সাধারণত কোনো বিষয়ের উপর নতুন কোনো তথ্য দিতে না পারলে বা পাঠকদের ভাবনার জগতে নতুন করে করাঘাত করতে না পারলে সেই বিষয়ের উপর আমি লেখালেখি করি না। আমার প্রথম গ্রন্থ 'আরজ আলির রম্য' যারা পড়েছেন তারা হয়তো বিষয়টি লক্ষ্য করেছেন। বইটি প্রকাশ হওয়ার আগেও নাস্তিকদের প্রশ্নের যৌক্তিক জবাব দিয়ে অনেক বিজ্ঞ লেখকদের অনেক ভালো ভালো বই বাজারে ছিলো। তার পরেও ক্ষুদ্র লেখক হয়েও আমি 'আরজ আলির রম্য' প্রকাশের উদ্যোগ নেই। কারণ বইটিতে নাস্তিকদের প্রশ্নের জবাবে পাঠকদের জন্য নতুন কিছু ধারণা ছিলো। ছিলো নতুন চিন্তার খোরাক। 'তাদের আয়নায় আমাদের প্রতিচ্ছবি' বইয়ের মুল উপাদান সাহাবায়ে কেরামদের (রা:) জীবনী। এখন প্রশ্ন জাগতে পারে, সাহাবয়ে কেরামদের জীবনী নিয়ে আমরা অনেক ভালো মানের বই তো আগেও পড়েছি, বাজারে এই বিষয়ে ভালো মানের অনেক অনেক বই আছে, তাহলে আবার কেনো? আসলে আমার মনে হয়েছে এই বইয়ে আমি এমন কিছু তুলে ধরতে পেরেছি যা পাঠকদেরকে সাহাবায়ে কেরামদের জীবনী নিয়ে নতুন করে ভাববার খোরক জোগাবে। আমাদের মধ্য থেকে যারা সচেতন এবং আগ্রহী তারা ইসলামকে জানার তাগিদে ইতিপূর্বে হয়তো অনেক সাহাবীদের (রা) জীবনী পড়েছি। তাদের ঈমানদীপ্ত কাহিনী গুলো আমাদের হৃদয়কে আন্দলিত করেছে। আমাদের চক্ষু শিতল করেছে। ইসলামের জন্য তাদের ত্যাগ, সংগ্রাম, একনিষ্ঠতা আামাদের বার বার অবাক করে দিয়েছে। আল্লাহ্ তাআলার প্রতি তাদের বিশ্বাস, ভরসা, ভয়, ভালোবাসা আমাদের বিবেকের দরজায় সময়ে সময়ে করাঘাত করেছে। এসবকিছুর পরেও তাদের জীবনী থেকে খুব বেশী কিছু আমরা আমাদের দৈনন্দিন জীবনে বাস্তবায়ন করতে পারিনি। এর পিছনের কারণ হচ্ছে, সেই সাড়ে চৌদ্দশত বছর আগের প্রেক্ষাপটে সাহাবায়ে কেরামদের (রা) জীবনের নানান দিক আমরা এই আধুনিক সময়ে আমাদের জীবনের সাথে মিলাতে পারিনি। 'তাদের আয়নায় আমাদের প্রতিচ্ছবি' বইয়ের মূল উদ্দেশ্যে এখানেই। এই বইয়ে আমরা দেখবো কিভাবে সাহাবায়ে কেরাম (রা)দের জীবনী থেকে নেয়া শিক্ষা আমারা আমাদের দৈনন্দিন জীবনে প্রয়োগ করতে পারি তার কিছু নমুনা।