বইটি আমার করা প্রথম ভাষান্তর। এই বইটি নিয়ে কেন কাজ করতে আগ্রহী হই, সে কারণটি আমি মনে করি পাঠকগণ জানতে পারেন। হয়তো আমার দৃষ্টিভঙ্গির সাথে কোনো কোনো পাঠকের চিন্তা বা মতের মিল হয়েও যেতে পারে। ব্রায়ান ট্রেসির লিখিত অনেকগুলো বেস্ট সেলার বইয়ের মধ্যে ইট দ্যাট ফ্রগ! একটি। মূল কারণটি সেটা নয়। আমি যখন বইটি প্রথমবার পড়ি, তখন মনে হয়েছিল, বাংলাদেশের পাঠকশ্রেণির জন্য বিশেষত কর্পোরেটমহলের জন্য এই বইয়ের প্রত্যেক অধ্যায় গুরুত্বপূর্ণ। আর টাইম ম্যনেজমেন্ট নিয়ে আর কোনো লেখকের বই অতটা নজর কাড়েনি। বইটি একাধারে ছাত্র হতে শুরু করে যে-কোনো শ্রেণি-পেশার মানুষের অনুপ্রেরণার উৎস হতে পারে। সবচেয়ে বড়ো কথা হলো, এই বইয়ে যে ২১টি টেকনিক বর্ণনা করা হয়েছে, সেগুলো যদি কেউ তার কর্মজীবনে প্রয়োগ করতে পারেন, তবে তা হবে নিঃসন্দেহে অসাধারণ। আর এই জায়গাতেই একজন ভারষান্তরকারীর সফলতা। বইটি ভাষান্তরের ক্ষেত্রে আমি কিছুটা আক্ষরিক অনুবাদের বৃত্ত ভেঙে অপেক্ষাকৃত সহজসরল শব্দ ও বাক্য ব্যবহার করার চেষ্টা করেছি, যাতে পাঠকের কাছে বিষয়গুলো প্রাঞ্জল হয়। সর্বোপরি, বইটি যদি কারো এতটুকু উপকারে আসে, নিজেকে সার্থক বলে মনে করব। ক্যাপ্টেন মোঃ ফজলে রাব্বী (অব.)
ব্রায়ান ট্রেসি একজন কানাডিয়ান-আমেরিকান বক্তা এবং আত্মোন্নয়নমূলক রচনা লেখক। তিনি 'ব্রায়ান ট্রেসি ইন্টারন্যাশনাল' নামক সংস্থার চেয়ারম্যান এবং প্রধান নির্বাহী। এই সংস্থার মূল উদ্দেশ্য হলো ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের প্রশিক্ষণ ও বিকাশে সহযোগিতা এবং সার্বিক উন্নয়নে কাউন্সেলিং সেবা প্রদান করা। ব্রায়ান ট্রেসি নেতৃত্ব, ব্যক্তিত্ব, আত্মসম্মান, লক্ষ্য, কৌশল, সৃজনশীলতা এবং সাফল্য- মনোবিজ্ঞানের এই শাখাগুলোর তাৎপর্য অনুধাবনের মাধ্যমে অনুপ্রাণিত করার কোচ হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছেন। জনপ্রিয় এই বক্তার জন্ম কানাডার প্রিন্স এডওয়ার্ড আইল্যান্ডে, তারিখটা ১৯৪৪ সালের ৫ জানুয়ারি। পড়াশোনা করেছেন ইউনিভার্সিটি অব আলবার্টা থেকে। ১৯৮৪ সালে কানাডার ভ্যানকুভারে তিনি 'ব্রায়ান ট্রেসি ইন্টারন্যাশনাল' প্রতিষ্ঠা করেন। তার ৪০ বছরের বেশি কর্মজীবনে তিনি প্রায় ১,০০০ এরও বেশি প্রতিষ্ঠানকে কাউন্সেলিং সেবা দিয়েছেন, এবং প্রায় পঞ্চাশ লক্ষ মানুষের সামনে বক্তব্য রেখেছেন। কানাডা, আমেরিকার বাইরেও প্রায় ৭০টি দেশে তার প্রচারিত আলোচনা অনুষ্ঠানের সংখ্যা ৫ হাজার ছাড়িয়েছে। ব্রায়ান ট্রেসি এর বই এবং তার আলোচনার ভিডিও ও অডিও ক্লিপ সারা বিশ্বের কর্পোরেট ও ব্যক্তিপর্যায়ের উদ্যোক্তা তরুণদের কাছে বিপুল জনপ্রিয়তা লাভ করেছে। তিনি বিশ্বব্যাপী প্রচারিত ও বিক্রিত ' সাইকোলজি অব এচিভমেন্ট'সহ প্রায় ৫০০টিরও বেশি অডিও ও ভিডিও প্রোগ্রাম তৈরি ও প্রযোজনা করেছেন, যা ২৮টিরও বেশি ভাষায় অনূদিত হয়েছে। বিশ্বব্যাপী সমাদৃত ব্রায়ান ট্রেসি এর বই সমগ্র হলো 'দ্য ২১ সাকসেস সিক্রেটস অব সেল্ফ মেইড মিলিওনিয়ারস', 'টাইম ম্যানেজমেন্ট', 'ইট দ্যাট ফ্রগ!', 'চেঞ্জ ইয়োর থিংকিং চেঞ্জ ইয়োর লাইফ', 'লিডারশিপ', 'কিস দ্যাট ফ্রগ', 'নো এক্সকিউজ : দ্য পাওয়ার অব সেল্ফ ডিসিপ্লিন' ইত্যাদি। ট্রেসির লেখা বইগুলো তার অনুপ্রেরণা জোগানো বক্তব্যগুলোর মতই আকর্ষণীয় ও শিক্ষণীয়। কর্পোরেট ম্যানেজমেন্টের জগতে আত্মোন্নয়নমূলক পন্থা বাতলে তরুণদের কাছে ব্রায়ান ট্রেসি এর বই সমূহ বেশ জনপ্রিয়তা লাভ করেছে।