মাঝ রাতে হঠাৎ ঘুম ভেঙে যায় প্যাটেলের। কি এক অস্থিরতায় পেয়ে বসে তাকে। কেমন যেন ছটফট লাগে। চারপাশ অন্ধকার। ঠিক বুঝে উঠতে পারে না, সে এখন কোথায়। কেমন তালগোল পাকিয়ে যায় সব। ধীরে ধীরে অন্ধকার সয়ে নেওয়ার পর তার সব কথা মনে পড়তে থাকে। পুরু কার্পেটে বিছানো আরামদায়ক শীতলপাটি। তার উপর রঙিন একটি চাদর। পাশাপাশি সারিবদ্ধভাবে চারটি বালিশ। তাতে গভীর ঘুমে তলিয়ে গেছেন সহযোগীরা। দীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়ে এসে সবাই খুবই ক্লান্ত-শ্রান্ত। অনেকদিন পর পেটপুরে সুস্বাদু খাবারের ব্যবস্থা হয়। তদুপরি ঘুমাতে ঘুমাতে বেশ রাত হয়ে যায়। তারও তো নিদ্রায় মগ্ন থাকার কথা। কিন্তু বেশিক্ষণ ঘুম হয়নি। হয়তো অবচেতন মনের কোনো দুশ্চিন্তা ভাঙিয়ে দেয় ঘুম। এই প্রথম দেশের সীমানার বাইরে আসা। মা-বাবা, ভাই-বোন, আত্মীয়-স্বজন আর পরিচিত গণ্ডি ছেড়ে সে এখন অনেক দূরে। সবকিছু ত্যাগ করে তাকে চলে আসতে হয়েছে। আর কখনো ফিরে যেতে পারবে কি না তার কোনো নিশ্চয়তা নেই। তার এভাবে চলে আসায় পরিবার-পরিজনের কী হবে? তাদের নিরাপত্তা তো বড় ধরনের ঝুঁকির মধ্যে পড়ে গেছে। যদিও এখন আর কেউ নিরাপদ নয়। তার কারণেই পরিবার অনেক বেশি বিপজ্জনক পরিস্থিতির মধ্যে আছে। এ দুশ্চিন্তা ভিতরে ভিতরে ছড়িয়ে দেয় অন্তর্দাহ। নিজেকে অপরাধী মনে হতে থাকে। বুকের মধ্যে কেমন হু হু করতে থাকে। ভিজে যায় চোখ। উপরে উপরে ডাকাবুকো মনে হলেও ভিতরে ভিতরে মনটা তালশ্বাসের মতো খুবই কোমল।