বাঙলা ভাষা ও বাঙালি সমাজ-সংস্কৃতির বিভিন্ন বিধা নিয়ে গবেষণা অসংখ্য; তবে গুরুত্বপূর্ণ ও গুণগত মানের গবেষণা তুলনামূলক কম; আর বাঙালি কীভাবে বাঙলা ভাষা অর্জন করে তা নিয়ে গবেষণা শুধু কম নয় বরং নেই বললে অত্যুক্তি হবে না। এ-পর্যন্ত মনোভাষাবিজ্ঞানের এ বিষয় নিয়ে যে গবেষণা হয়েছে তার প্রাথমিক রূপরেখা এ গ্রন্থে পাওয়া যাবে। তাছাড়া ঐতিহাসিক কাল থেকে বাঙলা ভাষা-সাহিত্য ও বাঙালির সমাজ-সংস্কৃতি রাষ্ট্র-রাজনীতি ব্যক্তি-কর্ম নিয়ে বাঙালি মনীষীগণ যেমন গবেষণা করেছেন তেমনি বিদেশিগণও করেছেন। এ ধারা এখনও অব্যাহত আছে এবং থাকবে। বাঙালির ভাষা সংস্কৃতি সমাজভাবনা গ্রন্থটি এমনি একটি স্মারক। গ্রন্থটিতে আবহমান বাঙলা ভাষার গতর-অন্তর অর্থাৎ ভাষার বহিঃ-সংগঠন ও অন্তর-সংগঠনের পাশাপাশি বাঙালির সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্যের দিকটি ফুটিয়ে তোলার প্রয়াসের পাশাপাশি তা বিশ্লেষিতও হয়েছে। ব্যক্তি-কর্ম-রাষ্ট্র ভাবনায় যথাসাধ্য পরিমিতির মধ্যে থেকে সংকট-সম্ভাবনার জায়গাগুলোকে পরিচিহ্নিত করা হয়েছে। বৈষম্যহীন সমাজ ব্যবস্থার ব্যবস্থাপনায় সমাজতান্ত্রিক চেতনা ও ইসলামি দর্শনের বিশ^জনীন নান্দনিক রূপের ধারণার এক মিথষ্ক্রিয়া লক্ষ করা যায়। সবকিছু বিবেচনায় এনে বলা যায় গ্রন্থটি মৌলিক ধারায় উত্তীর্ণ। গ্রন্থটি ভাষা-সংস্কৃতি-সমাজ বিষয়ক বাঙালি মনীষীদের ভাবনার ধারাবাহিকতায় স্বকীয় ধ্যান-ধারণা ও দৃষ্টিভঙ্গি যেমন ছড়াবে তেমনি এ ক্ষেত্রের পাঠক-গবেষকদের অন্তর-দৃষ্টি নির্মাণেও অনুসন্ধানী করে তুলতে ভূমিকা রাখবে সন্দেহ নেই।
আলম সাইফুল, মুক্তিযুদ্ধের সময়ের মুক্তিযোদ্ধার সন্তান। দিনাজপুর শহর থেকে একটু দূরে পুনর্ভবার পাড়ে নতুন পাড়া ঘুঘুডাঙ্গা গ্রাম থেকে শুরু করে বাবার চাকরি সূত্রে বেশ কয়েকটি প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্কুল ঘুরে ঘুরে, অবশেষে ভাদাই জি এস উচ্চ বিদ্যালয়, আদিতমারী, লালমনিরহাট এবং সরকারি কারমাইকেল কলেজ, রংপুর থেকে যথাক্রমে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সম্পন্ন করেন এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ¯œাতক-¯œাতকোত্তর-এমফিল ডিগ্রি অর্জন করেন। এ ছাড়া লিডিং ইউনিভার্সিটি, সিলেট থেকে সমকালের শিক্ষাপ্রবণতায় জীবিকার দায়ে সম্পন্ন করেন এমবিএ ডিগ্রি। ভাষাতত্ত্ব প্রিয় বিষয় হলেও সাম্প্রতিক সময়ে সাহিত্য-সংস্কৃতি ও ব্যক্তি-সমাজ-রাষ্ট্র পর্যেষণায় আগ্রহী হয়ে উঠছেন। ইতোমধ্যে সম্পন্নকৃত তাঁর গবেষণাকর্ম হলোÑ বাঙালি শিশুর প্রথম-ভাষা অর্জন : একটি মনোভাষিক বিশ্লেষণ (অপ্রকাশিত)।