"সুন্দরবনের জলদস্যুদের জীবনে ফেরার গল্প"বইটির সম্পর্কে প্রকাশকের কিছু কথা: ‘জীবনে ফেরার গল্প আমাদেরকে এমন একটি সময়কালে নিয়ে যায়, যখন সুন্দরবন কেবল সুন্দর ছিল না। বরং বলা যায় ভয়ঙ্কর সুন্দর ছিল। শত শত বছর ধরে সেখানকার প্রান্তিক মানুষের কাছে যেন ছিল আতঙ্কের আরেক নাম। এক দিকে মহাজন আর বড় বড় মাছ ব্যবসায়ীদের দৌরাত্ম্য, অন্যদিকে গহীন বনে দস্যুদের রাজত্ব। এ যেন পানিতে কুমির-ডাঙায় বাঘ অবস্থা। ঠিক এমন একটি পরিস্থিতিতে আমরা দেখতে পাই, কিভাবে এক যুগে কেবল সাংবাদিকতা এবং ব্যক্তিগত প্রচেষ্টায় গােটা একটা অঞ্চলের জীবনযাত্রার গতিপথ বদলে দেওয়া যায়। হ্যা- আমরা মােহসীন-উল হাকিমের কথা বলছি। আমরা চেষ্টা করেছি, এই বইতে তার একলা চলােরে’ সংগ্রামের গল্প তুলে আনতে। যার মধ্য দিয়ে উঠে এসেছে দস্যুদের জীবন, অভ্যন্তরীন অকল্পনীয় সব বাস্তবতার চিত্র। উঠে এসেছে সেখানকার জনজীবনকে কাছ থেকে দেখার সামগ্রিকতা। বইটি দিন রাত পরিশ্রম করে সম্পাদনা করেছেন বাংলাদেশের অনুসন্ধানী সাংবাদিকতার আরেক দিকপাল আবু সুফিয়ান। যার ঘাম না ঝরলে এই বইটি হয়তাে আলাের মুখ দেখতে পেতাে না। এছাড়াও সার্বক্ষণিক প্রত্যেকটি কাজে যে মানুষটি ছায়ার মতাে আমার পাশে থেকেছেন, সমন্বয় করেছেন- তিনি অনুসন্ধানী সাংবাদিক প্রীতম সাহা সুদীপ। চমৎকার একটি প্রচ্ছদ করে দেওয়ার জন্য আলিম খান মজলিশকে কৃতজ্ঞতা জানাতেই হবে। এছাড়াও এই বইটির পেছনে যারা প্রত্যক্ষ এবং পরােক্ষ ভূমিকা রেখেছেন, তাদের সবার প্রতি রইল ভালােবাসা এবং কৃতজ্ঞতা। চোখের পলকে বইটির তৃতীয় মুদ্রণও যে শেষ হয়ে যাবে এটা আমরা ভাবতেও পারিনি। পাঠকদের এই বাধভাঙা ভালােবাসার বিনিময়ে আমাদের কৃতজ্ঞতার শেষ নেই। পাশাপাশি আমাদের দায়িত্বও যে বহুলাংশে বেড়ে গেল সে ব্যাপারে সন্দেহ নেই। কথা দিচ্ছি পাঠকদের প্রতি দায়বদ্ধতার জায়গাটি আমরা নিশ্চিত করার সর্বোচ্চ চেষ্টা জারি রাখবাে। এখানে আর কথা বাড়াতে চাচ্ছি না। বাকি সফরটুকু আমরা বইটির পাতায় পাতায় পাঠকের সাথে শেষ করতে চাই।
সাংবাদিকতায় মােহসীন-উল হাকিমের পদচারণা সেই ২০০০ সাল থেকে। গত দুই দশকে কাজ করেছেন। চ্যানেল আই, এটিএন বাংলা, দেশ টিভি, এটিএন নিউজ, চ্যানেল২৪ এ। বর্তমানে কাজ করছেন যমুনা টিভির বিশেষ প্রতিনিধি হিসেবে। মূলত রাজনৈতিক প্রতিবেদক হলেও প্রান্তিক মানুষ নিয়ে কাজ করে আসছেন শুরু থেকেই। প্রান্তিক দূর দূরান্তের মানুষের জীবনগাঁথা তুলে এনেছেন অত্যন্ত নিষ্ঠার সাথে। তারই অংশ হিসেবে সুন্দরবনে কাজ করছেন দীর্ঘ ১১ বছর ধরে ভবিষ্যতেও একইভাবে কাজ করে যেতে চান তিনি। রাজশাহী ক্যাডেট কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিকের পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অনার্স । ছােটবেলায় নওগাঁর কেভি স্কুলেও পড়েছেন। বাবা বীর মুক্তিযােদ্ধা ও সাবেক সেনা কর্মকর্তা মেজর মাে আব্দুল হাকিম (অব), মা সাহারা হাকিম। সহধর্মিণী নাজ সুলতানা পেশায় একজন স্কুল শিক্ষক। এদেরকে নিয়েই তার পারিবারিক জীবন।