আঠারো মার্চ থেকে সাধারণ ছুটি চলছে বাংলাদেশে। অবসরে বই পড়ার অভ্যাস ছিল আমার। তারাশঙ্করের উপন্যাস পড়ছিলাম। পড়া শেষ করে আশপাশের দিকে চোখ রাখলাম। চেনা পরিবেশে এক অচেনা আতঙ্ক বিরাজ করছে। সব কিছু স্বাভাবিক, তবু মনে জাগছে কিছু অস্বাভাবিক প্রশ্ন : কী ছিল? কী হচ্ছে? কী হবে? সাধারণ মানুষের স্বাভাবিক চলাফেরা আর মহামারী সময় এই দুইয়ের ভাবনাগুলো লেখা শুরু করলাম। লেখা শুরুর আগে লেখার শিরোনাম দিয়েছি 'লকডাউন'। ডায়েরির মতো তথ্যমূলক বর্ননা লিখতে গিয়ে মনে হয়েছে উপন্যাসের একটা কাঠামো দাঁড়িয়ে গেছে। ‘ দিবারাত্রি’ শিরোনামে উপন্যাস লেখা হয়ে গেলো। পরে নাম পরিবর্তন করে রেখেছি "টিক্ টিক্"। "টিক্ টিক্" হচ্ছে ঘড়ির কাঁটার শব্দ। যা সময় পরিক্রমাকে নির্দেশ করে। "টিক্ টিক্" উপন্যাসের কেন্দ্রিয় চরিত্র কোনো নির্দিষ্ট ব্যক্তি নয়। মহামারীর এই সময় অতিবাহিত করা সব মানুষ। তাই এর কেন্দ্রবিন্দু সময়। ও হ্যাঁ, এই নামের প্রস্তাবনা দিয়েছে এই উপন্যাসের প্রথম পাঠক শিরিন সাথী। উপন্যাস লিখতে গিয়ে মনে হয়েছে এটা একটা খেলা। ছোট্ট মেয়েশিশু যেমন খেলনা পুতুল নিয়ে খেলাঘরে খেলা করে, আমিও তেমন খেলছি। চরিত্রগুলো কখনো আনন্দ পাচ্ছে, কখনো দুঃখ পাচ্ছে। এই আনন্দ, দুঃখ আমার দেয়া রূপ। আমি কোথা থেকে রূপ দিলাম? বাস্তব চরিত্রের থেকে রূপ নিয়ে দিয়েছি। একটু একটু লিখেছি, একটু করে আনন্দ উপভোগ করেছি। পাঠক কতটা উপভোগ করবে সেটা তারা পড়ার পর হয়তো বলতে পারবে। গ্রামের পটভূমি হওয়ায় গ্রাম যাদের নাড়ির টান, তারা গভীর উপলব্ধির সুযোগ পাবে। আঞ্চলিক ভাষা ব্যবহারের কারণে অন্য অঞ্চলের মানুষ বুঝতে পারবে কি না এ বিষয়ক দ্বন্দ্ব কাজ করছে মনে। সময় ও সুযোগ কম থাকায় টীকা যুক্ত করতে পারিনি। টীকা যোগ করলে যে কেউ পড়তে পারতো। সুযোগ পেলে ভবিষ্যতে এ কাজটা করবো। নাটক সিনেমায় নোয়াখালীর আঞ্চলিক ভাষা এতোটাই জনপ্রিয় যে আশা করি খুব একটা অসুবিধা হবে না। তারপরেও কারো অসুবিধা হলে পরবর্তী সংস্করণে তা দূর করবো ইনশাআল্লাহ!