মহানরক বইয়ের ‘মহানরক’ কবিতাটি মুক্তছন্দের ৩০০ লাইনের বিশাল কবিতা। কবি সম্ভবত টি এস এলিয়টের ‘The Waste Land” কবিতা থেকে অনুপ্রাণিত। বিশ্বব্যাপী সামাজিক অবক্ষয়, অর্থনৈতিক বিপর্যয়, মূল্যবোধের বিচ্যুতি, মধ্যবিত্ত মানুষের দুর্মর যন্ত্রণা, শিকড় উন্মুলিত যুদ্ধে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের আর্তনাদ ও নৈঃসঙ্গের বেদনার যে উত্তরাধুনিক অংশীদারিত্ব উভয় কবির মধ্যে বিদ্যমান তার প্রকাশ দেখা যায় উভয় কবিতার আখ্যানভাগে। যেমন ‘মহানরক’ কবিতা শুরু হয়েছে এভাবে :
“ভরা বসন্তে না আছে কোথাও ফুলের সুবাস না শোনা যায় কোকিলের মধুর কলরব না ভ্রমরের মনভোলানো গুঞ্জন-সবখানে যতোসব অচেনা-আজব-খুনরেজ কীটের আনাগোনা।”
হাশিম কিয়ামের সম্ভাব্য গন্তব্য বিশ্ববিবেকের কাছে। এক উঠোন রোদের জন্য তিনি রোদন করেছেন, তথাকথিত মুক্তি নয়, মানুষ নিজের মতো করে মুক্তি পাক, এটিই তার প্রত্যাশা, একই সঙ্গে সংশয়ও প্রকাশ করেছেন, আর এখানেই তিনি আধুনিক। তিনি আধুনিকতার অন্তরঙ্গ লক্ষণের সঙ্গে বহিরঙ্গ লক্ষণের অপূর্ব মিলন ঘটিয়েছেন। তার কবিতায় তাপ-জ্বালা-দ্রোহ আছে, তবে কবিতাকে তিনি স্লোগানে পরিণত করেননি। যুগচেতনা ও শিল্পকে তিনি চমৎকারভাবে এক সুতোয় বেঁধেছেন।
হাশিম কিয়ামের জন্ম ২০ এপ্রিল ১৯৭৪ সালে, চুয়াডাঙ্গাল জেলার আলমডাঙ্গা উপজেলার ডাউকি গ্রামে। তার বাবার নাম মোঃ কিয়ামদ্দিন মণ্ডল, মায়ের নাম মোছাঃ রোমেছা বেগম। তিনি কুষ্টিয়া ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজি সাহিত্যে স্নাতক এবং স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন। তিনি বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডারে কর্মরত আছেন।