লিডারশিপ এন্ড মোটিভেশন বই সম্পর্কে লেখকের মন্তব্যঃ মানুষ সামাজিক জীব হিসাবে একটি সমাজে তাকে বসবাস করতে হয়, মিশতে হয় অনেক মানুষের সাথে। অনেক সময় বিভিন্ন ভাবে নেতৃত্ব প্রদান করতে হয়। আর নেতৃত্ব এমন একটি বিষয় যার প্রয়োজনীয়তা ব্যক্তি, সামজ, রাজনীতি বা কর্মজীবনে সর্বত্র পরিলক্ষিত হয়। ঠিক এ কারণেই নেতৃত্ব প্রদানে জানা দরকার বিভিন্ন কলা-কৌশল সম্পর্কে। অন্যদিকে নেতৃত্বের সাথে প্রেষণা ওতপ্রতভাবে জড়িত। সুষ্ঠ ও সঠিক ভাবে নেতৃত্ব প্রদানে মোটিভেশন বা প্রেষণার কোনো বিকল্প নেই। কারণ যোগ্য নেতা হতে হলে নিজেকে ও দলের অনুসারীদের সর্বদা অনুপ্রাণিত, উৎসাহিত ও প্রাণবন্ত রাখতে হয়। যা আপনি বই পড়ার মাধ্যেমে সহজে রপ্ত করতে পারবেন। এখন আপনার মনে প্রশ্ন আসতে পারে আমরা প্রচুর বই পড়ি তবে সেগুলির বেশিরভাগটি ভুলে যাই। তাহলে বই পড়ে লাভ কী? বিষয়টি আরও সহজভাবে উপস্থাপনের জন্য একটি গল্প বলি, কোনো একসময় এক মহান গুরু ছিলেন এবং তাঁর কাছে অধ্যয়নরত অনেক শিষ্য ছিল। একদিন এক শিষ্য তাঁর গুরুর কাছে এসে জিজ্ঞেস করলো, "গুরুজি, আমি তো অনেক বই পড়েছি কিন্তু তার অধিকাংশই আজ বিস্মৃত। যা পড়েছি তা যদি এমন বিস্মরণ-ই হয় তাহলে বই পড়ে লাভটা কী হল?" গুরুজি সেই সময় কোনো প্রত্যুত্তর দিলেন না; মৌনতা অবলম্বন করে রইলেন। কিছুদিন পর গুরুজি তার ঐ শিষ্যকে কাছে ডেকে হাতে একটি নোংরা এবং জরাজীর্ণ ছাঁকুনী (চালুনী) ধরিয়ে দিল এবং বলল, "বৎস, এই ছাঁকুনীটা দিয়ে ঐ পাশের নদী থেকে জল নিয়ে এস" কথাটা তাঁর মনঃপুত হল না কিন্তু গুরুজিকে তো অসম্মানও করা যায় না। তাই আর কোনো প্রশ্ন করলো না। শিষ্য নদীতে গেল, ছাঁকুনী ভরে নদী থেকে জল নিল এবং আশ্রমের উদ্দেশ্যে যাত্রা করল। কিন্তু দু'পা না এগোতেই ছাঁকুনীর সব জল ছিদ্র দিয়ে পড়ে গেল। তারপন আবার নদীতে গেল এবং ছাঁকুনী ভরে জল নিল। এভাবে শিষ্যটি সারাদিন চেষ্টা করলো তাঁর গুরুজির আদেশ মান্য করার কিন্তু ব্যর্থ হল। দুঃখভারাক্রান্ত মন নিয়ে শিষ্য তাঁর গুরুর কাছে এসে বলল, "গুরুজি, আমি ঐ ছাঁকুনী দিয়ে নদী থেকে জল নিয়ে আসতে পারিনি। আমি ব্যর্থ হয়েছি" গুরুজি তাঁর শিষ্যের দিকে তাকিয়ে মৃদু হেসে বলল, “না, বৎস। তুমি ব্যর্থ হওনি। ছাঁকুনীটার দিকে একবার তাকাও”, "ছাঁকুনী নতুনের মতো হয়ে গেছে; আগের মত নোংরা এবং জরাজীর্ণ অবস্থা নেই। তুমি যখন এই নোংরা ছাঁকুনীটা দিয়ে বার বার জল নিয়ে যাবার চেষ্টা করছিলে তখন এটা পরিষ্কার হয়ে গেছে”। তখন গুরুজি তার শিষ্যের কাছে এই এমন উদ্ভট কাজের প্রকৃত উদ্দেশ্য ব্যাখ্যা করলেন। তিনি বললেন, "কিছুদিন আগে তুমি আমাকে প্রশ্ন করেছিলে-যা পড়েছি তা যদি মনেই না রাখতে পারি তাহলে পড়ে লাভটা কি। এখন এই ছাঁকুনীর উদাহরণটাই মনে করো, ছাঁকুনী = মন জল = জ্ঞান নদী = বই পড়ে যদি মনেও না রাখতে পার তারপরও কোনো ব্যাপার না। কিন্তু বই পড়লে তোমার মন অবশ্যই প্রতিনিয়ত তীক্ষ্ণ এবং শাণিত হবে। আজ পর্যন্ত আপনি যত বই পড়ছেন। আপনার সবকিছু হয়তো মনে নেই। কিন্তু আমি এটা বলতে পারি যে, এখনকার আপনি আর আগের আপনির মধ্যে অনেক তফাৎ রয়েছে। এটি সম্ভব হয়েছে, আপনার বই পড়ার মাধ্যমে।
বীমা ব্যক্তিত্ব মো. মাহমুদুল ইসলাম পেশা হিসেবে বেছে নিয়েছেন বীমা শিল্পকে। তাঁর মনন, মেধা, শ্রম ও দক্ষতা পুরোপুরি নিয়োগ করেছেন বীমা খাতের উন্নয়নের কাজে। তিনি একাধারে একজন জ্ঞানপিপাসু এবং জ্ঞান বিতরণকারী। তাছাড়াও তিনি একজন পুস্তক রচয়িতা, প্রশিক্ষক এবং অনুষ্ঠান উপস্থাপক। তিনি নিরবচ্ছিন্ন এবং নিরলসভাবে বীমাখাতের উন্নয়ন ও জনপ্রিয়তা বৃদ্ধির জন্যে কাজ করে যাচ্ছেন। জনাব মাহমুদুল ইসলাম দেশের স্বনামধন্য জীবন বীমা প্রতিষ্ঠানে, প্রশিক্ষণ ও গবেষণা বিভাগীয় প্রধান হিসেবে কর্মরত আছেন। প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষায় বিবিএস (অনার্স), এমবিএস (ম্যানেজমেন্ট) বিষয়ে তিনি কৃতিত্বের সঙ্গে উত্তীর্ণ হন। এরপর হিউম্যান রিসোর্স ম্যানেজমেন্ট বিষয়ে পোস্ট গ্র্যাজুয়েশন ডিপ্লোমা এবং এলএলবি ডিগ্রি অর্জন করেন। লেখকের জন্ম জয়পুরহাট জেলার পাঁচবিবি উপজেলায়। তিনি এক পুত্র ও এক কন্যা সন্তানের জনক। ব্যক্তিজীবনে নিরহংকারী, সদা হাস্যজ্জল ও অত্যন্ত সুখী একজন মানুষ।