বাংলাদেশের জাতীয় মুক্তিসংগ্রাম, বাংলাদেশের কবিতা। মুক্তিসংগ্রামের পটভূমি। গত মহাযুদ্ধের পর থেকে দেশে দেশে জাতীয় মুক্তিসংগ্রামের তিনটি বিশিষ্ট পর্যায় দেখা যায়, ১. ঔপনিবেশিক দেশগুলোতে সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে জনগণের মিলিত প্রতিরোধ ও সংগ্রাম এবং বহুসংখ্যক দেশের স্বাধীনতা-লাভ; ২. ইতিপূর্বে স্বাধীনতা প্রাপ্ত দেশগুলোতে জনগণের নতুন সংগ্রাম- এ-সংগ্রামের মূল কথা জাতীয় স্বাধীনতা, শান্তি, প্রগতি ও নিরাপত্তার জন্য সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে নবতর জেহাদ এবং এ-ধরনের সব ক্ষেত্রেই নব্য স্বাধীনতা-লব্ধ দেশগুলোর সরকারসমূহ নিজ নিজ জনগণের বিরুদ্ধেই সাম্রাজ্যবাদের সঙ্গে কখনো গোপন ও কখনো প্রকাশ্যভাবে আঁতাত তৈরি করে জনগণকে শোষণ করে এবং ৩. সংখ্যালঘু শ্বেতচর্মধারীর হাতে ক্ষমতা অর্পণ করে সাম্রাজ্যবাদের নয়া রাজনীতির আড়ালে আশ্রয় গ্রহণ, যেমনটি করা হয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকায় ও রোডেশিয়ায়। পাকিস্তান দ্বিতীয় শ্রেণীর রাষ্ট্রগুলোর অন্তর্ভুক্ত। ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদ ভারতীয় ধনিক-বণিক-ভূস্বামী এবং অভিজাত বুর্জোয়া মুসলিমদের সংগঠন মুসলিম লীগকে গর্ভস্থ সন্তানের মত লালন করে এবং এই প্রতিষ্ঠানটির দাবি অনুযায়ী ভারতবর্ষকে বিভক্ত করে আর পত্তন করে পাকিস্তান নামক নতুন রাষ্ট্রের। মুসলিম লীগের শ্রেণীচরিত্র ছিল সামন্তবাদী- নবাবজাদা, পীরজাদা, সাহেবজাদা, সৈয়দজাদা, খাঁসাহেব, প্রভৃতি ভূস্বামী-গোষ্ঠীর ব্যক্তিগত প্রতিষ্ঠানটি সঙ্গত কারণেই রাষ্ট্র ক্ষমতা দখল করে হিংস্র হায়েনার মত জনগণের রক্ত পান করতে থাকে।