১৯৩৩ সালে ব্রিটিশ লেখক জেমস হিলটন তাঁর Lost Horizon বইতে সর্বপ্রথম শাংগ্রিলার ধারণা প্রদান করেন। হিমালয়ের কন্দরে অবস্থিত শাংগ্রিলা হচ্ছে এমন এক উপত্যকা যেখানে প্রকৃতি তার সমস্ত সৌন্দর্য নিয়ে উদ্ভাসিত হয়েছে। পুরো পৃথিবী থেকে বিচ্ছিন্ন শাংগ্রিলা এক চির শান্তির দেশ; যেখানে নেই মানুষে মানুষে ভেদাভেদ, নেই কোন হানাহানি, নেই ক্লেদাক্ত মন-মানসিকতার জঞ্জাল। শাংগ্রিলার ধারণা এতোটাই জনপ্রিয়তা পায় যে অনেকেই এটিকে সত্যিকার কোন স্থান হিসেবে ভেবে থাকেন। মজার ব্যাপার হচ্ছে শাংগ্রিলার সত্যিকার অবস্থান কোথায় সেটি কিন্তু কেউ জানে না। জেমস হিলটন তার বইতে শাংগ্রিলার অবস্থান বর্ণনা করেছিলেন তিব্বতের কুনলুন পর্বতমালার অভ্যন্তরে কোন এক লুকোনো উপত্যকায়। ৩,০০০ কিলোমিটার বিস্তৃত এই পর্বতমালার ভেতর থেকে শাংগ্রিলাকে খুঁজে বের করতে অনেকেই চেষ্টা করেছে, কিন্তু পায় নি। অনেক ভুটানিজ দাবী করে তাঁদের দেশটাই সেই কিংবদন্তীর শাংগ্রিলা। ভুটান পরিচালিত হয় রাজার শাসনে; বৌদ্ধ উপাসনালয় এবং বৌদ্ধ সন্ন্যাসীদের প্রভাব নেহায়েত কম নয় এখানে। অপরাধের মাত্রাও এখানে নগণ্য। উন্নতির নির্দেশক এখানে জিডিপি নয়, জিএনপি (গ্রস ন্যাশনাল হ্যাপিনেস)। হিমালয়ের পাদদেশে অবস্থিত দেশটি প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের আকর। পাহাড়ের মাঝ দিয়ে বয়ে যাওয়া খরস্রোতা পাহাড়ি নদী বিধৌত উপত্যকায় গড়ে উঠেছে একেকটি শহর। শাংগ্রিলার প্রতিটি বৈশিষ্ট্যই এখানে বিদ্যমান। তাহলে বজ্র ড্রাগনের দেশ ভুটানই কি সেই কিংবদন্তীর শাংগ্রিলা?