কবি ও বাচিকশিল্পী তাহ্সিন রেজা বাংলা কাব্য আন্দোলনে এক আজনবি সিন্দাবাদ। 'প্রচ্ছদে নেই' তাঁর প্রথম প্রচেষ্টার সোনালি ফসল। যার প্রতিটি লাইনে লাইনে শোনা যায় উদীয়মান নবীন কপোতের ডানা ঝাপটানোর শব্দ। উড়তে শেখা এক রঙিন প্রজাপতি হাজার রজনীর গল্প। মনে হয় যেন দুখের নোনাজলে সয়লাব হয়ে গেছে 'প্রচ্ছদে নেই' কাব্যগ্রন্থের উপল উপকুল। পাশাপাশি একই সাথে রোমান্টিকতা প্রথিত হয়েছে এর পেলব নাভীমূলে। কবি'র কবিতার সবচেয়ে বড় বৈশিষ্ট- কবিতা নির্মাণে কবি'র নিজেস্ব স্টাইল। যা গতানুগতিক কাব্য বিনির্মাণের ধারা উপেক্ষা করে তাঁকে একজন সাহসী কবি হিসাবে দাড় করিয়ে দিয়েছে। ছন্দবন্ধ এবং গদ্যছন্দ দুই ধারাতেই লিখতে কবি সিদ্ধহস্ত। অন্যদিকে আধুনিক কবিতার যে সকল অনুষঙ্গ বিদ্যমান কবি সে সম্পর্কেও ওয়াকিবহাল। তাই তিনি কবিতায় খুবই সাবলিলভাবে ব্যবহার করেছেন রূপক, উপমা, তুলনা ও অলংকার। কবি লিখেন--- 'প্রচ্ছদে নেই- ভেতরে ফোটা ফোটা জলে ছুটে চলে ভ্রূন কোন কথা না বলেই লেখা হয় নাভীমূলে আমাদের কথা শুধুই আমাদের জন্ম দেবার কবিতা' কবি তাহ্সিন রেজা'র কবিতায় বিশ্ব সাহিত্যের ঘ্রাণ পাওয়া যায়। ফরাসি সাহিত্যের অন্যতম কবি পরাবাস্তববাদ আন্দোলনের অগ্রদূত কবি এপলোনিয়ার কবিতায় দাড়ি, কমা, যতিচিহ্ন ব্যবহার করতেন না। এক্ষেত্রে কবি তাহ্সিন রেজা'র কবিতা অনেকটা সেই পথে হেঁটেছে। বিনয়ী কবি তাহ্সিন রেজা নিজেকে কবি'র কাতারে দাড় করাতে চান না। তবে কবিতার অমসৃণ পথে তিনি অনেকদূর যাবেন বলে মনে হয়। কারণ কবি প্রতিটি কবিতায় নিজেকে নিজের সাথে প্রতিযোগিতায় দাড় করিয়েছেন এবং তাঁর এক সৃষ্টি থেকে আরেক সৃষ্টিতে তিনি নিজেকে সফলভাবে টপকে গেছেন। কবি তাহ্সিন রেজা'র "প্রচ্ছদে নেই" আমাকে আশাবাদি করেছে। তাঁর এই সপ্তডিঙা মধুকর অনেক পথ পাড়ি দেবে। কবি'র 'প্রচ্ছদে নেই' কাব্যগ্রন্থ অমর একুশে বইমেলা ২০২১-এ পাঠক হৃদয় জয় করে জানান দেবে- আমি আসছি। কবি'র জন্য শুভ কামনা। মাহবুব খান কবি, ঔপন্যাসিক প্রতিষ্ঠাতা মহাসচিব অনুশীলন সাহিত্য পরিষদ। ঢাকা।