”উত্তরণ: শ্রেষ্ঠত্বের পথে সকলে” বইয়ের প্রথম ফ্ল্যাপ এ্রর লেখা: একটি রাষ্ট্র কোন গুণে মহান? শুধুই কি অর্থনৈতিক উন্নতি আর সামরিক ক্ষমতার বলে, না কি অন্য আরও কিছু গুণে? আমাদের যাবতীয় পরিকল্পনা, লগ্নি ও প্রকল্পগুলি আমাদের রাষ্ট্রকে যে লক্ষ্যে পৌঁছে দিতে চায়, সেই লক্ষ্যে রাষ্ট্র হিসেবে পৌঁছনাের রাস্তার শেষ মাইলটি পেরােতে সাহায্য করবে কোন সে জিনিস? অচিরেই ভারত অর্থনৈতিকভাবে উন্নত রাষ্ট্র হিসেবে চিহ্নিত হবে। কিন্তু কঠিন সময়কে যুঝে বেঁচে থাকার পাঠও নিতে হয় রাষ্ট্রকে। তাই একটি জাতীয় চরিত্রের নির্মাণ আবশ্যিক, যা জন্ম নিতে পারে আমাদের পারিবারিক মূল্যবােধ, স্কুলের শিক্ষা, আর দেশের সংস্কৃতি থেকে। ‘উত্তরণ’ গ্রন্থে এ পি জে আবদুল কালাম ২০২০ সালের মধ্যে ভারতের অর্থনৈতিক উন্নয়নের বিষয় থেকে নজর ঘুরিয়ে লক্ষ্য করেছেন আমাদের। নিজস্ব শক্তির উন্নয়ন। এবং কিছু গুরুত্বপূর্ণ পাঠ দিয়েছেন যা ভারতকে সাহায্য করবে পরিবর্তনের ঝাপটাকে সহ্য করতে। একটি রাষ্ট্র কীসে মহান হয় তা তিনি শনাক্ত করেছেন এবং অন্য দেশের সঙ্গে। ভারতের জীবনযাত্রার মানের তুলনা করেছেন। তার বিভিন্ন ভ্রমণ এবং মানুষের সঙ্গে সাক্ষাতের। অভিজ্ঞতা থেকে রসদ নিয়েছেন তিনি। বিভিন্ন ক্ষেত্রের মানুষজনের জন্য রচনা করেছেন শপথ, যা প্রত্যেকের জীবনকে করে তুলবে সমৃদ্ধ। ২০১৫ সালে তার প্রয়াণের কিছু আগেই শেষ। করেছেন এই বই। এই লেখায় ভারতের অন্যতম জনপ্রিয় শ্রেষ্ঠ আইকন দেখিয়েছেন কীভাবে। উত্তরণের দিশায় নেতৃত্ব দেবে আমাদের রাষ্ট্র।
আবুল পাকির জয়নুল-আবেদিন আব্দুল কালাম (১৫ অক্টোবর ১৯৩১ - ২৭ জুলাই ২০১৫) ছিলেন ভারতীয় প্রজাতন্ত্রের একাদশ রাষ্ট্রপতি (২০০২২০০৭)। কালাম তাঁর কর্মজীবন শুরু করেছিলেন একজন বিজ্ঞানী হিসেবে। পরে তিনি ঘটনাচক্রে রাজনীতিবিদে পরিণত হন। কালামের জন্ম অধুনা ভারতের তামিলনাড়ু রাজ্যের রামেশ্বরমে। তিনি পদার্থবিদ্যা ও বিমান প্রযুক্তিবিদ্যা নিয়ে পড়াশোনা করেছিলেন। এরপর চল্লিশ বছর তিনি প্রধানত রক্ষা অনুসন্ধান ও বিকাশ সংগঠন (ডিআরডিও) ও ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থায় (ইসরো) বিজ্ঞানী ও বিজ্ঞান প্রশাসক হিসেবে কাজ করেন। ভারতের অসামরিক মহাকাশ কর্মসূচি ও সামরিক সুসংহত নিয়ন্ত্রিত ক্ষেপণাস্ত্র উন্নয়ন কর্মসূচির সঙ্গে তিনি অঙ্গাঙ্গীভাবে যুক্ত ছিলেন। ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ও মহাকাশযানবাহী রকেট উন্নয়নের কাজে তাঁর অবদানের জন্য তাঁকে ‘ভারতের ক্ষেপণাস্ত্র মানব’ বা ‘মিশাইল ম্যান অফ ইন্ডিয়া’ বলা হয়। ১৯৯৮ সালেপোখরান-দুই পরমাণু বোমা পরীক্ষায় তিনি প্রধান সাংগঠনিক, প্রযুক্তিগত ও রাজনৈতিক ভূমিকা পালন করেন। এটি ছিল ১৯৭৪ সালে স্মাইলিং বুদ্ধ নামে পরিচিত প্রথম পরমাণু বোমা পরীক্ষার পর দ্বিতীয় পরমাণু বোমা পরীক্ষা।২০০২ সালে কালাম তৎকালীন শাসকদল ভারতীয় জনতা পার্টি ও বিরোধী দল ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের সমর্থনে রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হন। পাঁচ বছর এই পদে আসীন থাকার পর তিনি শিক্ষাবিদ, লেখক ও জনসেবকের সাধারণ জীবন বেছে নেন। ভারতের সর্বোচ্চ অসামরিক সম্মান ভারতরত্ন সহ একাধিক গুরুত্বপূর্ণ সম্মান ও পুরস্কার পেয়েছিলেন কালাম।