উপমহাদেশে সাম্প্রদায়িকতার ইতিহাস একেবারে অর্বাচীনকালের নয়। সুপ্রাচীন রামায়ণ, মহাভারতের যুগ থেকেই এর অস্তিত্ব উপলব্ধি করা যায়। প্রাক-ঔপনিবেশিক আমলের সাম্প্রদায়িকতাবাদ এবং ঔপনিবেশিককালে উদ্ভূত মধ্যশ্রেণির চারিত্র্যবৈশিষ্ট্য নিয়ে বিস্তৃত আলোচনা করা হয়েছে গ্রন্থের দ্বিতীয় পরিচ্ছেদে। মূলত এ সময়ে সৃষ্ট সাম্প্রদায়িক উপসর্গগুলোকে সমাজতাত্ত্বিকগণ ধর্মীয় সাম্প্রদায়িকতা হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন। ইহজাগতিক সাম্প্রদায়িকতার সঙ্গে পরকালমুখি ধর্মনিষ্ঠার মেলবন্ধন ঘটে সাম্প্রদায়িকতাবাদ কীভাবে উপমহাদেশবাসীর জনজীবনকে বিষময় করে তুলেছে এবং এর জন্য কারা দায়ী এ বিষয়ে তৃতীয় পরিচ্ছেদে বেশ ভালোভাবে আলোকপাত করা হয়েছে। ড. সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী একটি প্রবন্ধে বলেছেন, ‘ধর্মের সাম্প্রদায়িকতার সম্পর্কটা কি পিতার সঙ্গে পুত্রের সম্পর্ক? হ্যাঁ অনেকটা তাই; তবে অবশ্যই যোগ করতে হবে যে সাম্প্রদায়িকতা ধর্মের নষ্ট পুত্র।... সাম্প্রদায়িকতা নষ্ট ছেলের মতোই উগ্র আচরণ করে, তবে যত তার আস্ফালন সবটাই কিন্তু ধর্মের জোরে।... কিন্তু কোনো সাম্প্রদায়িকতাই ধর্মীয় সাম্প্রদায়িকতার মতো প্রবল নয়, কেননা তাদের কারো কাছেই ততোটা পৈতৃক সম্পত্তি নেই ধর্মীয় সাম্প্রদায়িকতার কাছে যতোটা রয়েছে।’ আশা করি বর্তমান গ্রন্থে উপরি-উক্ত মন্তব্যের সার্থক প্রতিফলন ঘটানো গেছে।
রণজিৎ কর ১৯৫০ সনের ২ জানুয়ারি ময়মনসিংহ জেলার অন্তর্গত গৌরীপুর উপজেলার কোণাপাড়া গ্রামে। স্থানীয় পত্রিকায় তাঁর লেখার হাতেখড়ি হলেও অল্পতেই তিনি নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে সমর্থ হন। প্রকাশিত গ্রন্থ ‘সনাতন ধর্ম : মত ও মতান্তর'।