পরিবার-ব্যবস্থা প্রাচীন ভারতের সমাজব্যবস্থায় পরিবার ছিলো একটি গুরুত্বপূর্ণ ঐকিক সংগঠন। পরিবারের সাহায্যেই সদস্যগণের আত্মরক্ষা, বংশবৃদ্ধি ও বর্ণসমূহের অনবছিন্নতা বজায় ছিল। তাছাড়া শিশুদের পালন-পোষণ, বালক-বালিকার শিক্ষা, মানবজাতির ঐতিহ্যরক্ষা ও মনুষ্যত্ববোধের বিকাশ প্রভৃতি গুণগুলি এক একটি পরিবারের সাথে যুক্ত থাকে। পরিবারের অন্তর্গত পিতা-মাতার আশ্রয়ে ও স্নেহ- ভালবাসায় শিশুমনের প্রথম উন্মেষ ও তারপর সমৃদ্ধি হয়। পরিবারের অন্তর্ভুক্ত থেকে শিশু থেকে বালক, বালক থেকে যুবক ইত্যাদি স্তরগুলি অতিক্রম করার সময় তারা উত্তম ব্যবহার, উপযুক্ত আচার-আচরণ, ধর্মীয় বিশ্বাস, দেশের প্রাচীন ঐতিহ্য প্রভৃতি ব্যাপারগুলি পরিবারের লোকজনের কাছে থেকেই অধিগত করে। পরিবারের মধ্যে থেকে মানুষ তার প্রথম খাদ্যাভ্যাস, পবিত্রতা-আচরণ, সত্যবাদিত্ব, শোভন পোষাক-পরিচ্ছদের প্রতি স্পৃহা, পিতা-মাতা-ভ্রাতা-ভগ্নীর প্রতি নিজ নিজ কর্তব্য, নৈতিক স্বভাবের বিচার প্রভৃতি আয়ত্ত করে এবং তার ফলে সমাজের উন্নতিসাধনে সহায়ক হওয়ার ক্ষমতা অর্জন করে। সৎ পরিবারের অন্তর্গত মানুষজন সমাজকে সমৃদ্ধ করতে সমর্থ হয় এবং সমাজস্থ লোকদের মধ্যে কর্মোদ্যোগ, স্বার্থহীনতা, পরস্পর ভালবাসা, একে অন্যের সাথে সহযোগিতা ও সহমর্মিতা সঞ্চারিত ক'রে সমগ্র দেশবাসীর মনোবল দৃঢ় করে। পিতা, মাতা, স্বামী, স্ত্রী যখন একই পরিবেশে বাস করার সময় একটি সর্বজনগ্রাহ্য সংস্কৃতির বাতাবরণ সৃষ্টি করে তখনই সুস্থ পরিবারের জন্ম হয়।