পৃথিবীতে মানুষের আবির্ভাব, জীবন-সংগ্রাম, জাগরণ, শক্তিসঞ্চয় এবং সভ্যতা নির্মাণের ইতিহাসে যুদ্ধ মুখ্য ভূমিকা রেখেছে। মূলত, শান্তির বিপরীতে যুদ্ধ। যুদ্ধ কখনোই কল্যাণ বয়ে আনতে পারে না। একটি যুদ্ধের কুফল দীর্ঘকাল ধরে মানুষ বয়ে বেড়ায়। প্রাচীন কালে রাজ্যবিস্তারের আকাক্সক্ষা থেকে রাজা-বাদশাদের মধ্যে যুদ্ধ সংঘটিত হতো। পেশীশক্তি প্রদর্শন, ক্ষমতার দর্প এবং ধর্মরক্ষা ও বর্ণবিদ্বেষী মানসিকতাও মানুষকে ভয়াবহ যুদ্ধের দিকে ঠেলে দিয়েছে। আবার শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্যও কখনো-কখনো অপশক্তির বিরুদ্ধে যুদ্ধ সংঘটিত হয়েছে। যুদ্ধ হয়েছে স্বাধীনতা প্রতিষ্ঠা এবং হৃৎস্বাধীনতা পুন-প্রতিষ্ঠার জন্য। মোট ৪২টি ঐতিহাসিক-যুদ্ধের ঘটনা এ-গ্রন্থে লিপিবদ্ধ হয়েছে। এরমধ্যে ১৭টি যুদ্ধই আমাদের এই উপমহাদেশে সংঘটিত হয়েছে। এখানে পৃথিবীর দীর্ঘকালব্যাপী ঘটে যাওয়া যুদ্ধগুলি সম্পর্কেও ধারণা পাওয়া যাবে। গ্রিকমিথের সেই ট্রয়ের যুদ্ধটিও ঐতিহাসিক দৃষ্টিতে জীবন্ত হয়ে উঠেছে লেখকের বিশ্লেষিত বর্ণনায়। সেই তরবারি যুগ থেকে পারবাণবিক যুগ অর্থাৎ কালক্রমিকভাবে ব্যবহৃত যুদ্ধাস্ত্র ও যুদ্ধের ধরনের চিত্রটিও এখানে স্পষ্ট হয়ে ওঠে। পৃথিবীর ভয়াবহ যুদ্ধগুলি সম্পর্কে মানুষের জানার আগ্রহ বিবেচনা করেই ‘বিশ্বের আলোচিত যুদ্ধ’ গ্রন্থটি প্রকাশের আয়োজন। এই বইটি পাঠের মধ্যদিয়ে আমরা ইতিহাসকে যেমন ছুঁয়ে যাবো, তেমনি আগামী পৃথিবীকে নিরাপদ রাখতে যুদ্ধ পরিহারের যেকোনো বিকল্প নেই তা উপলব্ধি করতে পারব।