লেখক পরিচিতি লেখক, কবি, সাহিত্যিক, ঔপন্যাসিক ও অনুবাদক। বর্তমানে অনুবাদ কর্মই তাঁর একমাত্র পেশা এবং উপন্যাস রচনায়ও মনোনিবেশ করেছেন।
ফ্ল্যাপে লিখা কথা ফুল ও ফলের পাহাড়ের ওপর দিয়ে বাতাস প্রবাহিত হলে স্বর্ণ ও পৃথিবীর যৌথ উদ্যোগে পাথরের ডিম ফেটে জন্ম নেয় এক স্বর্গীয় বানর-সান উকং। এই বানর পাহাড়ে বসতি স্থাপন করে এবং বানরদের রাজা হয়। তারপর সে রাজ্য পরিত্যাগ করে বেড়িয়ে পড়ে তার চরিত্র পরিশুদ্ধ করার পাশাপাশি অমরত্বের পথ অনুসন্ধান করতে। একসময় সে অমরত্ব অর্জন করে ফিরে আসে কিন্তু পৃথিবীর বিভিন্ন অঞ্চলের রাজারা ঈর্ষাকাতর হয়ে তার নামে স্বর্গের জাদ সম্রাটের কাছে অভিযোগ করলে সম্রাট নির্দেশ দেয় সান উকংকে গ্রেফতার করতে। তারপর সে দুবার আমন্ত্রিত হয়ে স্বর্গে যায় এবং দুবারই সে স্বর্গ থেকে পালিয়ে আসে। স্বর্গের সম্রাট তাতে ত্রুদ্ধ হয় এবং যুদ্ধ ঘোষণা করে। শুরু হয় স্বর্গের ঈশ্বরদের সঙ্গে ফুল ও ফলের পাহাড়ের সুদর্শন বানর রাজার ভয়াবহ যুদ্ধ।
রোমাঞ্চকর অভিযান ও যুদ্ধাভিযানের এই কাহিনী শুধু কিশোর নয় প্রাপ্তবয়স্করাও উপভোগ করবেন। গ্রন্থের পাতায় পাতায় রয়েছে জাদুবিদ্যর ব্যবহার, অতিলৌকিক ঘটনা, সমুদ্র ও দেশ-মহাদেশ পেরিয়ে যাওয়ার বিস্ময়কর অভিযান, অসম্ভবকে সম্ভব করে তোলার জন্য কল্পনাশক্তির চূড়ান্ত ব্যবহার এবং একই সঙ্গে তৈরি করা হয়েছে হাস্যরস।
এটা হল সুদর্শন বানর রাজার জন্ম, বেড়ে ওঠা, অমর প্রাণীতে পরিণত হওয়া, স্বর্গযাত্রা, প্রতারিত হওয়া এবং স্বর্গ ও পৃথিবীর যুদ্ধের এক শ্বাসরুদ্ধকর কাহিনী।
মােস্তফা মীর মূলত কবি। স্বাধীনতা উত্তর বাংলাদেশে যারা প্রথম কবিতা লিখতে শুরু করেন এবং সত্তর দশকে বাংলা কবিতাকে যারা এদেশে জনপ্রিয় করে তােলেন মােস্তফা মীর তাদের অন্যতম। তাঁর জন্ম ১৯৫২ সালে, রাজবাড়ী জেলার বড়লক্ষীপুর গ্রামে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলা ভাষা ও সাহিত্যে তিনি মাষ্টার্স করেছেন ১৯৭৬ সালে। কর্মজীবনে একাধিকবার পেশা বদল করেছেন এবং একটি বেসরকারি সংস্থায় ১৮ বছর যুক্ত ছিলেন সম্পাদনা কর্মের সঙ্গে। আজন্ম উদাসীন ও প্রচার বিমুখ এই কবির কাব্যগ্রন্থের সংখ্যা মাত্র পাঁচটি। পুরো আশির দশকে তিনি কোন লেখালিখিই করেননি। নব্বই দশকের শুরুতে এসে হঠাৎ করেই লেখেন উপন্যাস 'দানববংশ।' মৌলবাদীরা মামলা ঠুকলেও তা ধােপে টেকেনি। তবে গদ্যচর্চার এই ধারাবাহিকতায় লেখেন আরও তিনটি উপন্যাস, ‘ঈশ্বরের ঘ্রান’, ‘কুকুরকুঞ্জ’ এবং তােমাকে চাই'। নব্বই দশকের মাঝামাঝি সময় থেকেই তিনি উপন্যাস রচনার পাশাপাশি অনুবাদ কর্মে হাত দেন এবং গদ্য ও পদ্য মিলে তাঁর অনুবাদ গ্রন্থের সংখ্যা প্রায় ত্রিশ এর অধিক। বর্তমানে অনুবাদ কর্মই তার একমাত্র পেশা এবং তিনি উপন্যাস রচনায়ও মনােনিবেশ করেছেন । তবে প্রায় সময়ই তিনি অসুস্থ থাকেন। কারণ গত এগার বছর যাবৎ তিনি লিভারের অসুখে ভুগছেন। গত বছর প্রকাশিত হয়েছে তার গবেষণাধর্মী গ্রন্থ ‘মিশরীয় পুরাণ'। মােস্তফা মীরের সবচেয়ে আলােচিত গ্রন্থ হচ্ছে ‘আদম ইতিহাসের প্রথম চরিত্র।