গ্রামের অজপাড়া গাঁয়ের শালুক-শালা কুড়ানো ছোটখাটো গড়নের শ্যামল বর্ণের ডানাগুটে এক বালক। দারিদ্র্যের কঠিন কশাঘাতের মাঝে বড় হওয়া ছেলেটি উঠে দাঁড়াতে চায়। সামনে এগিয়ে যেতে চায়। আকাশসমান স্বপ্নের পেছনে ছুটেচলা এক ক্লান্তিহীন তরুণ। প্রেম কখনো কখনো তাঁর জীবনে দ্যুতি ছড়িয়েছে; কিন্তু ধরা দেয়নি। বিবেকহীন সমাজের কর্তাব্যক্তিরা প্রতিটি স্তরে স্তরে তাকে অন্যায়ভাবে বঞ্চিত করেছে। হৃদয়ের রক্তক্ষরণ কাউকে বোঝাতে ব্যর্থ হয়ে এক সময় হতাশ হয়ে পড়ে। কিন্তু পরক্ষণেই জীবনের গতি খুঁজে পায়। কারো করুণা নিয়ে কিংবা অনর্থক কেঁদে নয়; বরং আত্মবিশ্বাস ও অধ্যবসায়ের মাধ্যমে সে তার দিগন্তছোঁয়া লক্ষ্যে পৌছতে চায়। ঘুণেধরা ক্ষয়িষ্ণু সমাজে কীভাবে নানা বাধা অতিক্রম করে, অদম্য মনোবল নিয়ে এগোতে হয়—তারই এক জ্বলন্ত সাক্ষী এই হোঁচট খাওয়া তরুণ। নীরবে নিভৃতে সয়ে যাওয়া কষ্টগুলো মেলে ধরেছে শাপলার পাপড়ির মতো। তাঁর এই নিজস্ব দুঃখগুলো মিশে একাকার হয়ে যায় সমাজের হাজারো বঞ্চিত মেধাবীর হাহাকারের সঙ্গে। শহরের চাকচিক্য ছেড়ে গ্রামের শ্যামল ছায়ার মাটির ঘরে বসে জোছনার আলোর সঙ্গে সখ্য গড়ে তুলতে চায়। বেলিফুল আর গোলাপের গন্ধ গায়ে মেখে ঘুমিয়ে থাকতে চায় অনন্তকাল ধরে।