দীর্ঘ ত্রিশ বছর পর টেলিফোনে কথা হয়। প্রিয় সেই কণ্ঠস্বর আগের মতো নেই। বদলে গেছে কথা বলার ভঙ্গি, সম্বোধনসূচক বাক্যও! কানাডার নাগরিককে বিয়ে করে সেখানেই স্থায়ী হয় সুপ্তি। এত বছর পরে একমাত্র সন্তানকে নিয়ে এখন বাংলাদেশে। অসুস্থ জীবনের শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করতে চায় প্রিয় মাতৃভূমিতে। অনেক দিনের ইচ্ছা, মরার আগে একবার হলেও বন্ধুদের সাথে ক্যাম্পাস ঘুরে দেখবে। অনেক কষ্টে জানতে পারে হিয়ার ঠিকানা, শুভ ঢাকায় থাকলেও পিয়ালের অবস্থান রংপুর। আর শিশির? অবশেষে দীর্ঘ ত্রিশ বছর পর মিলিত হয় পুরোনো বন্ধুমহল। টিএসসি-র বুকে পা রাখতেই চঞ্চল হয়ে ওঠে হৃদয়। কত শত গল্প, হাজারো স্মৃতি, কী নেই এখানে? জীবনের শ্রেষ্ঠ সময় পার করে আজ তারা জীবন নামক গল্পের শেষ অধ্যায়ে। চেনা পরিবেশ যেন কত অচেনা। তবুও চায়ের আড্ডায় মেতে উঠতে চায় তারা! হিয়ার চোখে মোটা ফ্রেমের চশমা৷ পিয়াল ও শুভ এখনো দুষ্টুমিতে সেরা। শিশিরের বুকে বিরহের কালো মেঘ জমেছে। হাঁটার শক্তি পায় না সুপ্তি, অসুস্থতায় শরীরে জং ধরেছে। হঠাৎ শিশির এসে পাশে দাঁড়ায়, সেই-ই তো এক সময়ে সুপ্তির সবচেয়ে কাছের মানুষ ছিল, আপন মানুষ ভাবতো। কিন্তু এখন? আসলে কী ঘটেছিল তাদের জীবনে? অত কাছের মানুষেরা কেন এত এত দূরে চলে গেল? চলুন জেনে নেওয়া যাক ‘শ্রাবণসন্ধ্যা’ থেকে।
শীত পড়তে শুরু করেছে, হালকা কুয়াশায় আচ্ছন্ন চারপাশ। রাতের আকাশে নিভুনিভু করে জ্বলছে একটি তারা। বাড়িতে তখন উৎসবমুখর পরিবেশ। নতুন অতিথির আগমন। জন্ম মফস্বল এক জেলা সুনামগঞ্জে। ছোটো অতিথির আগমন। আস্তে আস্তে বেড়ে উঠা। বয়স যখন পাঁচ বছর, তখন স্কুলে ভর্তি করে দেওয়া হয়। সেই যে ছুটা শুরু হয়েছিল, এখনো ছুটছে জ্ঞানার্জনের জন্য। স্কুলে একবার রক্ত পরীক্ষা করা হয়, সে বারই জানতে পারেন নিজের রক্তের গ্রুপ এশিয়ার সবচেয়ে কমন গ্রুপ ‘ও পজিটিভ’। শখ বলতে বুঝতো বই পড়া, সেই পড়ার নেশা থেকেই নতুন শখের জন্ম, সেটা হলো- লেখালিখি করা। বয়স সবে কুঁড়ি পার হয়েছে, এরই মধ্যে অনেক পাঠকের হৃদয়ে জায়গা করে নিয়েছেন। গল্প তার কাছে জীবনের উৎস, লেখালিখি করা তার নেশা। সৃষ্টি করতে চান অসংখ্য জীবনের গল্প, ভবঘুরের গল্প, কখনো আবার ফুটিয়ে তুলতে চান একজন যাযাবরের গল্পও। গল্পকার কিংবা লেখক পরিচয়ের পাশে যোগ করতে চান আরও পরিচয়। সকল পরিচয়ের ঊর্ধ্বে যে লোকে বলে উঠবেন, ‘সাকিব হাসান রুয়েল একজন ভালো মানুষ।’ ‘শ্রাবণ সন্ধ্যা’ লেখকের তৃতীয় বই। দ্বিতীয় বইয়ের নাম ‘মায়া’ এবং প্রথম বইটি ছিল ‘অনুভূতিরা মৃত’।