৭১’র স্পন্দন--এ রয়েছে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে নানা ধরনের কবিতা। প্রথমতঃ বলাবহুল্য ১৯৭১ এবং আমাদের মুক্তিসংগ্রাম বিষয়ে, দ্বিতীয়তঃ নারী-বিষয়ে ও তৃতীয়তঃ আত্মজিজ্ঞাসামূলক। এর বাইরেও প্রেমসহ নানা বিষয়ে একাধিক কবিতা আছে ৭১’র স্পন্দন-এ। বিষয়ের বৈচিত্র্য ৭১’র স্পন্দন-এর অন্যতম বৈশিষ্ট্য। বলার অপেক্ষা রাখে না, আমাদের স্বাধীনতা এবং মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ে অঙ্গীকার ও আবেগ এই কাব্যগ্রন্থে তীব্রভাবে ফুটে উঠেছে। ‘স্বাধীনতা তুমি কার’-এর মতো কবিতায় তা সুস্পষ্ট। রুদ্র মুহম্মদ শহিদুল্লাহর মতো একই কবিতা-শিরোনাম ব্যবহার করলেও কবি শামীমা সুলতানার ‘বাতাসে লাশের গন্ধ’ কবিতার দ্যোতনা ভিন্নতর। ৭১’র স্পন্দন কাব্যগ্রন্থে নারীদের সম্পর্কে সামাজিক সচেতনতা বড ভাস্বর। তাই কবিতায় আসছে নুসরাত, আসছে সুবর্ণচরের ঘটনা। আত্মজিজ্ঞাসার কবিতাগুলো পাঠক হৃদয়ে নাড়া দেবে। ‘বদলে গেছি আমি’ কিংবা ‘খুঁজে বেড়াই আমি’ সে ঘরানার কবিতা। ৭১’র স্পন্দন কাব্যগ্রন্থে খুঁজে পাওয়া যায় সেই স্বাদ যেমনটি আছে জীবনানন্দ দাশ ও সুফিয়া কামালের কবিতায়। জীবনানন্দের কবিতায় বরিশালের যে নিসর্গ শোভার ছবি আমরা পাই, সেই রকম চালচিত্র কবি শামীমা সুলতানার কবিতাতেও দেখা যায়। কবি সুফিয়া কামালের কবিতার কোমল পেলবতাও তাঁর কবিতায় লক্ষণীয়। ৭১’র স্পন্দন আমাদের কবিতার জানালা প্রসারিত করেছে। আশা করি, সে বাতায়ন আরও উন্মুক্ত হবে কবির ভবিষ্যৎ কবিতার মাধ্যমে।