রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর (১৮৬১Ñ১৯৪১) : বাংলা ভাষার সর্বশ্রেষ্ঠ সাহিত্যিক, বটবৃক্ষপ্রতিম বাঙালি কবি, ঔপন্যাসিক, সংগীতস্রষ্টা, নাট্যকার, চিত্রকর, ছোটোগল্পকার, প্রাবন্ধিক, অভিনেতা, নৃত্যশিল্পী, কণ্ঠশিল্পী, দার্শনিক ইত্যাদি। ৫৬টি কাব্য (গান ও কাব্যনাট্য ছাড়া), ৩৮টি নাটক, ১৩টি উপন্যাস, ৩৯টি প্রবন্ধ, নয়টি ভ্রমণকাহিনি, তিনটি আত্মজীবনী, গদ্য ও পদ্য মিলিয়ে নয়টি শিশুসাহিত্য, ১৫৩টি ছোটোগল্প, আড়াই হাজার গানÑ দ্বাত্রিংশ খ-ে ‘রবীন্দ্র-রচনাবলী’তে অন্তর্ভুক্ত। তাছাড়া পত্রসাহিত্য ১৭ খ-ে এবং প্রায় দুই হাজার চিত্র দুই খ-ে পৃথকভাবে প্রকাশিত। তাঁর রচনা বিশ্বের বিভিন্ন ভাষায় অনূদিত। ১৯১৩ খ্রিষ্টাব্দে ‘গীতাঞ্জলি’ কাব্যগ্রন্থের ইংরেজি অনুবাদের জন্য তিনি সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার লাভ করেন। রবীন্দ্রনাথকে নানাভাবে দেখা ও জানার বাসনায় বিভিন্ন সময়ে প্রকাশিত প্রবন্ধ এবং কনিষ্ঠপুত্রকে লেখা পত্রাবলি থেকে নেওয়া দ্রোহী কথাসাহিত্যিক আব্দুর রউফ চৌধুরীর ‘রবীন্দ্রনাথ : চির-নূতনেরে দিল ডাক’ সংকলনটি ‘আদিত্য প্রকাশ’ প্রকাশ করল। লেখক সম্পূর্ণ অনতিক্রান্ত পথের কোণে দাঁড়িয়ে রবীন্দ্রমানসস্বরূপÑ বহুমুখী টানাপোড়েন, বিরহ-রতি-প্রীতি-মিলন, পারিবারিক দ্বন্দ্বসংঘাত, সামাজিক সংকট, রাজনৈতিক জটিলতা, স্বাদেশিক ও আন্তর্জাতিক চিন্তাভাবনা, অতিন্দ্রীয়-অলৌকিক অনুষঙ্গ ইত্যাদিÑ বিশ্লেষণ এবং পূর্বসূরি রবীন্দ্রসাহিত্যের আলোচকদের বস্তুনিষ্ঠ বিচার-গুরুত্ব-অনুসন্ধান-মূল্যায়ন আহরণ নিরূপণে রবীন্দ্রনাথের ধ্যানধারণাকে বিশ্বদর্শনের মর্যাদায় প্রতিষ্ঠিত করা হয়েছে। এই সংকলনটি স্বাধীনচিন্তা, মুক্তবুদ্ধি, স্বতন্ত্র যুক্তির পরিচায়ক। প্রকৃত দৃষ্টিমার্গের অধিকারী। ‘আদিত্য প্রকাশ’-এর এই সংকলনটি সুপ্রকাশনা হিসেবে পাঠকের নান্দনিক ও গবেষণাধর্মী চাহিদা মেটাতে সক্ষম হবে বলে আশাবাদী।
জন্ম : ১লা মার্চ ১৯২৯। মুকিমপুর গ্রাম, হবিগঞ্জ। মৃত্যু : ২৩ ফেব্র“য়ারি ১৯৯৬। স্কাউট ভবন, হবিগঞ্জ সদর। হবিগঞ্জ বৃন্দাবন কলেজে বি.এ শেষ বর্ষ সমাপ্তির পূর্বেই আউশকান্দি উচ্চ ইংরেজি বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা শুরু। ১৯৪৯ খ্রিস্টাব্দে পাকিস্তান বিমান বাহিনীতে যোগদান। ১৯৫১ খ্রিস্টাব্দে সপরিবারে পাকিস্তানে বসবাস শুরু। ১৯৬১ খ্রিস্টাব্দে বিমান বাহিনীর চাকরি থেকে অবসর নিয়ে সপরিবারে দেশে প্রত্যাবর্তন। ১০ জানুয়ারি ১৯৬২ খ্রিস্টাব্দে লন্ডনে পৌঁছানো ও পরে ব্রিটিশ সরকারের এরোপ্লেন গবেষণা কেন্দ্রে স্পেশাল গ্রেডের চাকরিতে যোগদান। ১৯৬৬ থেকে ১৯৭১ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত ক্রমাগত পেশা বদল। ম্যানেজার, ইলেকট্রিক, মিস্টি, ফিটার। ১৯৭২ খ্রিস্টাব্দে ব্রিটিশ সিভিল সার্ভিসে যোগদান। ১৯৭১ খ্রিস্টাব্দ থেকেই তিনি তাঁর বিচিত্র জীবনের অভিজ্ঞতা ও বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে লিখতে শুরু করেন। আবদুর রউফ চৌধুরীর প্রকাশিত ও অপ্রকাশিত অসংখ্য উপন্যাস, ছোটগল্প, প্রবন্ধ, সাহিত্য ও রচনাসম্ভার বাংলা সাহিত্যকে সমৃদ্ধ করেছে।