লেখক পরিচিতি লেখক, কবি, সাহিত্যিক, ঔপন্যাসিক ও অনুবাদক। বর্তমানে অনুবাদ কর্মই তাঁর একমাত্র পেশা এবং উপন্যাস রচনায়ও মনোনিবেশ করেছেন।
ফ্ল্যাপে লিখা কথা ‘.... ধিক্কার দাও তাদেরকে যারা এই সমাজের পচনের ওপর দাঁড়িয়ে উল্লাস প্রকাশ করছে। ঘৃণা করো তাদের কর্মকাণ্ডকে যারা সাধু ও শয়তানের মতো জমজ ভাই এবং তাদের পিতা হলেন দুর্নীতিপরায়ণ সেই রাজা যে সাঙ্গেপাঙ্গ নিয়ে দেশকে নিজে সম্পদশালী হওয়ার যন্ত্রে পরিণত করেছিল .. ‘
‘.... যারা সত্য ও সৌন্দর্য অনুসরণ করেছিল তাদেরকে হত্যা করা হয়েছে। এখন মানুষ কাকে অনুসরণ করবে? আমলারা সৌন্দর্যের কথা বলে না, কিন্তু তারা বোকার ভূমিকায় সবচেয়ে শক্তিশালী হয়ে উঠতে চায়, অর্জন করতে চায় বিচক্ষণতা, যা তারা বিসর্জন দিয়েছিল যৌবনের শুরুতে, কিন্তু লালসার লালা তারা সংবরণ করতে পারে না অর্থ ও নারীর ঘ্রাণ পেলে। তোমরা কি সততা ও নীতি-নৈতিকতার অভিধানটি পুড়িয়ে ফেলছ ... ‘
‘... সৎ ও অসৎ হল জমজ ভাই। তাই তারা পরস্পরের প্রতি শত্রুর মতো আচরণ করে থাকে। কারণ অসৎ-এর জন্ম হয়েছিল সৎ-এর পরে এবং তার মাতা ন্যায়পরায়ণতা খুব কষ্ট পেয়েছিলেন তার জন্মের সময়। তাই সে সবসময়ে মানুষের দুর্ভোগের কারণ .. ‘
‘... হ্যাঁ, আমি জাতিকে একটা স্বপ্ন দেখাতে চাই- দুর্নীতিমুক্ত ও সৎ মানুষের পৃথিবী তৈরির জন্য স্বপ্ন দেখবে যে জাতির মানুষ এবং সেই স্বপ্ন অনুসরণ করবে একটি নিকে, সেই দন অনুসরণ করবে রাত্রিকে, রাত্রি অনুসরণ করবে আরেকটি দিনকে এবং তা চলতে থাকবে প্রজন্মের পর প্রজন্ম, প্রয়োজনে অনন্তকাল পর্যন্ত .. ‘
মােস্তফা মীর মূলত কবি। স্বাধীনতা উত্তর বাংলাদেশে যারা প্রথম কবিতা লিখতে শুরু করেন এবং সত্তর দশকে বাংলা কবিতাকে যারা এদেশে জনপ্রিয় করে তােলেন মােস্তফা মীর তাদের অন্যতম। তাঁর জন্ম ১৯৫২ সালে, রাজবাড়ী জেলার বড়লক্ষীপুর গ্রামে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলা ভাষা ও সাহিত্যে তিনি মাষ্টার্স করেছেন ১৯৭৬ সালে। কর্মজীবনে একাধিকবার পেশা বদল করেছেন এবং একটি বেসরকারি সংস্থায় ১৮ বছর যুক্ত ছিলেন সম্পাদনা কর্মের সঙ্গে। আজন্ম উদাসীন ও প্রচার বিমুখ এই কবির কাব্যগ্রন্থের সংখ্যা মাত্র পাঁচটি। পুরো আশির দশকে তিনি কোন লেখালিখিই করেননি। নব্বই দশকের শুরুতে এসে হঠাৎ করেই লেখেন উপন্যাস 'দানববংশ।' মৌলবাদীরা মামলা ঠুকলেও তা ধােপে টেকেনি। তবে গদ্যচর্চার এই ধারাবাহিকতায় লেখেন আরও তিনটি উপন্যাস, ‘ঈশ্বরের ঘ্রান’, ‘কুকুরকুঞ্জ’ এবং তােমাকে চাই'। নব্বই দশকের মাঝামাঝি সময় থেকেই তিনি উপন্যাস রচনার পাশাপাশি অনুবাদ কর্মে হাত দেন এবং গদ্য ও পদ্য মিলে তাঁর অনুবাদ গ্রন্থের সংখ্যা প্রায় ত্রিশ এর অধিক। বর্তমানে অনুবাদ কর্মই তার একমাত্র পেশা এবং তিনি উপন্যাস রচনায়ও মনােনিবেশ করেছেন । তবে প্রায় সময়ই তিনি অসুস্থ থাকেন। কারণ গত এগার বছর যাবৎ তিনি লিভারের অসুখে ভুগছেন। গত বছর প্রকাশিত হয়েছে তার গবেষণাধর্মী গ্রন্থ ‘মিশরীয় পুরাণ'। মােস্তফা মীরের সবচেয়ে আলােচিত গ্রন্থ হচ্ছে ‘আদম ইতিহাসের প্রথম চরিত্র।