পুলিশরা কিভাবে প্রতিরোধ করেছিল, তা জানা যাবে এই বই পড়ে
Read More
Was this review helpful to you?
By Md. Galib Ishraq Emran,
15 Apr 2021
Verified Purchase
Very good book.
Read More
Was this review helpful to you?
By Moniruzzaman,
19 Apr 2021
Verified Purchase
২৫ শে মার্চ। ১৯৭১ সালের এই দিনে কাল রাত্রিতে পাকিস্তান হানাদার বাহিনীর অপারেশন সার্চলাইট এর নামে যে সময়ে বর্বরোচিত হত্যাকাণ্ড শুরু করেছিল সেই রাতেই বাঙালির স্বাধীনতা যুদ্ধ শুরু হয়েছিল। সেই যুদ্ধের প্রথম সশস্ত্র প্রতিরোধ গড়ে তুলেছিল রাজারবাগ পুলিশ লাইনের বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনী। আধুনিক অস্ত্রশস্ত্র ও ট্যাংক কামান নিয়ে সজ্জিত পাক হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে সাধারণ সিঙ্গেল শট থ্রি নট থ্রি রাইফেল ও এক বুক দেশপ্রেম নিয়ে রাজারবাগের সাহসী পুলিশ সদস্য গন যে বীরত্বপূর্ণ ভাবে প্রতিরোধ গড়ে তুলেছিলেন প্রাপ্ত তথ্য উপাত্তের ভিত্তিতে একটি গল্পের মাধ্যমে লেখক এই বইটিতে তা তুলে ধরেছেন।
বইটি পুরোপুরি বাস্তব ঘটনার উপর নির্ভর করে লেখা। চাকরি সূত্রে প্রায় এক বছর আমি রাজারবাগ ও তার আশে পাশে ছিলাম তাই বইটি পড়ার সময় আমি সেই ঘটনাবহুল রাতটি খুব ভালোভাবেই অনুধাবন করতে পারছিলাম। বইটি পড়ার সময় আমার মনে হচ্ছিল আমি যেন সেই যুদ্ধক্ষেত্রের মধ্যেই আছি। আমার চোখের সামনে রাজারবাগের বীর পুলিশরা পাক হানাদার বাহিনীদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে যাচ্ছেন। বইটির লেখক খুব সফল ভাবেই সেই ভয়াবহ কালরাত্রিতে রাজার বাগ পুলিশ লাইন ও এর আশেপাশে ঘটে যাওয়া ঘটনাগুলোর তাঁর উপন্যাসের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত করতে পেরেছেন।
সেদিন পাকিস্তান হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে প্রথম সশস্ত্র প্রতিরোধে রাজার পুলিশ লাইনের অনেক পুলিশ সদস্য বীরত্বের সাথে যুদ্ধ করে শহীদ হয়েছিলেন। তাদের আত্মত্যাগ বিফলে যায়নি। সরকারি চাকরিজীবী হওয়া সত্ত্বেও কিরকম দেশপ্রেম মাতৃভূমির প্রতি ভালোবাসা থাকলে সরকারের বিরুদ্ধে গিয়ে মৃত্যু নিশ্চিত জেনেও যুদ্ধক্ষেত্রে ঝাঁপিয়ে পড়া যায় তা পাঠকগণ এই বইটি পড়লে বুঝতে পারবেন। এতদিন যারা রাজারবাগ পুলিশের সেই আত্মত্যাগের কথা শুধু শুনে এসেছেন এই বইটি পড়ার পর কল্পনার মানস চোখে তা দেখতেও পাবেন।