শিশু-কিশোরদের বই পড়ার চাইতে ছবি দেখা ও গল্প শোনার দিকে ঝোঁক বেশি। বর্তমান সময়ের শিশু-কিশোররা মোবাইল গেইম ও নানা রকম কার্টুন দেখতেই আগ্রহী থাকে বেশি। এ রকম পরিস্থিতে এদের বইমুখি করাটা খুবই জরুরি। বইমুখি তো আর এমনি এমনি করা যায় না! এর জন্য দরকার শিশু-কিশোর উপযোগী লেখা বই। কিন্তু আফসোসের বিষয় হচ্ছে, তেমন লেখা বা লেখক আমাদের শিশুসাহিত্যে হাতে গোনা! যেকোনো জাতির শিশুসাহিত্য যত সমৃদ্ধ হয় সে জাতি মেধা-বুদ্ধি-জ্ঞান-বিজ্ঞানে হয় অগ্রগামী। ‘বিড়ালছানা কিটকি’ রকিবুল ইসলামের লেখা একটি গল্পের বই। রকিবুল ইসলাম একজন প্রতিশ্রুতিশীল একজন লেখক। তার ছড়া, গল্প দীর্ঘদিন বিভিন্ন পত্র পত্রিকায় প্রকাশিত হয়ে আসছে। এতে করে যে তার একটি বিশ্বস্ত পাঠকশ্রেণী তৈরি হয়েছে সে কথা বলা যায় তার লেখার দক্ষতা ও বিষয়ের গভীরতা দেখলে। ষোল পৃষ্ঠার ক্রাউন সাইজের এ বইটিতে রয়েছে চারটি গল্প। গল্পগুলো হল- জলিল মামার ঈদসেলামি, বিড়ালছানা কিটকি, বনের রাজা ইঁদুর ও সূর্যমুখী সূর্য হতে চেয়েছিল। বইটির নামকরণ করা হয়েছে দ্বিতীয় গল্পটির নামানুসারে। পশু-পাখির সাথে শৈশবে কৈশোরে সবারই কমবেশি একটা সখ্য তৈরি হয়। বিশেষ করে গৃহপালিত পশু যেমন- হাঁস, মুরগি, গরু, কুকুর কিংবা বিড়াল। এ গল্পের বিড়ালটির নাম কিটকি। বিহাম এ বিড়ালছানাকে নিয়ে খেলাধুলা করে, সময় কাটায়। কিন্তু একদিন বিহামের মা-বাবা বিড়ালছানাটি বাড়ি থেকে দূরে রেখে আসে। বিড়ালের শোকে বিহাম অসুস্থ হয়ে পড়ে।এ কারণে চিকিৎকের পরামর্শে বিড়ালছানাটিকে আবার ফিরিয়ে আনা হয়। বিড়াল আর বিহামের মিলনের মধ্য দিয়ে তৈরি এক আনন্দঘন মুহূর্ত। শিশুমন বুঝে লেখা খুব সহজ কাজ নয়। ভারী শব্দ, দীর্ঘ বাক্য গল্পগুলোর মধ্যে নেই। সবার পড়ার গতি কিংবা বোঝার ক্ষমতাও এক নয়। শিশুরা গল্প পড়তে বসে যাবে কিছুতেই বিরক্ত না হয় সে দিকে খুব সচেতন ছিলেন রকিবুল ইসলাম। গল্পগুলোর সাথে রয়েছে দৃষ্টিনন্দন অলংকরণ। শিশু-কিশোরের মনোযোগ আকর্ষণে ও গল্পপাঠের আগ্রহ তৈরিতে এ বইটি হতে পারে যথোপযুক্ত।