নবীজননী মা আমেনা বইটির অনুবাদক সালাহউদ্দীন জাহাঙ্গীর বলেন— ‘নবীজির (সা.) জীবনী পড়ার সময় বারবার অনুধাবন করেছি—নবীজি ছিলেন একজন সর্বাঙ্গীন মানবিক মানুষ। মানুষের জন্য তাঁর ভালোবাসা ছিল বাঁধভাঙা, প্লাবনের ঢলের মতো ভালোবাসতেন তিনি মানুষকে। আমি যখন নবীজির সঙ্গে তাঁর স্ত্রীদের প্রেমময় সম্পর্কগুলো পড়ি, নারীর প্রতি তাঁর সম্মান-ভালোবাসা দেখি, শিশুদের তিনি কেমন করে আদর করতেন, ৬৩ বছরের এক অসম্ভব সুন্দর জীবনে তিনি একবারের জন্যও কাউকে গালি দেননি; এই কোমল হৃদয়ের মানুষটির কথা ভেবে চোখের কোণ ভিজে উঠে। এই যে মানবিক একজন মানুষ, মানুষের ভালোবাসায় কাটত যাঁর দিন-রাতের প্রতিটি মুহূর্ত, সমগ্র পৃথিবীর জন্য যিনি ভালোবাসার বারতা নিয়ে ভূমিষ্ঠ হয়েছিলেন, সেই মানুষটির কি তার মায়ের কথা মনে পড়ত না? হঠাৎ কোনো রাতে ঘুম ভেঙে মায়ের জন্য কি তাঁর মন কেঁদে উঠত না? পৃথিবীতে আগমনের আগে হারিয়েছিলেন বাবাকে, মা যখন মারা যান তখন তাঁর বয়স মাত্র ছয় বছর; মায়ের কোনো স্মৃতি কি তাঁর মনে পড়ত? ছোট্টবেলায় হাত বুলিয়ে দেয়া মায়ের আদরগুলো কি অনুভব করতে পারতেন? মায়ের চুমুর পরশ কি তখনও তাঁর গালে লেগে ছিল যখন উহুদ প্রান্তরে বর্শার আঘাতে গলগল করে রক্ত ঝরছিল মুখ দিয়ে? মায়ের প্রতি ভালোবাসা সৃষ্টির স্বাভাবিক প্রবণতা। আর আমাদের নবীজি তো ছিলেন ভালোবাসার আধার, তাঁর অন্তরে মায়ের স্মৃতি কেমন করে বেজে উঠত—আমরা কেবল সেটা অনুধাবনই করতে পারি।’ উম্মুর রাসুল মুহাম্মদ : আমিনা বিনতে ওয়াহাব বইটি রচনা করেছেন মিশরের প্রবাদপ্রতীম নারীলেখক ড. আয়েশা বিনতে আবদুর রহমান আশ-শাতি। নবীজননীকে যে ভালোবাসায় তিনি এঁকেছেন কাগজের অক্ষরে, এর আগে আর কেউ এভাবে অঙ্কিত করতে পারেনি তাঁর অবয়ব। হাদিস ও সিরাতের সূত্রে এক পরিপূর্ণ আমিনাকে তিনি তুলে এনেছেন পাঠকের দৃষ্টির আঙিনায়। এ বইটিরই বঙ্গানুবাদ নবীজননী মা আমেনা। নন্দিত লেখক সালাহউদ্দীন জাহাঙ্গীর-এর দ্বিতীয় অনূদিত গ্রন্থ এটি। মূলত সিরাত ও নবীজননীর প্রতি ভালোবাসাই তাঁকে গ্রন্থটি অনুবাদে উৎসাহী করে তুলেছিল। আশা করি বইপাঠে পাঠকমাত্রই অনুভব করবেন মাতৃপ্রেমের এক অতল আধার।