কবিতা দূর অন্বেষণ, স্পর্শহীন-কায়াহীন সত্তা এক। ‘কবি’ হিসেবে পরিচয় দানে গোলাম শফিক-এর সীমাহীন দোলাচল, এ প্রবণতায় লুকোচুরি খেলা চলে নিরন্তর। প্রথম কবিতার বই আত্মপ্রকাশ করে আটত্রিশ বছরের পুঞ্জীভূত কবিতা নিয়ে। অতঃপর ভাবা হয়েছিল আর বেরুবে না কাব্য কোনো। বাকি জীবনে আটত্রিশ বছর তো বাঁচবেন না নিশ্চয়। কিন্তু এ যেন লাজ ভঙ্গের মতো। প্রতি বছরই তাই একটি করে কবিতার বই আলোর মুখ দেখে। এবারই প্রথম বের হচ্ছে বছরে একজোড়া কাব্যগ্রন্থ। এ অবদান অণুজীব করোনার। অদৃশ্য হলেও এর শক্তি কী প্রবল, আমাদের গালে হাত দিয়ে ঘরে বসে থাকতে বাধ্য করেছিল। তবে দুহাত তো আর গালে ওঠে না, একহাত খালি পেয়ে উঠে এসেছিল কলম-পেনসিল। একটি অকাট্য পর্যবেক্ষণ দাঁড়াল যে, বন্দি ও পড়ন্ত জীবনে মানসপটে বিশ্বপরিম-ল যেমন ভাস্বর হয়, তেমনি মানুষ চলে যায় দূর অতীতে। শৈশব-কৈশোরের মণি-মাণিক্যকে নিংড়ে এনে সেসব উদ্যাপন করে। লেখনীতেও অনেক বিস্মৃত ঘটনা, নিসর্গের খ-িত-অখ- চিত্র, লোকালয়ের আঞ্চলিক ভাষা কেমন করে উঠে আসে! আঞ্চলিক ভাষা যে কবিতার পঙ্ক্তি নির্মাণ, চিত্রকল্প তৈরিতে দারুণভাবে খেলে যায়, কখনো অপরিহার্য হয়Ñ এ এক বোধোদয়ের নাম। বারবারই ভেবেছেন, কবিতা যেভাবে খেলতে চায়, তারে খেলতে দাও।
জন্ম : ১ মার্চ ১৯৬১ সরিষাপুর, (বাজিতপুর, কিশােরগঞ্জ)। পরিবার : পিতা আবদুল গণি, মাতা উম্মুল খায়ের ফাতেমা, স্ত্রী ইসরাত জাহান, কন্যা মাহা নাশিতা মৃত্তিকা, পুত্র অন্দ্রি মনন। শিক্ষা : দুটো বিষয়ে স্নাতকোত্তর, লােক প্রশাসন এবং আন্তর্জাতিক সম্পর্ক ও রাজনৈতিক অর্থনীতি। বর্তমানে Intellectual Property Rights' বিষয়ের উপর পিএইচ.ডি গবেষণারত। পেশা : সিভিল সার্ভিস। গ্রন্থ : নাটক 'শিলারি’ (সাহিত্য বিলাস), ‘ভূমধ্যসাগর’ (কিসসা কাহিনী), নাট্য বিষয়ক ‘নাট্যকথন' (সাহিত্য বিলাস), প্রবন্ধ ‘সুলুক সন্ধান (পাঠসূত্র), গল্পগ্রন্থ ‘টিটিকাকা ও অন্যান্য গল্প’ (নালন্দা), আকাশগঙ্গা’ (গন্তব্য প্রকাশনী), ‘শঙ্খমানবী' (ঐতিহ্য), ভ্রমণ ‘চেঙ্গিস খানের মঙ্গোলিয়া ও অন্যান্য পরিব্রজন’ (উৎস প্রকাশন), অন্য ভ্রমণ’ (উৎস প্রকাশন), ‘স্বদেশ বৈদেশ’ (আগামী প্রকাশনী), মুক্তিযুদ্ধ যখন স্বাধীনতা অনিবার্য হয়ে পড়ে’ (ঐতিহ্য), কবিতা ‘দূরসম্পর্কের কবিতা’ (আগামী প্রকাশনী), দ্বিভাষিক pot 'A Bluish Night and Other Poems' (অনন্যা), শিশুতােষ ‘কালের ছন্দ’ (সাহিত্য বিলাস) ও নয় শুধু গল্প’ (সাহিত্য বিলাস) পুরস্কার : নাটক রচনার জন্য ডাকসু পুরস্কার (১৯৮৩), বাচসাস পুরস্কার (২০০৫), সুকুমার রায় সাহিত্য পদক (২০০৭), গবেষণাকর্মের জন্য অ্যাওয়ার্ড ফর আউটস্ট্যান্ডিং থিসিস (২০০২, দক্ষিণ কোরিয়া), নাট্যাভিনয়ের জন্য যৌথভাবে জাপানের উচিমুরা প্রাইজ (২০০৮) এবং কোমে হিয়াপ্পিয়াে অ্যাওয়ার্ড (২০১২)।