নিউ মিডিয়া যোগাযোগ পদ্ধতির, সংস্কৃতি চর্চা ও বিকাশের নতুন ধারা। বর্তমানে ফেসবুকে বা ইউটিউবে পর্যাপ্ত ফোক-কনটেন্টের উপস্থিতি লক্ষ করা যাচ্ছে। পারসোনাল মিডিয়া হিসেবেই নানা শ্রেণির মানুষ বিভিন্ন লোক-উপাদান আপলোড করে দেশের লাখ লাখ মানুষকে দেখার সুযোগ করে দিচ্ছে। প্রযুক্তির কল্যাণে কেন্দ্র আর প্রান্তের ব্যবধান অনেকখানি ঘোচার সুযোগ তৈরি হয়েছে। সমাজের বিভিন্ন শ্রেণির মানুষের মধ্যে সাংস্কৃতিক দূরত্ব হ্রাসে ভূমিকা রাখছে নিউ মিডিয়া। উচ্চবর্গ-নিম্নবর্গনির্বিশেষে সবাইকেই জায়গা করে দিয়েছে। উচ্চবর্গের প্রকাশমাধ্যম হিসেবে শুরু থেকেই প্রচলিত গণমাধ্যমগুলো ছিল। কিন্তু নিম্নবর্গের অথবা লোকশ্রেণির কাছে নিজের একান্ত প্রয়োজনে ব্যবহারযোগ্য এই নিউ মিডিয়া একটি বড় পাওয়া। তাই, ডিজিটাল যুগে নিউ মিডিয়াই হয়ে উঠেছে নিম্নবর্গ বা অপেক্ষাকৃত ক্ষমতাহীনের মূল হাতিয়ার। কাজেই মূলধারার গণমাধ্যমে লোকশ্রেণির চারিত্র্য, বৈশিষ্ট্য ও সংস্কৃতি উপেক্ষিত, অধরা থাকলেও নিউ মিডিয়ায় স্বরূপ প্রকাশ পাচ্ছে। সংস্কৃতির নতুন ক্ষেত্র ও ভাষা তৈরি হয়েছে, নতুন প্রকাশভঙ্গি নির্মাণ করে দিচ্ছে নিউ মিডিয়া। সংস্কৃতির নতুন বৈশিষ্ট্য নির্ধারণে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমকেও গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা না করে উপায় নেই। এসবের পাশাপাশি ‘নিউ মিডিয়া ও ফোকলোর’ গবেষণা গ্রন্থটি লোকায়ত সমাজের সঙ্গে সঙ্গে ভার্চ্যুয়াল সমাজেও ফোকের উপস্থিতি, ফোকলোর গবেষণা ও দৃষ্টিভঙ্গিতে নিঃসন্দেহে নতুনত্ব আনবে এবং প্রথাগত ফোকলোর ভাবনাকে বদলে দেবে।
কথাসাহিত্যিক, প্রাবন্ধিক ও গবেষক। জন্ম ১৯৮৯ সালের ২২ ডিসেম্বর, নোয়াখালীর সুবর্ণচরে। ছোটবেলা কেটেছে চাঁদপুরের কচুয়ায়। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়েছেন বাংলা ভাষা ও সাহিত্যে। তিরোধানের মুসাবিদা [২০১৪], প্রথম গল্পগুচ্ছ পাণ্ডুলিপির জন্য পান জেমকন তরুণ কথাসাহিত্য পুরস্কার। প্রকাশিত গল্পের বই রিসতা [২০১৫], ফারিয়া মুরগির বাচ্চা গলা টিপে টিপে মারে [২০১৬], জ্বাজ্জলিমান জুদা [২০১৭], অনুমেয় উষ্ণ অনুরাগ [২০১৯] ও আগিলা যুগের আয়ু [২০২১]। প্রথম উপন্যাস গোসলের পুকুরসমূহ [২০১৮]। প্রবন্ধ গ্রন্থ ফোকলোরের প্রথম পাঠ [২০১৫], ফোকলোর তত্ত্বপ্রয়োগচরিত [২০২০], লোকছড়া : আখ্যানতত্ত্বের আলোকে [২০২০], নজরুল বিষয়ক সংকলন চর্চার ধরন [২০২০] ও নিউ মিডিয়া ও ফোকলোর [২০২১]। নিয়মিত লিখছেন বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায়। 'ফেসবুকে বাংলাদেশের সাহিত্য : প্রকাশের নতুন মাধ্যম ও চর্চার ধরন' অভিসন্দর্ভের জন্য পিএইচডি ডিগ্রি (২০২১) অর্জন করেছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে।বর্তমানে শিক্ষকতা করছেন জাতীয় কবি কাজী নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ে ফোকলোর বিভাগে।