অপরাধপ্রবণতা মানুষের মাঝে চিরন্তন। কখনও জেনেবুঝে, আবার কখনও রাগের মাথায় মানুষ অপরাধ করে ফেলে। ডিটেকটিভ অলোকেশ রয়ের অপরাধ তদন্তের নির্দিষ্ট কিছু দস্তুর রয়েছে। তিনি জানেন, আগুন না থাকলে সেখানে ধোঁয়া উঠবে না। যেকোনো অপরাধের পেছনে মোটিভ থাকে। কিন্তু পুরানা পল্টনের ফানি টাওয়ারে আজিজ নামের যে অধ্যাপক খুন হলেন, সেটা মূলত একটা কানা-কেস ছিল, যাকে বলে ব্লাইন্ড লেন। তাই ‘জিরো মোটিভ’ ধরেই সামনে হাঁটেন তিনি। বিপত্মীক আজিজের একলা জীবনে মেয়ে রাবেয়া মরুদ্যানের মতোই ছিল। অথচ কেসের তদন্ত করতে গিয়ে মনে হয় সন্দেহের সব তির যেনো রাবেয়ার দিকেই ইশারা করছে! বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী রুহির কথাই ধরা যাক। ভর সন্ধ্যেবেলায় মৌচাক মার্কেটের পেছরে এক বহুতল ভবনের ছাদ থেকে নিচে ঝাঁপায় সে। কিন্তু তার পার্স, মোবাইল ও স্যান্ডেল পাওয়া যায় বেশ খানিকটা দূরে। পুলিশ মূলত ত্রিভূজ প্রেমের উপর দায় চাপালেও অলোকেশের অনুমান কেসটা মোটেও প্রেমঘটিত নয়, অন্যকিছু। তারপর ধরুন যশোরের গোপিসেন গ্রামে জোড়াখুনের কেস- খালিচোখে আত্মহত্যা বলে মনে হয়। দুটো লাশ ঘরের আড়ার সাথে ঝুলছে। কেসের ক্যামেরা ট্রায়ালও একপ্রকার হয়ে গেছে। নুরু মিঞা আর জুলির মৃত্যুটা যে ভয়ংকর এক লালসার ফসল- তা প্রমাণ করতে সক্ষম হন তিনি। শুধু একটা ছোট্ট প্রমাণ- একটা পেতলের দাঁত। খুনের কারণ, ধরন ও ‘মোডাস অপারেন্ডি’ পর্যালোচনায় প্রমাণ হয়, পারফেক্ট ক্রাইম ইজ ওনলি অ্যা মিথ। ভুল তদন্ত অনেক সময় অপরাধের পথটাকে আরো প্রশস্ত করে দেয়। অপরাধীকে প্রত্যয়ী করে তোলে। ঘটনার আড়ালে যে গল্পটা লুকিয়ে থাকে, সেখানে আলো ফেলতেই বেশি আগ্রহী ডিটেকটিভ অলোকেশ রয়।