‘কীয়েক্টাবস্থা’ বইয়ের সংক্ষিপ্ত লেখা: লেখকের বিচিত্র অভিজ্ঞতাপুষ্ট জীবনের গল্প। এই বইটিতে উল্লিখিত সকল চরিত্র বাস্তব, সকল কাহিনী নির্ভেজাল সত্য। রহস্য, রোমাঞ্চ, ভ্রমণ, প্রেম, বিরহ, কিংবা একজন নিরীহ ছাত্রের গতানুগতিক জীবন এই রম্যগল্পগুলোর বিষয়বস্তু হলেও, একটি বিশেষ ক্ষেত্রে বইটি যেন এক সূত্রে গাঁথা মালা। আর সেই সুতাটি হল প্রাত্যহিক জীবনের নানা বিড়ম্বনা। প্রতিটি গল্পের শুরুতে আমরা দেখতে পাই কিছু নিদারুন ঘটনা, আর শেষে গিয়ে এক চিলতে রোদ্দুরের মত এক টুকরো হাসি। ঠিক যেমনটি আমাদের যাপিত জীবন। কীয়েক্টাবস্থার গল্পগুলোর সূতিকাগার পৃথিবীর নানা প্রান্ত। কখনো তা বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় বা বুয়েটের ছাত্রহল, কখনো তা হিমালয়ের পাদদেশ কিংবা নেপালের দুর্গম পথ, কখনো কাতারের উষর বিমানবন্দর, কখনো নিউ মেক্সিকো কিংবা মার্কিন মুলুকের বিভিন্ন অঙ্গরাজ্য। জীবন, সেতো অনুমানের অতীত! একারণে ‘কীয়েক্টাবস্থা’ কোন মিথ নয়, সত্য। যে ছেলেটি আজ সানন্দে প্রকৌশল যন্ত্র নিয়ে খুটখাট করে, যে মেয়েটি চিকিৎসক হওয়ার মানসে হাড়গোড় গোনে কিংবা যে ছেলেটি কোন কিছুর পরোয়া না করে ভার্সিটির ক্যাফেটেরিয়ায় বসে তাস পেটায় আর সিগ্রেট ফোঁকে, সকলেই তার নিজ নিজ জীবনের পরিক্রমায় নানা তিক্ত, বিচিত্র ও চমকপ্রদ অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করে যায়। অভিজ্ঞতা লব্ধ হলে কেউ তা ভুলে যায়, কেউ তা মনে রাখে। আর কেউ কেউ এই তুচ্ছ লেখকের মত তা অহেতুক লিখে রাখে।
মোস্তাকুর রহমানের জন্ম ১৯৮৭ সালের ৩১শে ডিসেম্বর, রংপুর শহরে। ডাকনাম সন্ধান। বাবা বজলার রহমান অবসরপ্রাপ্ত প্রকৌশলী, মা মাসুদা রহমান গৃহিণী। উচ্চমাধ্যমিক পর্যন্ত লেখকের পড়াশুনা রংপুর ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল ও কলেজে। তিনি ২০০৯ সালে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) থেকে সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং এ ব্যাচেলর ডিগ্রি সম্পন্ন করেন। পরবর্তীতে যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অফ নিউ মেক্সিকো থেকে ২০১২ সালে মাস্টার্স এবং ইউনিভার্সিটি অফ সাউথ ক্যারোলাইনা থেকে ২০১৭ সালে পিএইচডি অর্জন করেন। তিনি বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের সাউথ ক্যারোলাইনা রাজ্যের কলাম্বিয়া শহরে একটি সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানিতে রোড ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে কর্মরত আছেন। লেখক ২০১৯ সালে ফারজানা খান রুমির সাথে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। লেখকের বেড়ে ওঠা সাংস্কৃতিক পরিমণ্ডলে। তাঁর নানা প্রয়াত মকবুল আলী ছিলেন বাংলাদেশের প্রথম আব্বাস উদ্দিন একাডেমীর প্রতিষ্ঠাতা এবং একজন কীর্তিমান ভাওয়াইয়া শিল্পী। প্রমাতামহ সুসাহিত্যিক মৌলবি খেরাজ আলী ১৯৩৩ সালে প্রতিষ্ঠা করেন ‘খাতুনিয়া সার্কুলেটিং লাইব্রেরি’, যা ছিল তৎকালীন বাংলাদেশে নারীদের জন্য প্রতিষ্ঠিত প্রথম কোন পাঠাগার। লেখকের লেখালিখির হাতেখড়ি শৈশবেই। ২০০৩ সালে কলেজে পড়াকালীন প্রকাশিত হয় তাঁর কবিতাগুচ্ছের সংকলন ‘নীহারিকা ও নক্ষত্রবীথিকা’। ২০০৭ সালে বুয়েটে অধ্যয়নকালে, সেখানকার সাহিত্যমনাদের নিয়ে তিনি গড়ে তোলেন কবিতার ব্লগ ‘জিয়নকাঠি’। ২০১৫ সালের একুশে বইমেলায় প্রকাশিত হয় তাঁর প্রথম কবিতার বই ‘সুন্দরের সমীপে’। ২০২১ সালে প্রকাশিতব্য ‘কীয়েক্টাবস্থা’ লেখকের প্রথম রম্য গল্পগ্রন্থ।