প্রতিটি জাতির সমৃদ্ধ ও গৌরবের একটা বিষয় থাকে। বাঙালী হিসেবে আমাদের এমন একটা সম্পদ রয়েছে। যা একেবারেই আমাদের নিজস্ব, যা খুব সমৃদ্ধ এবং ঐতিহাসিকভাবে ঋদ্ধ। এটার জন্য আমরা অনায়াসে গর্ব করতে পারি। বলায় যায় এটাই আমাদের শেকড় এবং আমাদের লোকসাহিত্যই আমাদের মৌলিক পরিচয় বহন করে। নতুন প্রজন্মের কাছে আমাদের লোকসাহিত্যের গরিমা তুলে ধরার প্রয়াস এই বই। এখানে আমাদের লোকসাহিত্যের বিভিন্ন শাখা নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। এগুলো কিভাবে আমাদের জীবনের গভীর থেকে এসেছে তা দেখানো হয়েছে। লোকসাহিত্যের অন্যান্য শাখার সাখে লোকক্রীড়াকে বিশেষভাবে তুলে ধরা হয়েছে। ১১২ পৃষ্ঠা। ৭ ফর্মা। ১৮টি অধ্যায় সাথে রয়েছে বাংলাদেশ থেকে প্রকাশিত লোকসাহিত্য বিষয়ক বইয়ের একটি তালিকা। ২৫ হাজার শব্দ। পড়তে সময় লাগবে ২ ঘন্টার মতো। ভ্রমণে পড়ার জন্য একটি অনন্য প্রকাশনা। রচনাগুলোর শব্দচয়ন বেশ উন্নত। লোকসাহিত্য বিষয়ক বই হলেও অনুসঙ্গ নির্বাচনে বেশ বৈচিত্র রয়েছে। এখানে নৃতত্ব, মুভি রিভিউ, খেলার পান্ডুলিপি ইত্যাদি মজার বিষয় রয়েছে। কিছু মৌলিক রচনা রয়েছে যেগুলোতে নতুন নতুন তথ্য উঠে এসেছে। আবার গতানুগতিক বিষয়সমূহকে দৃষ্টান্ত ও উপমায় নতুনভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে।
অস্টম শ্রেণী ছাত্র থাকা অবস্থায় তার লেখা জাতীয় পত্রিকায় প্রকাশিত হয়। ছাত্রজীবন থেকে তিনি লেখালেখি, বিতর্কসহ বিভিন্ন বিষয়ে বহু পুরষ্কার পেয়ে আসছেন। দেশের প্রায় সব পত্রিকায় তার লেখা প্রকাশিত হয়েছে। প্রথমে রম্য লিখলেও পরে তিনি জীবনমুখী লেখনীতে মনোনিবেশ করেন। এযাবত বিভিন্ন পত্রিকা ও অনলাইনে তার হাজারের বেশী লেখা রয়েছে। এগুলো আত্মগঠন, ব্যবসা বাণিজ্য, পর্যটন ও লোকসাহিত্য নিয়ে। বিষয় বস্তুর নির্বাচন ও নিজস্ব বর্ণনাভঙ্গি তাকে ‘‘জীবনমুখী লেখক’’ হিসেবে পরিচিতি দিয়েছে। মজা করে লিখতে পারেন বলে তার লেখা পাঠক শুরু থেকে শেষ অবধি পাঠ করেন। তার লেখায় থাকে গল্পময়তার ছাপ। বাংলাভাষায় কর্মাশিয়াল কনটেন্ট লেখনিতে তিনি একজন পথিকৃত। অনলাইনে তার ই-কমার্স ও আত্ম উন্নয়নমুলক লেখাসমূহ পাঠকের প্রশংসা কুড়িয়েছে। বিভিন্ন সামাজিক কর্মকান্ডেও রয়েছে তার সরব উপস্থিতি। ২০১৬ সালে পায়ে হেঁটে তেঁতুলিয়া থেকে টেকনাফ ভ্রমণ করেন। ৪৬ দিনে ১১৭৬ কিলোমিটারের এই পদযাত্রা নিয়ে রচনা করেন অন্যরকম ভ্রমণকাহিনী ‘‘দেখব বাংলাদেশ গড় বাংলাদেশ’’। ২০১৭ সালে তিনি দৈনিক বাংলাদেশ প্রতিদিন এর বিবেচনায় দেশের ৪০ জন প্রশংসিত ব্যক্তির একজন নির্বাচিত হন। ২০১৯ সালে দেশের প্রথম ই-কমার্স সামিটে তিনি দেশ সেরা ই-কমার্স কনটেন্ট রাইটার পুরষ্কার জিতেন।
বাংলাদেশের বাস্তব প্রেক্ষাপটে লেখা তার আত্ম -উন্নয়নমূলক লেখনী তরুনদের উপলব্দির জায়গায় স্পর্শ করে। তার বিভিন্ন লেখায় অনলাইনে পাঠকের উচ্চসিত মতামত সেকথাই বলে।
একসময় রাখালী নামে একটি লোকসাহিত্যের ছোট কাগজ সম্পাদনা করতেন। লেখাপড়া করেছেন ফেনী, কুমিল্লা, চট্টগ্রাম ও ঢাকায়। জাহাঙ্গীর আলম শোভনের জন্ম ফেনী জেলার দাগনভূঁঞা উপজেলায় মামাবাড়িতে। পৈত্রিক নিবাস নোয়াখালী জেলার কোম্পানীগঞ্জ উপজেলায়। এখানেই কাটান শৈশব কৈশর। বর্তমান স্থায়ী নিবার ফেনী জেলায় হলেও কিন্তু কর্মসূত্রে তিনি ঢাকায় বসবাস করেন। জাহাঙ্গীর আলম শোভনের বাবা একজন অসবরপ্রাপ্ত সরকারী চাকুরে আর মা গৃহিনী।