'নামহীন ডাকপিয়ন' নামটি বড়ো বড়ো করে কবিতার নিচে লিখে দিলো। শিরোনাম সবাই ওপরে লেখে, কিন্তু কেন যেন আর বাকি পাঁচজনের মতো সে নয় । তার চিন্তা ধারা ব্যতিক্রম। . এবার কবির নাম লেখার পালা। সাত পাঁচ ভেবে নিজের নামটা লিখল- লাভ। লাভ নামটা খুবই অদ্ভুত। এটা অবশ্যই একটা ইংরেজি শব্দ বলা চলে।বাংলাতে যাকে বলে ভালোবাসা, হিন্দিতে যাকে বলে পেয়ার, আর মহব্বত, এটা হয়তো আরবি শব্দ । ভালো নাম- আবেদিতা রহমান লাভ। . নিজের নামটা লিখে আবার কলম দিয়ে একের পর এক দাগিয়ে চলেছে। কাটতে চাইছে নামটা। তার নামের পেছনে আছে একটা বৃহৎ অর্থ । . আবেগ রিদিতা= আবেদিতা। বীজগণিতের সমীকরণের মতো বাবা ও মায়ের নামের মিশ্রণে তার নাম। আর 'লাভ' হলো তার ডাকনাম। . সবাই বলে সে তার মা-বাবার ভালোবাসার প্রতীক। এজন্য হয়তো তার এই নাম। মায়ের মতো মুখের গড়ন, আর বাবার মতো ফর্সা-শ্যামলা গায়ের রঙ। . যেখানে না আছে দুঃসময়ে দুজন দুজনের পাশে থাকার প্রতিশ্রুতি, না আছে কিছু কষ্টকর সত্যকে মেনে নিয়ে জীবনে এগিয়ে চলার প্রেরণা ।এর নাম কখনোই ভালোবাসা হতে পারে না। এটা ভালোবাসা শব্দটার ঘোর অপমান। টুকরো টুকরো অনুভূতিগুলোর উপর করা অবিচার। . মুখ দিয়ে এসব বিড়বিড় করতে করতে নিজের নাম কাটছে সে।পারলে জীবন থেকেই নামটা মুছে ফেলত। নাম দিত- অনুভূতির ধোঁকা! এটা কোনো নাম হিসেবে খাটে না, কিন্তু এটাই যেন তার জীবনের সবচেয়ে কঠিন সত্য। . বাইশ বছরের এই তরুণীর বুকে ভালোবাসা শব্দটা নিয়েই হাজারো জল্পনা-কল্পনা। যদিও তার মনেও কারোর জন্য সেই সুপ্ত অনুভূতি আছে। কিন্তু তবুও সে ভেবে যায়, 'আচ্ছা, বাবাই যদি মামনিকে ভালোই বাসতো, তাহলে দ্বিতীয় বিয়ে কীভাবে করল?' . লাভ ঘৃণা করে, খুব ঘৃণা করে তার জন্মদাতা পিতা আবেগ রহমানকে।...