সংশোধিত ফ্ল্যাপ লিজা ফাহমিদার কবিতার সঙ্গে আমার পরিচয় অনেক দিনের। ছন্দময় এবং অল্প কথায় অনেক কথা বলার বৈশিষ্ট্য তার কবিতা আমার কাছে আলাদাভাবে ধরা দিয়েছে। লিজা ফাহমিদার কবিতার আর একটি বৈশিষ্ট্য হচ্ছে সুরময়তা । আমি সব সময় কবিতায় সুর রচনার চেষ্টা করেছি, কোনও তরুণের কবিতায় এই বৈশিষ্ট্য দেখলে আশাবাদী হয়ে উঠি। কারণ বাংলা কবিতা মূলত গীতিময়। আধুনিকতার নামে আমরা অনেকেই বুঝে না বুঝে দুর্বোধ্যতা রচনা করে ফেলি, যা একালের পাঠককে কবিতা থেকে আরো দূরে সরিয়ে দিয়েছে বলে আমার ধারণা। আধুনিকতা মানে জটিল বাক্য রচনা নয় যা বোধগম্য নয়। আবার এমন তরল পদ্যও কবিতা নয় যা পাঠককে আবিষ্কারের আনন্দ দেয় না। আর সেজন্যই সহজ ভঙ্গিতে গভীর কথা বলতে পারাটা অতো সহজ নয়। যখন আমি লিজার কবিতায় পড়ি ‘‘সবকিছু নিয়ে রোদে ঘাসে বনে জলের ওপরে জল, মুক্তির কথা বলে দিয়ে যায় পরিযায়ী পাখিদল’’ তখন একই সঙ্গে চার মাত্রার মাত্রাবৃত্ত ছন্দের দোলা যেমন পাই, তেমনি সুরের দোলাচালে ইশারায় বেশ অনুভব করি। এ প্রসঙ্গে আরও একটি কবিতার শরণ নিতে পারি, যেখানে লিজা লিখছেন : ‘‘মেঘের তুমুল বর্ষা নামুক এক টুকরো আকাশ থেকে, আমার জন্য সঙ্গে থাকুক ‘রোদের হাওয়া চতুর্দিকে’। তখন মুগ্ধতা এড়াই কী করে! এরকম ভালোলাগার অনুভূতি লিরিক্যাল ভাষায় লিজা ফাহমিদা এই কাব্যগ্রন্থের পাতায় পাতায় ছড়িয়েছে দিয়েছেন, বয়সে তরুণ এই কবি বিষয়ের বৈচিত্র্যে তার কবিতাকে আরও ব্যঞ্জনাময় করে তুলবেন, এই আমার বিশ্বাস।