লেখক পরিচিতি লেখক, কবি, সাহিত্যিক, ঔপন্যাসিক ও অনুবাদক। বর্তমানে অনুবাদ কর্মই তাঁর একমাত্র পেশা এবং উপন্যাস রচনায়ও মনোনিবেশ করেছেন।
ফ্ল্যাপে লেখা কথা মৌরী রহমান তিরিশ বছর বয়সে তাঁর প্রথম স্বামী ও প্রথম প্রেমিক মিথুন আহমেদকে ডিভোর্স করে যার হাত ধরে ঘর ছাড়ে সেই জাবেদ ইকবাল হল একজন প্রতারক, ব্যভিচারী ও খুনি। কিন্তু ঘর ছাড়ার সময় মৌরী তা জানত না, যদিও সে জাবেদের প্ররোচনায় মিথুনের বাচ্চাকে গর্ভপাত করায় তাকে ডিভোর্স দেবার জন্য। আর এই জাবেদ ইকবালের বয়স তখন ষাট বছর এবং মৌরীর বয়সী পুত্রকন্যাও ছিল তার। কিন্তু বিয়ের এক বছর যেতে না যেতেই জাবেদের সমস্ত মিথ্যাচার ফাঁস হয়ে যায় এবং রাতের পর রাত যখন সে যুবতী মৌরীর যৌনাকাঙ্ক্ষা মেটাতে ব্যর্থ হয় তখন মডেলিং পেশায় জড়িয়ে পড়া মৌরীও ব্যভিচারী হয়ে ওঠে এবং তার ব্যভিচারের ফসল হল তার কন্যা মোনা, যাকে সে বেদনার ভেতরে ধারণ করেছিল গণমৈথুনাকালে এবং মৌরীও জানে না মোনার পিতা কে?
মোনা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়া সময় প্রেমে পড়ে মিথুন আহমেদের যদিও মিথুন জানে না মোনা মৌরীর কন্যা। মোনাও জানে না মিথুন আহমেদই তার মায়ের প্রথম স্বামী। যে অসমবয়সী প্রেম একসময় মিথুনের সংসার ভেঙে দিয়েছিল সেই অসমবয়সী প্রেম এসে উপস্থিত হয়েছে তার নিজের জীবনে। কী করবে সে এখন? মৌরীর ভূমিকাই বা কী হবে? আসুন দেখি বাস্তব ও অবাস্তবতার মিশ্রণে গড়ে তোলা এই কাহিনীর ভেতর দিয়ে মোস্তফা মীর আমাদেরকে কোথায় নিয়ে যান?
মােস্তফা মীর মূলত কবি। স্বাধীনতা উত্তর বাংলাদেশে যারা প্রথম কবিতা লিখতে শুরু করেন এবং সত্তর দশকে বাংলা কবিতাকে যারা এদেশে জনপ্রিয় করে তােলেন মােস্তফা মীর তাদের অন্যতম। তাঁর জন্ম ১৯৫২ সালে, রাজবাড়ী জেলার বড়লক্ষীপুর গ্রামে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলা ভাষা ও সাহিত্যে তিনি মাষ্টার্স করেছেন ১৯৭৬ সালে। কর্মজীবনে একাধিকবার পেশা বদল করেছেন এবং একটি বেসরকারি সংস্থায় ১৮ বছর যুক্ত ছিলেন সম্পাদনা কর্মের সঙ্গে। আজন্ম উদাসীন ও প্রচার বিমুখ এই কবির কাব্যগ্রন্থের সংখ্যা মাত্র পাঁচটি। পুরো আশির দশকে তিনি কোন লেখালিখিই করেননি। নব্বই দশকের শুরুতে এসে হঠাৎ করেই লেখেন উপন্যাস 'দানববংশ।' মৌলবাদীরা মামলা ঠুকলেও তা ধােপে টেকেনি। তবে গদ্যচর্চার এই ধারাবাহিকতায় লেখেন আরও তিনটি উপন্যাস, ‘ঈশ্বরের ঘ্রান’, ‘কুকুরকুঞ্জ’ এবং তােমাকে চাই'। নব্বই দশকের মাঝামাঝি সময় থেকেই তিনি উপন্যাস রচনার পাশাপাশি অনুবাদ কর্মে হাত দেন এবং গদ্য ও পদ্য মিলে তাঁর অনুবাদ গ্রন্থের সংখ্যা প্রায় ত্রিশ এর অধিক। বর্তমানে অনুবাদ কর্মই তার একমাত্র পেশা এবং তিনি উপন্যাস রচনায়ও মনােনিবেশ করেছেন । তবে প্রায় সময়ই তিনি অসুস্থ থাকেন। কারণ গত এগার বছর যাবৎ তিনি লিভারের অসুখে ভুগছেন। গত বছর প্রকাশিত হয়েছে তার গবেষণাধর্মী গ্রন্থ ‘মিশরীয় পুরাণ'। মােস্তফা মীরের সবচেয়ে আলােচিত গ্রন্থ হচ্ছে ‘আদম ইতিহাসের প্রথম চরিত্র।