মুসলিম উম্মাহর প্রত্যেকের মনেই একটি প্রশ্ন—কেন আমরা পরাজিত হচ্ছি? আমরা পরাজিত হচ্ছি, আর আমাদের শত্রুরা বিজয়ী হচ্ছে এবং নেতৃত্ব দিয়ে যাচ্ছে?! আমাদের ভাগ্যে কি এটাই লেখা রয়েছে যে, আমরা ভেড়ার মতো জবাই হতে থাকব, আমাদেরকে গোলামের মতো বন্দী করা হবে এবং আমরা লাঞ্ছনার ঢোক গলাধঃকরণ করতে থাকব আর আমাদের ওপর ইহুদিরা বিজয়ী হবে? জালিমরা আমাদেরকে শাসন করবে?! বিশৃঙ্খলাকারীরা আমাদের বিপ্লবগুলো ছিন্ন-বিচ্ছিন্ন করে দেবে?! আমাদের তাকদিরে কি এটাই লিখিত রয়েছে যে, আমাদেরকে টুকরো টুকরো করে ভক্ষণ করা হবে এবং এক এক সম্প্রদায় করে আমাদেরকে নিঃশেষ করে দেওয়া হবে?!... আসলে আমরা পরাজিত হচ্ছি, আমাদের নিজেদের দোষের কারণেই। আমরা ভুলে গেছি আমাদের সোনালি ইতিহাস! আমাদের পূর্বসূরি মহান বীরপুরুষদের গুণাবলি আজ আমাদের মাঝে বিদ্যমান নেই! আল্লাহর সামনে পরিপূর্ণ আত্মসমর্পণ, মাজলুম উম্মাহর ব্যথায় ব্যথিত হওয়া, দ্বীনকে বিজয়ী করার লক্ষ্যে শাহাদাতের তামান্না নিয়ে ময়দানে ছুটে চলা, ভীরুতা ও কাপুরুষতা ঝেড়ে দ্বীনের প্রতিটি অঙ্গনে উচ্চ হিম্মতের সাথে কর্তব্য পালন...এসব গুণের সমাহার যদি আমাদের মাঝে থাকত, তাহলে আমরা উম্মাহর এমন অবমাননাকর পরিস্থিতি দেখতাম না! বরং উম্মাহর সম্মানজনক ও গৌরবময় জিন্দেগি দেখতাম; আল্লাহর জমিনে আল্লাহর বিধানই পরিপূর্ণরূপে কার্যকর দেখতাম। হ্যাঁ ভাই, আমরা যদি মহান সালাফের গুণে গুণান্বিত হয়ে তাঁদের পথ ধরে সামনে কদম বাড়াই, তবে এটা সুনিশ্চিত আমাদের বিজয় আসবেই। আসুন, হিম্মতকে উঁচু করি—সংকল্পকে দৃঢ় করি। এ আশা নিয়ে সামনে চলি, আমরাই ফিরিয়ে আনব আমাদের সোনালি অতীত... আমরাই গড়ব আগামীর পৃথিবী...।
ড. খালিদ আবু শাদি খালিদ আবু শাদি মিসরের একজন প্রতিভাবান দায়ি ইলাল্লাহ। ১৯৭৩ সালের ১৮ মার্চ গারবিয়াহ প্রদেশের জিফতা নগরীতে তিনি জন্মগ্রহণ করেন। মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পড়াশোনা করেন কুয়েতে। তারপর মিসরের কায়রো ইউনিভার্সিটিতে ফার্মেসি ফ্যাকাল্টি থেকে গ্রাজুয়েশন সম্পন্ন করেন। শৈশব থেকেই তিনি প্রখর মেধা ও অসাধারণ প্রতিভার অধিকারী ছিলেন। কর্মজীবনের একটি বড় সময় তিনি দাওয়াহর কাজে ব্যয় করেন। লেখালেখিকেই তিনি দাওয়াহর মাধ্যম হিসেবে বেছে নেন। তাঁর স্বতন্ত্র রচনাশৈলী আর হৃদয়গ্রাহী উপস্থাপনা সহজেই পাঠকদের নজর কাড়ে। মানুষের হৃদয় ছুঁয়ে যাওয়ার অদ্ভুত এক শক্তি আছে তাঁর কলমে। দাওয়াহ কার্যক্রমের ধারাবাহিকতায় একে একে তিনি উম্মাহকে উপহার দেন ১৪টিরও বেশি মূল্যবান গ্রন্থ। ‘ইয়ানাবিউর রাজা’, ‘মাআন নাসনাউল ফাজরাল কাদিম’, ‘সাফাকাতুন রাবিহা’, ‘লাইলি বাইনাল জান্নাতি ওয়ান নার’, ‘বি-আইয়ি কালবিন নালকাহ’ ইত্যাদি তাঁর উল্লেখযোগ্য রচনা। এ ছাড়াও বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে তাঁর অসংখ্য মূল্যবান প্রবন্ধ। কখনো বক্তৃতাকেও তিনি দাওয়াহর মাধ্যম হিসেবে গ্রহণ করেছেন। তাঁর হৃদয়-নিংড়ানো আহ্বান অসংখ্য পথহারা তরুণকে দ্বীনের পথে উঠে আসার প্রেরণা জুগিয়েছে। আমরা প্রতিভাবান এই দায়ি ইলাল্লাহর দীর্ঘ কর্মময় জীবন কামনা করি।