“শহরটা সত্যিই ভয় ধরিয়ে দিচ্ছে কাজী সাহেবকে, যেন ভূতেরই শহর। শহর ভূত বা কবি যার দখলেই যাক সবচেয়ে ভয়ংকর চেহারাটা নেয়; ভূতের দখলে গেলে শহরবাসীর জন্য ভয়ংকর, কবির দখলে গেলে নেতাদের জন্য।” কবির কাছে যা প্রেমিকা, পুঁজিপতির কাছে তা পণ্য। কবির কাছে যা প্রত্নতত্ত্ব, পেটি-বুর্জোয়ার কাছে তা আবর্জনা। কবির কাছে যা বিপ্লব, ডানপন্থীর কাছে তা অশ্লীলতা। কবির কাছে যা ধর্ম, বামপন্থীর কাছে তা মেয়াদোত্তীর্ণ। কবির কাছে যা ইতিহাস, গোঁড়াপন্থীর কাছে তা অপচয়। প্রেমিকা-প্রত্নতত্ত্ব-বিপ্লব-ধর্ম-ইতিহাসকে কবিতায় ভরে কবি যখন নেতার মুখোমুখি, কবিতা তখন নেতার কাছে কী? এই উপন্যাসের আখ্যানে এক রাজনৈতিক নেতা এবং এক কবির গল্প বলা হয়েছে যারা অপরাজনীতি এবং উগ্রসাংস্কৃতিক চর্চার মাঝে ‘একা’। পরিস্থিতির প্রেক্ষিতে নেতাকে কবির খোঁজে বের হতে হয় এবং এই যাত্রাপথে সে শেকড়চ্যুত রাজনৈতিক-সাংস্কৃতিক দশার নানারকম স্তরের মুখোমুখি হয়। এই একেকটা স্তরে উঠে এসেছে একেকটা স্বতন্ত্র উপাখ্যান, স্বতন্ত্র কিছু চরিত্র। প্রাসঙ্গিক এসব উপাখ্যান, তার সাথে জড়িত বিভিন্ন চরিত্র নিয়ে একজন কবির খোঁজে একজন রাজনৈতিক নেতার যাত্রাপথের ওপর বিস্তৃত হয়েছে এই উপন্যাসের অবয়ব।
আহসান কবীর। জন্ম উত্তরের কুড়িগ্রাম জেলার ভূরুঙ্গামারী উপজেলায়। উত্তর-দক্ষিণ মিলে বেড়ে ওঠার একাংশ কুড়িগ্রামে, আরেক অংশ খুলনায়। প্রথম উপন্যাস ‘অরুণিমা (২০২১)’, ‘উজানঘড়ি (২০২৩)’ তার দ্বিতীয় উপন্যাস।