একই সাথে সমান অনুভবে দুটি মেয়েকে কি ভালোবাসা সম্ভব? দিনাজপুরের বিখ্যাত কুয়াশার মতো বিন্তি এসে দাঁড়িয়েছিল ছেলেটির সামনে—ঝাপসা, এলোমেলো আর শীতে আক্রান্ত জবুথবু মন নিয়ে। যে ভ্রুসন্ধিতে পরতো মিহি একটা কালো টিপ আর বুকে জড়াতো হলুদ সরিষা খেতের মতো ওড়না। ছেলেটি সবসময় চেয়েছে দুর্বোধ্য কুয়াশাকে হাত দিয়ে সরিয়ে আসল বিন্তিকে উদ্ধার করতে। কিন্তু যতই সে বিন্তিকে জানতে চেষ্টা করেছে ততই সে ডুবে যেতে থাকে এক গভীর খাদে। নিজেকে বাঁচাতে স্বার্থপরের মতো রিথির হাত ধরে ছেলেটি। রিথি ওর পশমের মতো কালো শরীরের দীপ্তিময়তায় ছেলেটির সমস্ত কষ্টময় স্মৃতিকে ধুয়ে মুছে ফেলতে চায়। কিন্তু রিথি কি তা পারবে? যদি সে না পারে তার বাড়িয়ে দেওয়া উষ্ণ হাতটির কী হবে? অপরদিকে একই সাথে দুটি মেয়েকে বুকে ধারণ করে পথ চলা, অনুভবের স্বতন্ত্র অলিগলিতে দুটি মেয়েকে আলাদা আলাদা জায়গা দেওয়া, দুটি শরীরের ভিন্নমাত্রার গন্ধ, ভালোবাসার প্রকরণ, ভিন্ন প্রকার যৌনতার অভিব্যক্তি—পরস্পর পরস্পরের সাথে এমনভাবে মিশে যায় যে সেই তৃতীয়মাত্রার অনুভূতির সাথে ছেলেটি অভ্যস্ত হয়ে যায়। যেন এক ঘোরতর নিবিষ্টতা, অপার্থিব এক নিমজ্জন! যৌবনের শুরুর এই সিদ্ধান্তগুলো, বয়সের তুলনায় অধিকতর জটিল মানবিক সম্পর্ক, সেগুলোর মিথষ্ক্রিয়া, হাতছানী দিয়ে ডাকা যৌনতা, বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়াশোনা এবং নিঃসঙ্গতার কষ্ট—সবকিছু অদ্ভুত দক্ষতায় ও কাব্যিক বয়ানে চিত্রিত হয়েছে “উড়ে যাওয়ার দিন” উপন্যাসে।