‘প্রায় এক ঘণ্টা পর দাদিকে পাওয়া গেল দাদার কবরে। মাথা বাড়ি মেরে মেরে বলছিলাে, আমি তােমাকে ছেড়ে যাবাে না। তােমার ছেলেরা, ছেলের বউরা কেউ আমার কথা শুনছে না। শেষ পর্যন্ত দাদিকে তার দুই ছেলে দু’দিক থেকে হাত ধরে গাড়িতে বসিয়ে নিয়ে এলাে নতুন বাড়িতে। গুলশানের আলিশান বাড়িতে। সেই থেকে দাদি কেমন বদলে গেলাে। হাসি খুশি মাখা মিষ্টি দাদি। চুপচাপ হয়ে গেলাে চিরদিনের জন্য। ‘মেয়েটির কথায় আমি আর কিছু বলতে পারলাম না। কেমন যেনাে কিম্ভুতকিমাকার হয়ে গেলাম। দেখতে থাকলাম আমার চারপাশে- এই শহরে ছােটো ছােটো নীল রঙের বাড়ি। যার পাশ দিয়ে বয়ে যাচ্ছে দুধের নহর। স্বর্গের অপ্সরীরা হাঁটছে কোথাও কোথাও। গেলমানও আছে কয়েকজন। স্বর্ণ মেশানাে মেঠোপথ। পাখিরা উড়ছে...। ‘রুকসি আমেরিকা এসে এতাে বদলে গেছে যে, নিজেকে ক্লাবের নগ্ন ডান্সার বানালাে। তার কাজল কালাে আঁখি নেই, লম্বা এলােকেশী চুল কেটে ফেলেছে, চার ইঞ্চি হিল- চোখা হিল পরে, আর্টিফিসিয়াল দামি নখ লাগিয়েছে, লেদার স্কার্ট ট্যাঙ্ক টপ ড্রেস ও বিগ বুট পরে। নগ্ন ডান্সার হওয়ার জন্য চার-পাঁচ দিন যৌন আবেদনময়ী অঙ্গভঙ্গি করার ডান্স ক্লাস করতে হয়েছে। ম্যানহাটনের নুড ক্লাবে ডান্স করে রক মিউজিকের তালে তালে। ঘণ্টায় চল্লিশ ডলার- তার কাস্টমারদের টিপস দুই-তিনশত ডলার। আট ঘণ্টা কাজ করে এক ঘণ্টা লাঞ্চ বিরতি, কিছু কাস্টমারের সাথে ড্রিংক করতে হয়, উপরি ইনকাম আছে ক্লাবের নিয়ম অনুসারে। কবি ও কথাশিল্পী আহমেদ জামিল তার গল্পে এভাবেই বিশ্বটাকে তুলে ধরেছেন। তার স্বপ্নের কথা বলেছেন। বলেছেন পুরনাে ঢাকা শহরের কথা। আমেরিকার জীবনকথা। মানুষের চারপাশের সুখ-দুঃখ যন্ত্রণাকে জামিল বেশ মুন্সীয়ার সঙ্গেই তার গল্পে তুলে এনেছেন। তার গল্পে রাজনীতি আছে। আছে প্রেম, বিয়ে ও বিয়ের পরের জীবনের সুখ ও যন্ত্রণার কথা।...