বাংলাদেশের বেদে সম্প্রদায়ের উৎপত্তি সম্পর্কে বেদে বিষযক গবেষকগণ চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত টানতে পারেননি,এমনকি ঐক্যমত্য হতে পারেননি।কেউ বলেছেন-বেদেরা আরাকানের মনতং-মান্তা নৃগোত্র থেকে এসেছে।কেউ বলেছেন-না,খ্রিষ্টীয় সাত শতকের শেষ দিকে এরা আরবের আলবাদিয়া নামক স্থান থেকে এদেশে এসেছে।কেউ বলেছেন-খ্রিস্টীয় এগার শতকে ইরানে এদের উপস্থিতি ছিল।আবার কেউ কেউ বলেছে-না এরা মূলত খ্রিস্টীয় প্রথম শতকের মাঝামাঝি পূর্বভারত থেকে বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়ে। তবে,নৃবিজ্ঞানিরা একেবারেই একমত যে-বাংলাদেশের বেদেদের মধ্যে আরবদের সেমিটিক কোনো লক্ষণ নেই।কাজেই আমরা বেদে জনগো্ষ্ঠীর নৃতাত্ত্বিক পরিচয়টি জানতে সম্পূর্ণ করেছি ‘বাংলাদেশের বেদে জনগোষ্ঠী’ নামের এই বইটি।বেদেদের সমাজ-সংস্কৃতি ও নৃতাত্ত্বিক পরিচয়,ভাষার উৎস ও তাত্ত্বিক বৈশিষ্ট্য এবং বাংলা সাহিত্যে তাদের অবস্থান নিয়ে রচিত এই বইটি মূলত একটি অখণ্ড সংস্করণ ।এখানে আমরা বলার চেষ্টা করেছি যে-এদেশে বেদে বা ব্যালগ্রাহী বলে যারা পরিচিত তারা পারস্য বা আরব থেকে আসা কেউ নয়।এরা এদেশেরই ভূমিজ।বহু খ্রিস্ট পূর্বাব্দ থেকে এরা এদেশে সর্পজীবি হিসেবেই ছিল এবং আছে।বহু পূর্বাব্দের ঐতিহাসিক দলিল পূরাণগ্রন্থে তার প্রমাণ সুস্পষ্ট।
রঞ্জনা বিশ্বাস ১৯৮১ সালের ১০ ডিসেম্বর গােপালগঞ্জের। কোটালীপাড়া থানার রাধাগঞ্জ ইউনিয়নের খাগবাড়ি গ্রামে। জন্মগ্রহণ করেন। পিতা নির্মল বিশ্বাস ও মাতা পরিমলা। বিশ্বাস। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রাষ্ট্রবিজ্ঞানে এমএসএস ডিগ্রি লাভ করেন। ‘ভুলস্বপ্নে ডুবে থাক আদিবাসী মন’ (২০০৯), “আমি তিনবেলা বৃষ্টিতে ভিজি। (২০১০), “বেদনার পাথর ও প্রান্তিক দীর্ঘশ্বাস' (২০১৬) তার কবিতার বই। কবিতা ও ফোকলাের তার আগ্রহের বিষয়। কবিতা চর্চার পাশাপাশি ফোকলােরচর্চাকেও তিনি। ব্রত হিসেবে নিয়েছেন। কোটালীপাড়া এলাকার রূপকথার সংগ্রহ নিয়ে বের হয়েছে- ' জয়নালবাদশা ও রাজপুত্র তাজেম' (২০১১) ও ‘উড়াল ঘােড়া’ (২০১৭)।। এছাড়া বের হয়েছে শিশুতােষ বই- ‘খােকার বাংলা (২০১৯)। তার উল্লেখযােগ্য গবেষণাকর্ম- ‘বেদে। জনগােষ্ঠীর জীবনযাত্রা' (২০১১), রবীন্দ্রনাথ : কাবুলিওয়ালা, সুভা ও দালিয়া’ (২০১২), বাংলাদেশের। বেদে জনগােষ্ঠীর নৃতাত্ত্বিক পরিচয়’ (২০১৫), সাহিত্যে। বেদে সম্প্রদায়’ (২০১৬), ‘কিতুবীম : হিব্রু কবিতার। সাহিত্যমূল্য (২০১৭), লােকসংস্কৃতিতে বঙ্গবন্ধু ও। মুক্তিযুদ্ধ’ (২০১৭) মুক্তিযুদ্ধে খ্রিষ্টান সম্প্রদায়, ১ম খন্ড। (যৌথ) (২০১৯), বেদে জনগােষ্ঠীর ভাষা উৎস ও তাত্তিক। বৈশিষ্ট্য (২০১৭), এবং বেহুলা বাংলার ৭১ সিরিজের। মুক্তিযুদ্ধ ভিত্তিক উপন্যাস ‘বিষুদবারের বারবেলা’ (২০১৭)। গবেষণাকর্মের জন্য তিনি কালি ও কলম তরুণ কবি ও লেখক পুরস্কার-২০১৫ অর্জন করেন ।