মনু ও মনুসংহিতা দ্বাদশ অধ্যায়ে বিভক্ত ‘মনুসংহিতা' ভারতীয় সমাজ ও সাহিত্যের ইতিহাসে একটি অত্যন্ত জনপ্রিয় ও বহু আলোচিত গ্রন্থ । মনুসংহিতার অধ্যায়দুটি অসম দৈর্ঘ্যযুক্ত এবং এতে ২৬৯৫ সংখ্যক শ্লোক আছে। ব্যাপক অর্থে শ্রৌতসূত্র, গৃহ্যসূত্র, মহাভারত, যাজ্ঞবল্ক্যসংহিতা, মনুসংহিতা প্রভৃতি বেদোত্তর গ্রন্থগুলিকে স্মৃতিশাস্ত্রের অন্তর্ভুক্ত করা হয়। ধর্মশাস্ত্র ও স্মৃতি—এই শব্দদুটি বহু প্রাচীনকাল থেকে আমাদের সাহিত্যে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। মহাভারতের শান্তিপর্বে (৮৫.১০) স্মৃতি শব্দের উল্লেখ একটি বিশেষ ধরণের শাস্ত্র বোঝাতে দেখা যায়। মনুসংহিতায় (২ অধ্যায়, শ্লোক— ১০) বেদকে ‘শ্রুতি আখ্যা দিয়ে ধর্মশাস্ত্রগুলিকে স্মৃতি নামে অভিহিত করা হয়েছে। মহাভারত (আদিপর্ব–২ অধ্যায়, শ্লোক—৩৮৩) নিজেকে ‘ধর্মশাস্ত্র’ নামে পরিচয় দিয়েছে, আবার নানা প্রসঙ্গে বহুবচনে ধর্মশাস্ত্রের প্রয়োগ করায় অনুমান করা অসঙ্গত হবে না যে, মহাভারত রচনার বেশ কিছু আগেই এমন কিছু গ্রন্থ রচিত হয়েছিল যা ধর্মশাস্ত্র (বা স্মৃতিশাস্ত্র)-জাতীয় । (বনপর্ব–১০৭.৮৩, ২৯৩.৩৪, ৩১৩.৫;শান্তিপর্ব–২৪.১৩;অনুশাসনপর্ব— ৯০.৩৪)। মনুসংহিতায়ও (৩.২৩২) বহু ধর্মশাস্ত্রের অস্তিত্বের ইঙ্গিত পাওয়া যায়।