বৃহৎ বন। সেই বনে বাস করত অহংকারী দাম্ভিক সিংহ। বনে অসংখ্য প্রাণী বাস করত। তারা হলো ইঁদুর, বিড়াল, ব্যাঙ, শিয়াল, হরিণ, খরগোশ, বাঁদর, কাঠবিড়ালি, হাতি, কচ্ছপ, দোয়েল, ময়না, টিয়া, চিল, শকুন, ময়ূর, কোকিল ইত্যাদি। সিংহ একটা গুহায় বাস করত। সেই গুহার আশপাশ দিয়ে ইঁদুরের বড় বড় গর্ত ছিল। সেখানে অনেক ইঁদুর পরিবার নিয়ে বসবাস করত। সিংহ রাতে যখন ঘুমিয়ে পড়ত তখন ইঁদুররা সবাই মিটিং করত; কীভাবে দাম্ভিক, অহংকারী সিংহের অহংকার ভাঙা যায়। দলের মধ্যে এক ইঁদুর বলল, দলনেতা ভাই, আমার মাথায় একটা বুদ্ধি এসেছে। কী বুদ্ধি, ঝটপট বলে ফেল। সিংহ যখন গভীর ঘুমে নিমজ্জিত থাকবে তখন আমরা চুপি চুপি গিয়ে ওর সুন্দর লম্বা লম্বা কেশর কেটে দেব। এতে ওর সৌন্দর্য ক্ষুণ্ন হবে; এতে ওর দম্ভ অহংকার কিছুটা কমবে। সবাই বলল, ঠিক আছে। গভীর রাতে যখন সিংহ গভীর ঘুমে নিমজ্জিত তখন দুষ্টু ইঁদুররা সবাই মিলে সিংহের কেশর কেটে দিল। সকালে ঘুম থেকে উঠে কেশর কাটা দেখে সিংহ রেগে আগুন। সিংহ বনের সব পশুদের ডেকে মিটিং বসাল। সিংহ বলল, এই বনে আমার রাজ্যে থেকে কার এত বড় সাহস আমার কেশর কেটে দিল। কী হলো, তোমরা সবাই চুপ কেন বলো? সবাই বলল, হু...জুর আমরা না দেখে কী করে বলব! সিংহ বলল, তবে আমার মনে হয় এটা ইঁদুরের কাজ; ওর ছোট ছোট দাঁত দিয়ে আমার কেশর কেটে দিয়েছে। ওই আমার গুহার পাশে বসবাস করে। সিংহ বলল, ইঁদুর সত্যি করে বল এ তোর কাজ? ইঁদুর বলল, তা কেন হবে হু...জুর, আমরা অতি ক্ষুদ্র প্রাণী, আপনার মতো বড় প্রাণীর ধারে-কাছে যাওয়ার সাহস আছে আমাদের! তার ওপর আপনি আমাদের বনের রাজা। ঠিক আছে আজ রাতেই প্রমাণ হবে কে আমার কেশর কেটে দিয়ে যায়। বিড়াল মনে মনে বলল, এই সেরেছে, এই কাজের গুরুদায়িত্ব তো এখন মনে হচ্ছে রাজা মহাশয় আমার ওপর চাপাবে; মানে মানে কেটে পড়ি। বিড়াল চুপ করে কেটে পড়ল। শিয়াল বলল, হু...জুর, এই কাজ একমাত্র বিড়াল পারবে; কারণ ইঁদুর আর বিড়ালের সম্পর্ক আদায় কাঁচকলায়। সিংহ বলল, কই বিড়াল?